Dhaka , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এ কেমন নিষ্ঠুরতা পেঁপে গাছের সাথে ?

print news

 

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

 

ঋণ ধার করে নিজের কিছু জমানো টাকা দিয়ে তরুণ উদ্যোক্তা বায়জিদ হোসেন সোনালী স্বপ্ন দেখে করেছিল সবুজ ফসল পেঁপে এবং আনারসের বাগান। সেখানে ২০ হাজার আনারস চারার সাথে লাগিয়েছিল ১৬ শত পিস পেঁপের চারা। পেঁপের চারা গুলোর বয়স যত বাড়তেছিল বায়োজিদের স্বপ্ন যেন ততই বড় হচ্ছিল। খরা রোদ এবং তাপদাহের মধ্যেও প্রতিদিনই ৫-৭ জন মহিলা শ্রমিক নিয়ে কলসিতে করে গাছগুলিতে পানি দিতেন।

IMG 20240425 WA0002

তরুণ উদ্যোক্তা বাইজিদের স্বপ্ন ছিল প্রতিটি পেঁপে গাছ বিক্রি হবে এক হাজার থেকে পনেরো শত টাকা। সর্বমোট পেঁপে বিক্রি করবেন ১৫-১৬ লাখ টাকা। এবং সাথি ফসল হিসেবে ২০ হাজার আনারস বিক্রি করবেন ৭-৮ লাখ টাকা। কিন্তু সেই স্বপ্নটা যেন হঠাৎ করেই ধুলিসাৎ হয়ে যায়। প্রতিদিনের মতো গত ২২ তারিখ সকালে তিনি বাগানে এসে দেখেন তার স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে গেছে । এমন ঘটনাই ঘটেছে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার জলছত্র গ্ৰামের আবু হানিফের ছেলে তরুণ উদ্যোক্তা বাইজিদের সাথে ।

 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ধ্বংসের ধার প্রান্তে পেঁপে গাছ গুলো। এর কারণ জানতে চাইলে বাইজিদ বলেন, জর্জ ম্রং এর ছেলে খোকন দফোর কাছ থেকে পঁচিশ মাইল বাজারের একটু পূর্বে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল হাইওয়ে রোডের সাথে আট বিঘার একটি প্লট নিয়ে সেটার ৫ বিঘা জমিতে লাগিয়েছিল ১৬ শত পিস পেঁপের চারা। যার এক একটি দেড়/দুই ইঞ্চি চারার মূল্যই ছিল ৩৬ টাকা করে, সেটা এখন প্রায় দুই মাসের কাছাকাছি বয়স হয়েছে এবং কিছু কিছু গাছে ফুল আসা শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত প্রতিগাছে খরচ হয়েছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা করে। আর মাত্র এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই প্রতিটি পেঁপে গাছই বিক্রি হবে ১০০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত। সেই গাছগুলি কে বা কারা রাতের অন্ধকারে ঘাস মারার বিষ (গ্ৰামাক্সশন বিষ) দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এতে তরুণ এই উদ্যোক্তার রঙ্গিন স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

IMG 20240425 WA0000

তরুণ এই উদ্যোক্তার দাবি পেঁপে ও আনারসে ক্ষতিকর বিষ প্রয়োগের ফলে ক্ষতি হয়েছে ২০-২২লক্ষ টাকা। এই ব্যাপারে কাউকে সন্দেহ হয় কিনা জিজ্ঞেস করলে বাইজিদ জানান, তার সাথে ফারুক আহমেদ নামের এক ব্যক্তির সাথে জমি নিয়ে পূর্বে বিরোধ ছিল, সেই বিরোধের জের ধরে ফারুক এই ধরণের জঘন্য কাজ করে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করেন। তাছাড়াও ফারুক আহমেদ কয়েকবারই হুমকি দিয়ে বলেছে যে জমি পেলেও জমির ফসল করে নিতে দেওয়া হবে না, সেই কারণে ধারণা করা হচ্ছে যে, সেই এ জঘন্য কাজ করতে পারে। উপস্থিত সাধারণ জনসাধারণের সাথে কথা বললে তারা জানায় যে, যে ব্যক্ত এই জঘন্য কাজ করেছে সে অন্তত মানুষ হতে পারে না ।

 

 

এই ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বাইজিদ তদন্ত সাপেক্ষে এই জঘন্য কাজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

 

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Chtbarta

জনপ্রিয়

মানিকছড়ি সদর ইউনিয়নে কৃষক সমাবেশ

এ কেমন নিষ্ঠুরতা পেঁপে গাছের সাথে ?

