Dhaka , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অসমাপ্ত আত্মজীবনী মারমা ভাষায় অনুবাদ করলেন নুথোয়াই মারমা বারাঙ

  • প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: ০১:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ২৮৯ বার পড়া হয়েছে
print news

উচ্চপ্রু মারমা, রাজস্থলীঃ

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার দূর্গম অংজাইপাড়ায় নুথোয়াই মারমার জন্ম। স্থানীয়ভাবে এসএসসি ও এইচএসসি পাসের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে ভর্তি হন। ঢাবি থেকে বি.এড ও এম.এড স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন গত বছর। তিনি লেখালেখির পাশাপাশি নিজের সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে ভাষা চর্চার জন্য কাজ করছেন। বর্তমানে একটি স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা সাথে জড়িত আছেন তিনি। তিনি ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের অনুবাদ ছাড়াও নিজের মাতৃভাষায় মারমা জাতির ইতিহাস বিষয়ে ‘মারমা তইরাংস্বা’ নামে একটি বই লিখেছেন। এছাড়াও আরো কয়েকটি বই প্রকাশনার পথে। সার্বিক সহযোগিতা এগিয়ে এলে আলোর মুখ দেখা পাবে বইগুলো। এবার অমর একুশে গ্রন্থ মেলাতেও তাঁর প্রকাশিত নতুন উপন্যাস বই ‘পাহাড় তং পেরিয়ে ” বইটি পাওয়া যাচ্ছে ৩৬০ নং উৎস প্রকাশন স্টলে। অনুবাদের জন্য বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ কেন বেছে নিলেন তিনি।

নুথোয়াই মারমা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় বইটি পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়। তখন থেকেই নিজের ভাষায় সেটি অনুবাদ করার তাড়না আসে আমার মধ্যে। “এরপর কাজটা নিয়ে বসি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষ মিলিয়ে অর্ধেক করে রাখি। মাঝখানে পড়াশোনা ও পরীক্ষার চাপ বেড়ে যায়। সংগঠনও করেছেন, বিএমএসসি ঢাকা মহানগর শাখার সাবেক সভাপতি ও বিএমএসসি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ কারণে অনুবাদের কাজে ছেদ পড়ে।” এর মধ্যে একদিন মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ মারমা ভাষায় অনুবাদ করার জন্য নুথোয়াইকে ডাকে। তখন তিনি ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালককে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অনুবাদ শুরু করার কথা জানান। এবং এ কাজে ইন্সটিটিউটের সহায়তার জন্য একটি প্রস্তাব দেন। তবে বাংলা থেকে মারমা ভাষায় বইটি অনুবাদ করতে গিয়ে ভাষাগত নানা সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার কথা জানালেন নুথোয়াই মারমা।

তিনি বলেন, মারমা ভাষার নিজস্ব কোনো অভিধান নেই। এ কারণে অনেকক্ষেত্রে বাংলা শব্দগুলোর মারমা অর্থ তার মনে আসছিল না। তবে সম্প্রদায়ের প্রবীণ সদস্য আর গবেষকদের সহায়তায় তিনি এসব সমস্যা উৎরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। নিজের ভাষার বইটিকে সব বয়সের মারমাদের কাছে পৌঁছাতে নানা সীমাবদ্ধতার কথাও বললেন নুথোয়াই। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা আর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে এলে তখন হয়ত আরও অনেকেই এগিয়ে যাবে। নিজেদের বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকে ভাষা শিক্ষাটা চালু রাখলে মারমা ভাষা একদিন সমৃদ্ধ হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

লেখক তথ্য সম্পর্কে

Chtbarta

জনপ্রিয়

মানিকছড়ি সদর ইউনিয়নে কৃষক সমাবেশ

অসমাপ্ত আত্মজীবনী মারমা ভাষায় অনুবাদ করলেন নুথোয়াই মারমা বারাঙ

প্রকাশিত: ০১:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
print news

উচ্চপ্রু মারমা, রাজস্থলীঃ

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার দূর্গম অংজাইপাড়ায় নুথোয়াই মারমার জন্ম। স্থানীয়ভাবে এসএসসি ও এইচএসসি পাসের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে ভর্তি হন। ঢাবি থেকে বি.এড ও এম.এড স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন গত বছর। তিনি লেখালেখির পাশাপাশি নিজের সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে ভাষা চর্চার জন্য কাজ করছেন। বর্তমানে একটি স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা সাথে জড়িত আছেন তিনি। তিনি ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের অনুবাদ ছাড়াও নিজের মাতৃভাষায় মারমা জাতির ইতিহাস বিষয়ে ‘মারমা তইরাংস্বা’ নামে একটি বই লিখেছেন। এছাড়াও আরো কয়েকটি বই প্রকাশনার পথে। সার্বিক সহযোগিতা এগিয়ে এলে আলোর মুখ দেখা পাবে বইগুলো। এবার অমর একুশে গ্রন্থ মেলাতেও তাঁর প্রকাশিত নতুন উপন্যাস বই ‘পাহাড় তং পেরিয়ে ” বইটি পাওয়া যাচ্ছে ৩৬০ নং উৎস প্রকাশন স্টলে। অনুবাদের জন্য বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ কেন বেছে নিলেন তিনি।

নুথোয়াই মারমা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় বইটি পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়। তখন থেকেই নিজের ভাষায় সেটি অনুবাদ করার তাড়না আসে আমার মধ্যে। “এরপর কাজটা নিয়ে বসি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষ মিলিয়ে অর্ধেক করে রাখি। মাঝখানে পড়াশোনা ও পরীক্ষার চাপ বেড়ে যায়। সংগঠনও করেছেন, বিএমএসসি ঢাকা মহানগর শাখার সাবেক সভাপতি ও বিএমএসসি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ কারণে অনুবাদের কাজে ছেদ পড়ে।” এর মধ্যে একদিন মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ মারমা ভাষায় অনুবাদ করার জন্য নুথোয়াইকে ডাকে। তখন তিনি ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালককে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অনুবাদ শুরু করার কথা জানান। এবং এ কাজে ইন্সটিটিউটের সহায়তার জন্য একটি প্রস্তাব দেন। তবে বাংলা থেকে মারমা ভাষায় বইটি অনুবাদ করতে গিয়ে ভাষাগত নানা সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার কথা জানালেন নুথোয়াই মারমা।

তিনি বলেন, মারমা ভাষার নিজস্ব কোনো অভিধান নেই। এ কারণে অনেকক্ষেত্রে বাংলা শব্দগুলোর মারমা অর্থ তার মনে আসছিল না। তবে সম্প্রদায়ের প্রবীণ সদস্য আর গবেষকদের সহায়তায় তিনি এসব সমস্যা উৎরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। নিজের ভাষার বইটিকে সব বয়সের মারমাদের কাছে পৌঁছাতে নানা সীমাবদ্ধতার কথাও বললেন নুথোয়াই। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা আর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে এলে তখন হয়ত আরও অনেকেই এগিয়ে যাবে। নিজেদের বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকে ভাষা শিক্ষাটা চালু রাখলে মারমা ভাষা একদিন সমৃদ্ধ হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।