Dhaka , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নতুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ নিয়োগ পেলেন

print news

ছবি- সংগৃহিত

 

সিএইচটি বার্তা, ঢাকা অফিসঃ

 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের দাবি অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৯৫(১) ধারা অনুযায়ী শনিবার (১০ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ দেন। কাল রবিবার (১১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি তাকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।

 

মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশে শনিবার রাতেই আইন মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন। শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হবে। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন।

 

শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টার পর নতুন প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এছাড়াও বিকেল সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে আপিল বিভাগের অন্য ৫ বিচারপতি পদত্যাগ করেন। তারা হলেন, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন। এদিকে, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের পদত্যাগের খবর জানা যায়নি।

 

এদিকে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্টে ফুল কোর্ট সভা ডেকে ছিলেন প্রধান বিচারপতি। ভার্চুয়ালি এই সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে সকাল সোয়া ১০টার ফুল কোর্ট সভা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

 

এই ফুল কোর্ট সভার আয়োজন নিয়ে সকালেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দেন। তিনি বিনা শর্তে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে ও ফুল কোর্ট মিটিং বন্ধ করার দাবি জানান।

 

এর আগে সকাল পৌনে ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ দুপুর একটার মধ্যে প্রধান বিচারপতিসহ অন্যদের পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও করেন। এক দফা এক দাবি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে প্রধান বিচারপতি বিকেল আড়াইটার দিকে ও অন্য বিচারপতিরা সন্ধ্যার পর পদত্যাগ করেন।

 

এরপর বেলা পৌনে দু্ইটার দিকে জানা যায়, প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ খবর শুনে বেলা ২টার দিকে আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছেড়ে চলে যান।

 

বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ১৯৫৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর গাজীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। তার মা ড. সুফিয়া আহমেদ একজন জাতীয় অধ্যাপক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক ছিলেন।

 

সৈয়দ রেফাত আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক করেন। তিনি আইনশাস্ত্রে স্নাতক এবং ১৯৮৩ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওয়াদাম কলেজে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ১৯৮৪ সালে জেলা আদালতের আইনজীবী হন। তিনি ১৯৮৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগের একজন আইনজীবী হন।

 

২০০২ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হন।

 

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Chtbarta

জনপ্রিয়

মানিকছড়ি সদর ইউনিয়নে কৃষক সমাবেশ

আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নতুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ নিয়োগ পেলেন

প্রকাশিত: ১২:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪
print news

ছবি- সংগৃহিত

 

সিএইচটি বার্তা, ঢাকা অফিসঃ

 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের দাবি অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৯৫(১) ধারা অনুযায়ী শনিবার (১০ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ দেন। কাল রবিবার (১১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি তাকে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন।

 

মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশে শনিবার রাতেই আইন মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন। শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হবে। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন।

 

শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টার পর নতুন প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এছাড়াও বিকেল সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে আপিল বিভাগের অন্য ৫ বিচারপতি পদত্যাগ করেন। তারা হলেন, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন। এদিকে, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের পদত্যাগের খবর জানা যায়নি।

 

এদিকে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্টে ফুল কোর্ট সভা ডেকে ছিলেন প্রধান বিচারপতি। ভার্চুয়ালি এই সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে সকাল সোয়া ১০টার ফুল কোর্ট সভা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

 

এই ফুল কোর্ট সভার আয়োজন নিয়ে সকালেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দেন। তিনি বিনা শর্তে প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগ করতে ও ফুল কোর্ট মিটিং বন্ধ করার দাবি জানান।

 

এর আগে সকাল পৌনে ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ দুপুর একটার মধ্যে প্রধান বিচারপতিসহ অন্যদের পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও করেন। এক দফা এক দাবি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে প্রধান বিচারপতি বিকেল আড়াইটার দিকে ও অন্য বিচারপতিরা সন্ধ্যার পর পদত্যাগ করেন।

 

এরপর বেলা পৌনে দু্ইটার দিকে জানা যায়, প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ খবর শুনে বেলা ২টার দিকে আন্দোলনকারীরা হাইকোর্ট এলাকা ছেড়ে চলে যান।

 

বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ১৯৫৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর গাজীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। তার মা ড. সুফিয়া আহমেদ একজন জাতীয় অধ্যাপক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক ছিলেন।

 

সৈয়দ রেফাত আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক করেন। তিনি আইনশাস্ত্রে স্নাতক এবং ১৯৮৩ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওয়াদাম কলেজে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ১৯৮৪ সালে জেলা আদালতের আইনজীবী হন। তিনি ১৯৮৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগের একজন আইনজীবী হন।

 

২০০২ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হন।