বিশেষ প্রতিনিধি, টাঙ্গাইলঃ
টাঙ্গাইলের মধুপুরে রেজুয়ান হোসেন হৃদয় নামের এক সেনা সদস্যের বাড়ীতে বিয়ের দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে অবস্থান করছেন সিদরাতুল মুনতাহা (পারসী) নামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা।
পারসি ও তার প্রেমিক সেনা সদস্য রেজুয়ান হোসেন হৃদয় দু’জনের বাড়িই মধুপুর উপজেলার শোলাকুড়ী ইউনিয়নের শোলাকুড়ী গ্রামে।
পারসী প্রফেসর মো: আবুল হোসেনের মেয়ে। সেনা সদস্য হৃদয় একই গ্রামের দীঘির পাড়ের স্বপন মিয়ার ছেলে। পারসি বিয়ের দাবিতে ৭ দিন যাবত প্রেমিক সেনাবাহিনীর অফিসার রেজুয়ান হোসেন হৃদয়ের বাড়ীতে অবস্থান করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে উৎসুক জনতার ভিড়। স্কুল শিক্ষিকা পারসী একটি রুমের ভিতরে আমরা সংবাদকর্মীরা তার সাথে জানালা দিয়েই যোগাযোগ করলে উনি জানান, বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে রেজুয়ান হোসেন হৃদয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। প্রেমের সুযোগ নিয়ে হৃদয় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গাজীপুর রিভার রিসোর্ট, পূবালী রিসোর্টে প্রায়ই কয়েকদিন পর পর সময় কাটাতে নিয়ে যেতো এবং কক্সবাজারে একবার একটানা ১৫দিন এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আবাসিক হোটেল গুলোতে নিয়ে একাধিকবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। দীর্ঘদিন যাবতই হৃদয়কে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তাকে অপেক্ষা করার কথা বলে। কিন্তু হঠাৎ করেই শোনতে পাই হৃদয় আমাকে বিয়ে না করে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার কোনো এক এলাকায় বিয়ের গায়ে হলুদের আয়োজন করছে খবর পেয়ে আমি তার বাড়িতে চলে আসি। হৃদয়ের ফোনে হৃদয়কে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে হৃদয়ের বাড়ীতে এসে দেখি তার নানী ছাড়া আর কেউই নেই। তাদেরকে না পেয়ে আমি হৃদয়ের বাড়ীর ঘরে অবস্থান নিয়েছি। এ বাড়ীতে আসার পর হৃদয়ের পক্ষের লোকেরা আমাকে এ বাড়ী থেকে বারবার বের করে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। আমি হৃদয়কে ছাড়া বাঁচব না, হৃদয় আমার জীবনটা তছনছ করে দিয়েছে। এখন হৃদয় তার পরিবারের চাপে আমাকে বিয়ে না করে অন্যত্র বিয়ে করতে যাচ্ছে। যদি হৃদয় আমাকে বিয়ে না করে আমি প্রতিজ্ঞা করেছি আত্মহত্যা করবো। গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুন থেকে আজ বুধবার ১৯ জুন) ৭ দিন ধরে প্রেমিকা বিয়ের দাবিতে সেনাবাহিনীর অফিসার রেজুয়ান হোসেন হৃদয়ের বাড়ীতে অবস্থান করছেন।
প্রেমিকা পারসী জানান, এরই মধ্যে ঘাটাইল সেনাবাহিনী থেকে C.O এবং গতকাল টাঙ্গাইল RAB, এর আগেও NSI, DGFI সহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা থেকে খুজ খবর নিয়েছেন। এ বিষয়ে সেনা অফিসার হৃদয়ের বাড়ীতে উনাদের নানীকে ছাড়া কাউকেই পাওয়া যায়নি।
হৃদয়ের নানী জানান, এই বিষয়ে আমি কিছু জানিনা কয়েক দিন আগে আমি পাশের বাড়িতে ছিলাম সেই সময় বাড়ীর রুমে এক মেয়ে ঢুকে পড়ে, আমি এসে জিজ্ঞেস করলে বলে আংকেল আন্টি কোথায় ? আমি বলি উনারা নাই কিন্তু মেয়েটি যাচ্ছে না। রেজুয়ান হোসেন হৃদয়কে একাধিকবার ফোন দিলেও তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
স্থানীয় রেজা হাসান, সবুজ মিয়া, আব্দুল খালেক ও আজাহার আলী, এবং কয়েক জন মহিলাসহ এলাকাবাসী জানান, ঘটনা সঠিক হলে অবস্থানরত ওই স্কুল শিক্ষিকাকে বিয়ে করে সামাজিক ভাবে স্ত্রীর মর্যাদা দেয়া হোক।
মধুপুর উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মোঃ ইয়াকুব আলী বলেন, অবস্থানরত স্কুল শিক্ষিকা তরুনী ও সেনাবাহিনীতে কর্মরত হৃদয় দুজনের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি আমি জেনেছি। দুই পরিবারের সদস্যদের সাথেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি এবং সামাজিক ভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি, তা নাহলে এইটা যেহেতু ফৌজদারী মামলা সেহেতু আইন গত ব্যবস্থাই নিতে হবে।