Dhaka , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

থানচিতে জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে পারাপার করছেন ২০টি পাড়ার বাসীন্দারা।

print news

চিংথোয়াই অং মার্মা; থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধিঃ

বান্দরবানে থানচি উপজেলা সদর হতে নকতোহা পাড়া যাওয়ার রাস্তায় ক্যোয়াহখ্যং ঝিরির উপর এক পরিত্যক্ত ভাঁঙন সেতু ও সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙঁনের কারণে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই চরম দুর্ভোগ পোঁহাতে হচ্ছে ওখানকার গ্রাম বাসিন্দাদের।

বিকল্প ব্যবস্থা রাস্তা না থাকায় একটি পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। তাঁরা পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাত করতে না পারায় কাঙ্ক্ষিত লাভের দেখা পাচ্ছেন না। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হেঁটে বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এমনটা পরিস্থিতিতে জরাজীর্ণ ওই সেতু সংস্কার কিংবা নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সূত্রে জানা গেছে, থানচি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কার্যালয়ের অর্থায়নে ২০১৫-১৬ সালে ওই এলাকার জনসাধারণের যাতায়াতের সুবিধার জন্য মরিয়ম পাড়া পার্শ্ববর্তী ক্যোয়াহখ্যং ঝিড়ির ওপর প্রায় ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেই সঙ্গে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মরিয়ম পাড়া থেকে নকতোহা পাড়া পর্যন্ত রাস্তায় ইট বিছানো হয়। একইভাবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নকতোহা পাড়া থেকে হানারাং পাড়া পর্যন্ত রাস্তায় ইটসোলিং করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, থানচি উপজেলা সদর ইউনিয়নের উত্তরে মরিয়ম পাড়ার অবস্থান।জনসাধারণের যাতায়াতের সুবিধার্থে ওই পাড়ার পার্শ্ববর্তী ঝিড়িতে একটি কালভার্ট সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতু নির্মাণের এক বছর না পেরোতেই এর একটি অংশ ভেঙে রড বেরিয়ে আসে। সেতু মাঝখানে গর্ত হয়ে ভেঁঙে যায়। মরিয়মপাড়া থেকে নকতোহা পাড়ায় যাওয়ার রাস্তায় ইটগুলো উঠে এলোমেলো হয়ে গেছে।

তাঁরা আরো জানান, ওই এলাকায় বিকল্প রাস্তার না থাকায় পরিত্যক্ত ভাঙা সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। ভাঙা সেতু ও সেতু সংলগ্ন সড়কের বিভিন্ন স্থানে ইটও উঠে গেছে। ফলে প্রতি বছরে বর্ষা মৌসুমে এলেই চরম দুর্ভোগে ভুগতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। বরাদ্দের টাকা নয়ছয় করে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে সেতু ও রাস্তা দুটোই দ্রুত নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এদিকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমরা স্কুলে যাওয়ার পথে এই পরিত্যক্ত সেতু দিয়ে যেতে হয়। বৃষ্টি পড়লে সেখানে কাঁদা মাটি ভর্তি থাকে, সেতু পাড় হয়ে খাঁড়া-উঁচু পাহাড় ইটসোলিং পথ দিয়ে স্কুলে যেতে হয়। পথে পিছলে পড়ে স্কুলের ড্রেস ও ব্যাগের বইগুলো ভিজে যায়। মাঝে মধ্যে ঝিরিতে পানি স্রোত বেশি থাকলে ভয়ে সেতু পারাপার না করে বাড়িতে ফিরে যেতাম আমরা।

এনিয়ে থানচি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অংপ্রু ম্রোঃ বলেন, ভাঁঙা সেতুটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার বা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। সেতুটির ব্যাপারে মাসিক সমন্বয় সভায় উত্থাপন করা হয়েছে।

অপরদিকে এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, নকতোহা পাড়া যাওয়ার পথে সেতু ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিয়েছি। সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্পের প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন দিলেই তবে দ্রুত বাস্তবায়নে কাজ শুরু করা হবে।

