Dhaka , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের সাদা সোনার কারখানার দুর্নীতির খবর কেউ রাখে না – (পর্ব – ১)

  • বিশেষ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: ০৭:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪
  • ১৬৬ বার পড়া হয়েছে

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":false,"containsFTESticker":false}

print news

 

 

প্রিন্স এডওয়ার্ড মাংসাং, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

 

দেশের বড়ো বড়ো কর্মকর্তাদের দুর্নীতির খবরের ঝড়ে তালমাতাল অবস্থা হলেও, সব সবসময়ই অন্তরালে থেকে যায় দেশের সাদা সোনা খ্যাত রাবার বাগানের দুর্নীতির কথা! তাই বলে কি অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের চোখ ফাঁকি দেওয়া কি এতোই সহজ ? তেমনি এক মহা দুর্নীতিবাজ রাবার কর্মকর্তার দুর্নীতি উঠে এসেছে সংবাদ কর্মীদের অনুসন্ধানে!

IMG 20240801 WA0010

বলছিলাম ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার সন্তোষপুর রাবার কর্মকর্তা মোঃ হারুনের দুর্নীতির কথা, মোঃ হারুন রাবার বাগানে যোগদানের পর থেকেই একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে, তার উপর কথা বললেই নেমে আসে শাস্তির নতুন নতুন কৌশল।

 

রাবার বাগানে কর্মরত স্থায়ী এবং অস্থায়ী টেপাররা (রাবার গাছের কষ সংগ্ৰহকারী) অভিযোগ করেন যে, এই কর্মকর্তা হারুন কর্মচারীদের সাথে সব সবসময়ই বিমাতা সুলভ আচরণ করে থাকেন। বিশেষ ভাবে নিম্ন শ্রেণীর কর্মচারী হলে তো কথাই নেই। টেপাররা অভিযোগ করেন সেই রাত্রি তিনটা থেকে রাবার গাছে টেপেং করেন (রাবারের জন্য গাছের ছাল কাটেন) এবং বাতি বসিয়ে দেন, আবার সকাল নয়টা থেকে রাবার সংগ্ৰহ করা শুরু করেন।

IMG 20240801 222302

টেপার’রা বলেন, এতো কষ্ট করে রাবার সংগ্ৰহ করে নিয়ে যাই, রাস্তা ঘাট খুবই খারাপ, এর আগের ম্যানেজার রাস্তাঘাট ঠিকঠাক করে দিলেও, অজানা কারণে এই ম্যানেজার ঠিক করে দেয় না। হাড়ভাঙ্গা খাটনি কেটে রাবার সংগ্ৰহ করে নিয়ে যাই কিন্তু ২২ কেজির জায়গায় ধরা হয় ২০ কেজি, ২৫ কেজি হলে ২২ কেজি, ১০ কেজি হলে ৯ কেজি এইভাবে হাজার হাজার কেজি রাবার চুরি করেন এই কর্মকর্তা। রাবার সংগ্ৰহ করতে টেপারদের দেওয়া হয় ৬ মাস ১৫ টাকা কেজি এবং আর ৬ মাস দেওয়া হয় ৯ টাকা কেজি। টেপাররা অভিযোগ করেন এখানেও অবশ্যই দুর্নীতি করা হয়। টেপাররা আরো অভিযোগ করেন, যদি ঝড়ে ২/৩টা গাছ ভাঙ্গে সেখানে হিসাব দেখানো হয় ১০/১২টি কারণ ঐ বারতি গাছের সংগ্ৰহ করা গাছের রাবারগুলো হিসাবের বাইরে রাখে। তবে টেপাররা একটু ভুল করলেই অনুপস্থিত দেখিয়ে সেই টাকাগুলো মেরে দেয়! টেপাররা বলেন, এই কয়েক বছরেও একবারের জন্য হলেও তার হাসিমুখ দেখিনি!

 

মোঃ হারুন সাহেবের বেশ ভূষায় দেখে বুঝার উপায় নেই যে, উনি এতো বড়ো দুর্নীতিবাজ! দাড়ি রেখে নামাজ পড়ে কপালে কালো দাগ ফেলেও কিন্তু চাকরির অল্প সময়ে চতুর মোঃ হারুন দুর্নীতি করে গড়েছেন নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ।

 

হারুনের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার পৌর শহরের ৪নং ওয়ার্ডে, উনার পিতা সেকান্দার আলী, “নাহার মেডিকেল হল” নামে উনাদের একটি ঔষধের দোকান আছে পৌরসভার মেইন রোডে ৮নং ওয়ার্ডে।

IMG 20240801 WA0010

পাশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, এক সময় ভাড়া দোকান নিয়ে ফার্মেসি করলেও এখন পৌর শহরে হয়েছে নিজস্ব দোকান এবং বাসা। উনি আশ্চর্যের সুরে বলেন, এই অল্প সময়ে কিভাবে এতো কিছু হলো বলতে পারবো না। তথ্য আরো বলে যে, ঔষধ এবং রোগীদের সাথে প্রতারণার দায়ে হারুনের পিতাও একাধিকবার জেলও খেটেছেন!

