পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং শিক্ষার্থীদের দাবি
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ
পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক ঘটনাবলির প্রেক্ষাপটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর ২০২৪) খাগড়াছড়ি সদরস্থ হিল ফ্লেভারস রেস্টুরেন্টে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সম্প্রতি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ওপর পরিচালিত কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে জুম্ম জনগণের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা ও রাঙ্গামাটি এলাকায় কয়েকটি আক্রমণাত্মক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় জনগণ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা মনে করেন, এ ধরনের ঘটনা একটি শান্তিপূর্ণ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের লক্ষ্যে বিপরীতমুখী।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ি জনগণের স্বতন্ত্রতা এবং তাদের সাংবিধানিক অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তারা মনে করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নই পার্বত্য অঞ্চলের স্থায়ী সমাধানের মূল চাবিকাঠি।
এসময় বক্তারা চার জন নিহতের প্রতি শোক প্রকাশ করেন এবং এসব ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান। তারা উল্লেখ করেন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের লক্ষ্যে পার্বত্য এলাকায় জনগণের মধ্যে আস্থা পুনরুদ্ধার এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, সরকারের নীতি নির্ধারকরা এই অঞ্চলের সামাজিক সমস্যা সমাধানে আরও বেশি উদ্যোগী হয়ে এগিয়ে আসবেন।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি সমস্যার সমাধান, আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, এবং শিক্ষা ও সরকারি চাকরিতে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর যথাযথ অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ। শিক্ষাক্ষেত্রে মাতৃভাষায় শিক্ষা নিশ্চিত করার দাবি তারা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা জানান, তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার সমাধানে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার আহ্বান জানান। পাহাড়ের জনগণ যেন শান্তি, সমৃদ্ধি, এবং ন্যায়বিচার নিয়ে বসবাস করতে পারে, এটাই তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য।
সংবাদ সম্মেলন শেষে শিক্ষার্থীরা একটি গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের স্বপ্নে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাদের সংগঠনের পাশে থাকার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তুষিতা চাকমা এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন কৃপায়ন ত্রিপুরা, কিকো দেওয়ান এবং লাব্রেচাই মারমা।