প্রকাশিত: ০২:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
print news

 

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

 

ঋণ ধার করে নিজের কিছু জমানো টাকা দিয়ে তরুণ উদ্যোক্তা বায়জিদ হোসেন সোনালী স্বপ্ন দেখে করেছিল সবুজ ফসল পেঁপে এবং আনারসের বাগান। সেখানে ২০ হাজার আনারস চারার সাথে লাগিয়েছিল ১৬ শত পিস পেঁপের চারা। পেঁপের চারা গুলোর বয়স যত বাড়তেছিল বায়োজিদের স্বপ্ন যেন ততই বড় হচ্ছিল। খরা রোদ এবং তাপদাহের মধ্যেও প্রতিদিনই ৫-৭ জন মহিলা শ্রমিক নিয়ে কলসিতে করে গাছগুলিতে পানি দিতেন।

IMG 20240425 WA0002

তরুণ উদ্যোক্তা বাইজিদের স্বপ্ন ছিল প্রতিটি পেঁপে গাছ বিক্রি হবে এক হাজার থেকে পনেরো শত টাকা। সর্বমোট পেঁপে বিক্রি করবেন ১৫-১৬ লাখ টাকা। এবং সাথি ফসল হিসেবে ২০ হাজার আনারস বিক্রি করবেন ৭-৮ লাখ টাকা। কিন্তু সেই স্বপ্নটা যেন হঠাৎ করেই ধুলিসাৎ হয়ে যায়। প্রতিদিনের মতো গত ২২ তারিখ সকালে তিনি বাগানে এসে দেখেন তার স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে গেছে । এমন ঘটনাই ঘটেছে টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার জলছত্র গ্ৰামের আবু হানিফের ছেলে তরুণ উদ্যোক্তা বাইজিদের সাথে ।

 

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ধ্বংসের ধার প্রান্তে পেঁপে গাছ গুলো। এর কারণ জানতে চাইলে বাইজিদ বলেন, জর্জ ম্রং এর ছেলে খোকন দফোর কাছ থেকে পঁচিশ মাইল বাজারের একটু পূর্বে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল হাইওয়ে রোডের সাথে আট বিঘার একটি প্লট নিয়ে সেটার ৫ বিঘা জমিতে লাগিয়েছিল ১৬ শত পিস পেঁপের চারা। যার এক একটি দেড়/দুই ইঞ্চি চারার মূল্যই ছিল ৩৬ টাকা করে, সেটা এখন প্রায় দুই মাসের কাছাকাছি বয়স হয়েছে এবং কিছু কিছু গাছে ফুল আসা শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত প্রতিগাছে খরচ হয়েছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা করে। আর মাত্র এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই প্রতিটি পেঁপে গাছই বিক্রি হবে ১০০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত। সেই গাছগুলি কে বা কারা রাতের অন্ধকারে ঘাস মারার বিষ (গ্ৰামাক্সশন বিষ) দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এতে তরুণ এই উদ্যোক্তার রঙ্গিন স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

IMG 20240425 WA0000

তরুণ এই উদ্যোক্তার দাবি পেঁপে ও আনারসে ক্ষতিকর বিষ প্রয়োগের ফলে ক্ষতি হয়েছে ২০-২২লক্ষ টাকা। এই ব্যাপারে কাউকে সন্দেহ হয় কিনা জিজ্ঞেস করলে বাইজিদ জানান, তার সাথে ফারুক আহমেদ নামের এক ব্যক্তির সাথে জমি নিয়ে পূর্বে বিরোধ ছিল, সেই বিরোধের জের ধরে ফারুক এই ধরণের জঘন্য কাজ করে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করেন। তাছাড়াও ফারুক আহমেদ কয়েকবারই হুমকি দিয়ে বলেছে যে জমি পেলেও জমির ফসল করে নিতে দেওয়া হবে না, সেই কারণে ধারণা করা হচ্ছে যে, সেই এ জঘন্য কাজ করতে পারে। উপস্থিত সাধারণ জনসাধারণের সাথে কথা বললে তারা জানায় যে, যে ব্যক্ত এই জঘন্য কাজ করেছে সে অন্তত মানুষ হতে পারে না ।

 

 

এই ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বাইজিদ তদন্ত সাপেক্ষে এই জঘন্য কাজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।