প্রেস বিজ্ঞপ্তি
সিএইচটি বার্তা ডেস্কঃ
নবম ও দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি পুনর্বহালের দাবিতে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র জনতার কর্মসূচিতে ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ নামক উগ্র মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সংগঠনের সদস্যদের হামলার ঘটনায় পিসিপি ও এইচডব্লিউএফ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি জানিয়েছে।
আজ পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অন্বেষ চাকমার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
গত ১২ জানুয়ারি ২০২৫ খ্রি: নবম ও দশম শ্রেণির বাংলা ২য় পত্রের পাঠ্যপুস্তক থেকে উগ্র সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী ও কায়েমী স্বার্থবাদী সংগঠন ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ দাবির মুখে বাছবিচার ছাড়া জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কতৃর্পক্ষ ‘আদিবাসী’ শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি বাতিল করে। কতৃর্পক্ষের এহেন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র জনতা আজ ১৫ জানুয়ারী এনসিটিবি ভবন ঘেরাও কর্মসূচি গ্রহণ করে। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি মোতাবেক সকাল ১১টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মিছিল নিয়ে এনসিটিবি কার্যালয়ে অভিমুখে রওনা হয়।
মিছিলটি এসসিটিবি কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা উগ্র মৌলবাদী ও সাম্পদায়িক গোষ্ঠী পুলিশের উপস্থিতিতে ক্রিকেট স্ট্যাম্প, চাপাতি ও লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় ১৭ জন আহত হন। এদের মধ্যে আদিবাসী নেতা অনন্ত বিকাশ ধামাই, আদিবাসী যুব ফোরামের সহ-সভাপতি টনি চিরান, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি রেং ইয়ং ম্রো, সাংবাদিক জুয়েল মারাক, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, বাগাছাসের ছাত্র নেতা ডন যেত্রা গুরুত্বর আহত হন। হামলায় পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল। হামলাকারীদের প্রতিহত করার কোন ধরনের তৎপরতা দেখায়নি।
পাবর্ত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন মনে করে, আদিবাসীদের উপর হামলা একটি পূর্ব পরিকল্পিত হামলা। উগ্র মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সংগঠন ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ এর আজকের কর্মসূচিটি মূলত আদিবাসীদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি বানচাল করার হীন উদ্দেশ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। এর দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনভাবে এড়াতে পারেনা। মূলত সরকারের দ্বিধাগ্রস্ত রাষ্ট্রীয় পলিসির কারণে আদিবাসীদের মিছিলে হামলা হয়েছে।
পিসিপি ও এইচডব্লিউএফ’র দ্ব্যর্থহীনভাবে মনে করে হামলা, দমন-পীড়ন করে পৃথিবীর কোন শক্তি ন্যায্যতা ও প্রাপ্যতাকে দমাতে ও ধ্বংস করতে পারেনি। আদিবাসীদেরকেও দমাতে পারবেনা। আদিবাসীরা ন্যায্যতা, আত্মমর্যাদা ও আত্মসম্মান প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ও আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
তাই বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে অবিলম্বে নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি পুনর্বহাল, পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসীদের সঠিক ইতিহাস ও পরিচিতি তুলে ধরাসহ সাংবিধানিকভাবে আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে।
ছবি ক্যাপশনঃ আদিবাসী ছাত্র জনতার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে হামলায় শিকার।