প্রিন্স এডওয়ার্ড মাংসাং, টাঙ্গাইলঃ
চাকরির বয়সে সর্বসাকুল্যে বেতনের টাকা কোটি না হলেও করেছেন কয়েক কোটি টাকার সম্পদ, হয়েছেন গাড়ি বাড়ির মালিক! বলছিলাম ….
টাঙ্গাইলের কালীহাতি উপজেলার কোকডহরা ইউনিয়নের পাঁচ চাড়ান গ্রামের আজগর তরফদারের ছেলে – ন্যায়েব মনির হোসেন তরফদারের কথা। কর্মজীবনের ২০ বছরে হয়েছেন কয়েক কোটি টাকার সম্পদের মালিক। মনির হোসেন চাকরি করেন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ন্যায়েবের পদে। ন্যায়েবের পদে চাকরি করার সুবাধে গড়েছেন কয়েক কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ!
গ্ৰামের বাড়ি পাঁচ চাড়ান এলাকার তথ্য বলছে মনিরের বাবার দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় ঘর জামাই হিসেবে পাঁচ চাড়ান কোকডহরা ইউনিয়নে বসবাস করেন। অর্থাৎ মনিরের বাবার সম্পদ চেয়ে, তার মায়ের সম্পত্তি ছিল বেশি। তরফদার বংশের একটি ধান শুকানোর সাধারণ মিল (চাতাল) ছিলো কালিহাতীর হামিদপুর। বংশের একাধিক ব্যক্তি মিলটির মালিক। একাধিক ব্যক্তির ধানের মিলটির মালিক থাকলেও একসময় টাকা পয়সার অভাবে এবং ঋণের ভাড়ে বন্ধ হয়ে যায় মিলটি। পরবর্তীতে কিছুদিন কুড়ার মিল হিসেবে ভাড়া দিলেও বর্তমানে বন্ধ আছে।
সূত্র বলছে, মনির হোসেন ওয়ারিশ সূত্রে মায়ের কাছ থেকে মোট ৫-৬ বিঘা জমি পেয়েছেন তিনি। চাকরিরর সুবাধে জমি গুলো ভালো করে চাষাবাদও করা সম্ভব হয়না বিধায়, সবসময়ই বাগি/বর্গা দিয়ে যৎসামান্য ফসল পান তিনি।
মনির হোসেনের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে আরো জানা যায়, তিনি চাকরি জীবনে তার পৈত্রিক সম্পত্তি চাষাবাদ করেননি। তার অংশের জমি ও পুকুর ছোট ভাই মিল্টন তরফদার চাষাবাদ করে বর্গা দিয়ে থাকেন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মনির খুব একটা গ্ৰামের বাড়িতে যান বললেই চলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, মনির সাহেবের কোটি টাকার সম্পদ গড়ার মতো কোন সক্ষমতা তার এখনো হয়নি! এলাকার লোকজনের ভাষ্য মধুপুর পৌরসভার মতো জায়গায় আলিশান বাড়ি করার মতো বাবা মায়ের অংশের কোন জমিও তিনি বিক্রি করেননি। মনিরের কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করা অবৈধ কোন পন্থা ব্যতিত কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন ঐ বীর মুক্তিযোদ্ধা।আয়ের কোন বড় উৎস না থাকলেও মনির হোসেন মধুপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড এর পুন্ডুরা বটতলা মোড়ে রাস্তার উত্তর পূর্বাংশে ৪ শতক জমির উপর বিলাসবহুল আলিশান বহুতল ভবন নির্মাণ করেন। জমি ক্রয় করা সহ প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকার সম্পত্তি গড়েছেন। তার এই সম্পদ ক্রয় করার মত আয়ের কোন উৎস না থাকলেও তাই করেছেন।
এদিকে, মাতৃ সূত্রে ৬-৭ বিঘা জমি রয়েছে, মা এখনো বন্টন করা হয়নি। তার মাঝে ৮৫ শতাংশের পুকুর রয়েছে তা তার ছোট ভাই মিল্টন তরফতার বর্তমানে চাষাবাদ করেন। তথ্যসূত্রে জানা যায়, মধুপুর উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়ন (যা ৫ টি ইউনিয়নের ভূমি অফিস) (অরণখোলা, শোলাকুড়ী, কুড়াগাছা ফুলবাগচলা, বেরিবাইদ) ঐসকল ইউনিয়নের বেশিরভাগ জমিই খাস খতিয়ান এবং গেজেট ভুক্ত জমি, অরণখোলা ভূমি অফিসে থাকা অবস্থায়ই হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, খাস খতিয়ান গেজেট ভুক্ত জমি হলেও অবৈধভাবে ঐসকল জমিগুলোর জন্য দাখিলা দিয়েছেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। এসব দাখিলা দিয়ে ঐসব লোকজন ব্যাংক থেকে লোনও করেছেন। সাধারণ জনগণের অভিযোগ অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে বৈধতা দিয়ে ব্যাংক লোনের সহায়তা করে দেশ এবং জনগণের সাথে প্রতারণা করেছেন, তদন্ত সাপেক্ষে তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া উচিত।
এই ব্যাপারে ন্যায়েব মনিরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমার বাবার বিশাল সম্পত্তি থেকে ঐসব করেছি। তিনি আরো বলেন, মধুপুরের সাংবাদিকরা আমাকে চিনে, তাদের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক, আমি যে বাড়ি করেছি সেটা উনারা সবাই জানে।