চিংথোয়াই অং মার্মা, থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি:
সরকারি স্কুল ও বৌদ্ধ বিহারে ঘেঁষে গড়ে উঠার বান্দরবানের থানচিতে অবৈধ এক ইট ভাটায় কোন নিয়মনীতি না মেনে ইট তৈরী কাজে ব্যবহার হচ্ছে ফসলি জমি মাটি ও পাহাড়ে মাটি। কয়লার পরিবর্তে ইটভাটায় চুল্লিতে পোঁড়ানো হচ্ছে বনকাঠ ও লাকড়ি। সেখানে বিষাক্ত ধোঁয়ায় এলাকার মানবদেহে আশঙ্কার বাড়ছে নানা রকম রােগব্যাধী, বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশ!
এদিকে স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর জেলা আওয়ামীলীগের নেতা রোটারিয়ান আনিসুর রহমান (সুজন) মালিকানাধীন এসবিএম কোম্পানির ইটভাটায় দেশের উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোনধরনের লাইসেন্স বিহীন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া বহু বছর ধরে জ্বালানি হিসেবে কয়লার পরিবর্তে বনের কাঠ পুড়িয়ে আসছিল। তাঁর ক্ষমতা দাপটের কেউ কিছু বলার সাহসই পেত না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, থানচির আলীকদম সড়কের এসবিএম কোম্পানির নামক একটি ইটভাটার অবস্থান। সেখানে সরকারি স্কুল ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে ইটভাটাটি। বিহার, মগক ঝিরি ও উষামং পাড়া পাশেই চলছে ইটভাটার সকল ধরনে কার্যক্রম। শ্রমিকরা ইট তৈরী কাজের ব্যস্ত, মেশিনের মাটি মিশ্রন, কাঠের লাকড়ি ভাঙা ও চুল্লির থেকে ইটের ট্রাক গাড়ি ভর্তি করেছে অনেকেই।
ওই এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভাটার বড় বড় গাড়ি ও মেশিনের আওয়াজে তারা দিনের রাতে ঘুমাতে পারেন না। এছাড়া সংলগ্ন স্কুল, বিহার ও গ্রামীণ সড়কের ধুলাবালি ও চুল্লির কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হচ্ছে। দেশের প্রচলিত আইনে পরিবেশের জন্য কাঠ পোঁড়ানো নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেন না, জ্বালানি হিসেবে পোঁড়ানো হচ্ছে বনের কাঠ। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে তেমনি কালো ধোঁয়ায় কার্বন-ড্রাই অক্সাইড ছড়িয়ে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।
ইট ভাটায় দায়িত্বরত ম্যানেজার মোঃ সরোয়ার সাথে যোগাযোগ করার হলে তিনি জানান, এখন আমি বাহিরে আছি, কয়েকদিন পরে আসবো।
এই ইট ভাটার মালিক ও দোসর আওয়ামীলীগের নেতা রোটারিয়ান আনিসুর রহমান (সুজন) সাথে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন নম্বর সংযোগ না হওয়ায় বক্তব্য নেয়ার সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ আবদুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা নির্দেশ বিরুদ্ধে মালিক আপিল করায় উপজেলা প্রশাসনে হস্তক্ষেপের নিষেধ আছে। তারপরেও চলতি মাসের আমি গেছি, বন্ধ করে আসছি।
নিষেধাজ্ঞা থাকার ভিতরে তাঁরা কাজ চালাতে পারেন কি না? প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন, নিষেধাজ্ঞা হচ্ছে যে, যেটা যে অবস্থা আছে, সে অবস্থা থাকবে। যদি কাজ চালাতে না পারে, সেটা হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত বিষয়। তবে এলাকার জনস্বার্থে যতটুকু পারি আমরা ততটুকু অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : নিউটন চাকমা
সিএইচটি বার্তা