সিনিয়র প্রতিনিধি, রাঙামাটিঃ
রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় মাইনী নদী খননের বালি দিয়ে কাপ্তাই হ্রদ ভরাটের ঘটনার সরেজমিন তদন্ত এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন রাঙামাটির চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে রাঙামাটির অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিনের আদালত আগামী এক মাসের মধ্যে সরেজমিন তদন্ত করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন রাঙামাটির সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) বাঘাইছড়ি সার্কেলকে। আদালতের আদেশে আগামী ২৩ জুন প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী নিলন চাকমা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিজ্ঞ আদালত আগামী এক মাসের মধ্যে রাঙামাটির সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) বাঘাইছড়ি সার্কেলকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।’ আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্রে বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় নদী খননের বালি ফেলা হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদে। এতে কাপ্তাই হ্রদের অংশ বিশেষ পরিণত হচ্ছে বালুচরে। হ্রদ ভরাটের ফলে বাজার এলাকায় নৌ-ঘাটগুলো অস্তিত্বের সংকটে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাজার সম্প্রসারণের নামে হ্রদের বিস্তীর্ণ অংশ ভরাটের অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে। উল্লেখিত কাজ পরিবেশ বিধ্বংসী কাজ মর্মে প্রতীয়মান হয়। তাছাড়া ২০২২ সালের রিট পিটিশন নং- ১১৮৮৫/২০২২ মূলে মহামান্য হাইকোর্ট কাপ্তাই হ্রদের পাড়ের দখল ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করেন।
প্রসঙ্গত, রাঙামাটির লংগদু উপজেলার মাইনীমুখে বন বিভাগের বিশ্রামাগার এলাকার অংশে মাইনী নদী খননের বালি দিয়ে কাপ্তাই হ্রদের বিশাল অংশ বালি দিয়ে ভরাটের অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় মাইনীমুখ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামার হোসেন কমলসহ একটি চক্রের বিরুদ্ধে। পরিবেশ অধিদপ্তর প্রাথমিক তদন্তে ইউপি চেয়ারম্যান, বাজার সমিতির সভাপতি-সম্পাদকসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের জড়িত থাকার খবর জেনেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের খনন করা বালি দিয়ে অর্থাৎ সরকারি সহায়তায় হ্রদ ভরাটের ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর পাইপ সরিয়ে ফেলে পাউবো।
দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির (দুপ্রক) রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালত স্বপ্রণোদিতভাবে ঘটনার তদন্ত ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা আদালতকে ধন্যবাদ জানাই। এসব পরিবেশ বিরোধী ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতরা শাস্তির আওতায় আসলে সমাজে অনিয়ম-দুর্নীতি, পরিবেশ বিধ্বংসী কাজ অনেকাংশে কমে আসবে। অন্যরা নিরুৎসাহিত হবে।’