Tag :
জনপ্রিয়

গোবিন্দগঞ্জে বালুর নীচে চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু

থানচিতে জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে পারাপার করছেন ২০টি পাড়ার বাসীন্দারা।

প্রকাশিত: ০২:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪
print news

চিংথোয়াই অং মার্মা; থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধিঃ

বান্দরবানে থানচি উপজেলা সদর হতে নকতোহা পাড়া যাওয়ার রাস্তায় ক্যোয়াহখ্যং ঝিরির উপর এক পরিত্যক্ত ভাঁঙন সেতু ও সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙঁনের কারণে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই চরম দুর্ভোগ পোঁহাতে হচ্ছে ওখানকার গ্রাম বাসিন্দাদের।

বিকল্প ব্যবস্থা রাস্তা না থাকায় একটি পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। তাঁরা পাহাড়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাত করতে না পারায় কাঙ্ক্ষিত লাভের দেখা পাচ্ছেন না। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হেঁটে বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এমনটা পরিস্থিতিতে জরাজীর্ণ ওই সেতু সংস্কার কিংবা নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সূত্রে জানা গেছে, থানচি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কার্যালয়ের অর্থায়নে ২০১৫-১৬ সালে ওই এলাকার জনসাধারণের যাতায়াতের সুবিধার জন্য মরিয়ম পাড়া পার্শ্ববর্তী ক্যোয়াহখ্যং ঝিড়ির ওপর প্রায় ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেই সঙ্গে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মরিয়ম পাড়া থেকে নকতোহা পাড়া পর্যন্ত রাস্তায় ইট বিছানো হয়। একইভাবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নকতোহা পাড়া থেকে হানারাং পাড়া পর্যন্ত রাস্তায় ইটসোলিং করা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, থানচি উপজেলা সদর ইউনিয়নের উত্তরে মরিয়ম পাড়ার অবস্থান।জনসাধারণের যাতায়াতের সুবিধার্থে ওই পাড়ার পার্শ্ববর্তী ঝিড়িতে একটি কালভার্ট সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতু নির্মাণের এক বছর না পেরোতেই এর একটি অংশ ভেঙে রড বেরিয়ে আসে। সেতু মাঝখানে গর্ত হয়ে ভেঁঙে যায়। মরিয়মপাড়া থেকে নকতোহা পাড়ায় যাওয়ার রাস্তায় ইটগুলো উঠে এলোমেলো হয়ে গেছে।

তাঁরা আরো জানান, ওই এলাকায় বিকল্প রাস্তার না থাকায় পরিত্যক্ত ভাঙা সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। ভাঙা সেতু ও সেতু সংলগ্ন সড়কের বিভিন্ন স্থানে ইটও উঠে গেছে। ফলে প্রতি বছরে বর্ষা মৌসুমে এলেই চরম দুর্ভোগে ভুগতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। বরাদ্দের টাকা নয়ছয় করে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারণে সেতু ও রাস্তা দুটোই দ্রুত নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এদিকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমরা স্কুলে যাওয়ার পথে এই পরিত্যক্ত সেতু দিয়ে যেতে হয়। বৃষ্টি পড়লে সেখানে কাঁদা মাটি ভর্তি থাকে, সেতু পাড় হয়ে খাঁড়া-উঁচু পাহাড় ইটসোলিং পথ দিয়ে স্কুলে যেতে হয়। পথে পিছলে পড়ে স্কুলের ড্রেস ও ব্যাগের বইগুলো ভিজে যায়। মাঝে মধ্যে ঝিরিতে পানি স্রোত বেশি থাকলে ভয়ে সেতু পারাপার না করে বাড়িতে ফিরে যেতাম আমরা।

এনিয়ে থানচি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অংপ্রু ম্রোঃ বলেন, ভাঁঙা সেতুটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার বা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। সেতুটির ব্যাপারে মাসিক সমন্বয় সভায় উত্থাপন করা হয়েছে।

অপরদিকে এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, নকতোহা পাড়া যাওয়ার পথে সেতু ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিয়েছি। সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্পের প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন দিলেই তবে দ্রুত বাস্তবায়নে কাজ শুরু করা হবে।