হ্লাসিং থোয়াই মার্মা; বান্দরবান প্রতিনিধি:
বান্দরবানের থানচি উপজেলায় এক আদিবাসী খিয়াং নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে এবং ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রেসক্লাব চত্ত্বরে সামনে খিয়াং নারীর ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন আদিবাসী ছাত্র সমাজের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে নেতারা।
এর আগে থানচির দুর্গম এলাকায় চিংমা খিয়াং নামে এক আদিবাসী নারীর ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় রাজার মাঠ প্রাঙ্গণ থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এসময় বিভিন্ন ফেষ্টুন ও ব্যানার নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন শতাধিক মানুষ।
বক্তব্যে উলিসিং মারমা জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামের ধর্ষণ নতুন ঘটনা নয়। পাহাড়ে অনেক মা বোন ধর্ষিত হয়েছে কিন্তু স্বাধীনতা ৫৪ বছর পর ও এসব বিষয় নিয়ে রাষ্ট্র কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্য সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্হা নেওয়া না হলে আমাদের আন্দোলন আরো বৃহত্তর হবে।
বক্তব্যে বম এসোসিয়েশনের সভাপতি জেমমস বম বলেন, মা বোন হারানোর শোক মতো বেদনা দায়ক আর কিছুই নেই। ভিক্টিম চিংমা খিয়াংকে ৩ বাঙালি শ্রমিক ধর্ষণ ও নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এমন অমানবিক কাজ করবে কেন তাদের কি মা বোন নাই? বক্তব্য তিনি আরো বলেন, যত দ্রুত সম্ভব প্রশাসনকে জোর দাবি জানায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় তাদেরকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হোক।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চটগ্রামে ধর্ষণের ঘটনা নতুন নয়। যতবার ধর্ষণ ঘটনা ঘটেছে ততবারই প্রেসক্লাব সামনে জড়ো হয়ে এসে বিচার চেয়েছি। কিন্তু বিচার দূরে কথা ধর্ষণকারীকে আইনে আওতায় আনতে ব্যর্থ প্রশাসন। শুধু বান্দরবানে নয় পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। যার কারণে ধর্ষককারীরা আরো সুযোগ পাচ্ছে।
সমাবেশে আরো বলেন, প্রত্যান্ত দূর্গম এলাকায় তিন সন্তান জননী চিংমা খিয়াং নিজ জুমে কাজ করার সময় ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন সেটি ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে। এই ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের আইনে আওতায় এনে সঠিক বিচারের মুখোমুখি দাড় করাতে হবে। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে ধর্ষণকারীকে আইনে আওতায় না আনলে কঠোর আন্দোলনে কর্মসূচি ডাক দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দেন আদিবাসী ছাত্র সমাজের সংগঠনের নেতারা।
এসময় বক্তব্য রাখেন, দূর্বার নেটওয়ার্ক ও সুজন বান্দরবান জেলার সভাপতি ডনাই প্রু নেলী, মানবাধিকার কর্মী লেলুং খুমী, আইনজীবী উম্যা সিং মারমা, মানবাধিকার কর্মী অংচমং মারমা, নারী যোগাযোগ কেন্দ্রের আহবায়ক পারমিতা চাকমা, নারী নেত্রী য়ইসা প্রু মারমা, সাংমা প্রু খিয়াং, পাইং উ মারমা সহ বিভিন্ন নারী সংগঠন ও আদিবাসী ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
উল্লেখ্য, থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নে ৮নং ওয়ার্ড এলাকায় চিংমা খিয়াং (২৯) নামে এক আদিবাসী খিয়াং নারী গণধর্ষণের পর তাকে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
মন্তব্য করুন