 

সন্তোষপুর রাবার বাগানের কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, অফিসের বাউন্ডারী মেরামতের জন্য বরাদ্দ পেলেও কোনো প্রকার মেরামত বা ওয়ালের প্লাস্টার না করেই কোনো রকম রং লাগিয়ে বিল উঠিয়ে নিয়েছে। এইভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি করছে এই কর্মকর্তা যেন দেখার যেন কেউ নেই।

(চলবে)

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Chtbarta

জনপ্রিয়

মানিকছড়ি সদর ইউনিয়নে কৃষক সমাবেশ

দেশের সাদা সোনার কারখানার দুর্নীতির খবর কেউ রাখে না – (পর্ব – ১)

প্রকাশিত: ০৭:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪
print news

 

 

প্রিন্স এডওয়ার্ড মাংসাং, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

 

দেশের বড়ো বড়ো কর্মকর্তাদের দুর্নীতির খবরের ঝড়ে তালমাতাল অবস্থা হলেও, সব সবসময়ই অন্তরালে থেকে যায় দেশের সাদা সোনা খ্যাত রাবার বাগানের দুর্নীতির কথা! তাই বলে কি অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের চোখ ফাঁকি দেওয়া কি এতোই সহজ ? তেমনি এক মহা দুর্নীতিবাজ রাবার কর্মকর্তার দুর্নীতি উঠে এসেছে সংবাদ কর্মীদের অনুসন্ধানে!

IMG 20240801 WA0010

বলছিলাম ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার সন্তোষপুর রাবার কর্মকর্তা মোঃ হারুনের দুর্নীতির কথা, মোঃ হারুন রাবার বাগানে যোগদানের পর থেকেই একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে, তার উপর কথা বললেই নেমে আসে শাস্তির নতুন নতুন কৌশল।

 

রাবার বাগানে কর্মরত স্থায়ী এবং অস্থায়ী টেপাররা (রাবার গাছের কষ সংগ্ৰহকারী) অভিযোগ করেন যে, এই কর্মকর্তা হারুন কর্মচারীদের সাথে সব সবসময়ই বিমাতা সুলভ আচরণ করে থাকেন। বিশেষ ভাবে নিম্ন শ্রেণীর কর্মচারী হলে তো কথাই নেই। টেপাররা অভিযোগ করেন সেই রাত্রি তিনটা থেকে রাবার গাছে টেপেং করেন (রাবারের জন্য গাছের ছাল কাটেন) এবং বাতি বসিয়ে দেন, আবার সকাল নয়টা থেকে রাবার সংগ্ৰহ করা শুরু করেন।

IMG 20240801 222302

টেপার’রা বলেন, এতো কষ্ট করে রাবার সংগ্ৰহ করে নিয়ে যাই, রাস্তা ঘাট খুবই খারাপ, এর আগের ম্যানেজার রাস্তাঘাট ঠিকঠাক করে দিলেও, অজানা কারণে এই ম্যানেজার ঠিক করে দেয় না। হাড়ভাঙ্গা খাটনি কেটে রাবার সংগ্ৰহ করে নিয়ে যাই কিন্তু ২২ কেজির জায়গায় ধরা হয় ২০ কেজি, ২৫ কেজি হলে ২২ কেজি, ১০ কেজি হলে ৯ কেজি এইভাবে হাজার হাজার কেজি রাবার চুরি করেন এই কর্মকর্তা। রাবার সংগ্ৰহ করতে টেপারদের দেওয়া হয় ৬ মাস ১৫ টাকা কেজি এবং আর ৬ মাস দেওয়া হয় ৯ টাকা কেজি। টেপাররা অভিযোগ করেন এখানেও অবশ্যই দুর্নীতি করা হয়। টেপাররা আরো অভিযোগ করেন, যদি ঝড়ে ২/৩টা গাছ ভাঙ্গে সেখানে হিসাব দেখানো হয় ১০/১২টি কারণ ঐ বারতি গাছের সংগ্ৰহ করা গাছের রাবারগুলো হিসাবের বাইরে রাখে। তবে টেপাররা একটু ভুল করলেই অনুপস্থিত দেখিয়ে সেই টাকাগুলো মেরে দেয়! টেপাররা বলেন, এই কয়েক বছরেও একবারের জন্য হলেও তার হাসিমুখ দেখিনি!

 

মোঃ হারুন সাহেবের বেশ ভূষায় দেখে বুঝার উপায় নেই যে, উনি এতো বড়ো দুর্নীতিবাজ! দাড়ি রেখে নামাজ পড়ে কপালে কালো দাগ ফেলেও কিন্তু চাকরির অল্প সময়ে চতুর মোঃ হারুন দুর্নীতি করে গড়েছেন নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ।

 

হারুনের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার পৌর শহরের ৪নং ওয়ার্ডে, উনার পিতা সেকান্দার আলী, “নাহার মেডিকেল হল” নামে উনাদের একটি ঔষধের দোকান আছে পৌরসভার মেইন রোডে ৮নং ওয়ার্ডে।

IMG 20240801 WA0010

পাশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, এক সময় ভাড়া দোকান নিয়ে ফার্মেসি করলেও এখন পৌর শহরে হয়েছে নিজস্ব দোকান এবং বাসা। উনি আশ্চর্যের সুরে বলেন, এই অল্প সময়ে কিভাবে এতো কিছু হলো বলতে পারবো না। তথ্য আরো বলে যে, ঔষধ এবং রোগীদের সাথে প্রতারণার দায়ে হারুনের পিতাও একাধিকবার জেলও খেটেছেন!

 

সন্তোষপুর রাবার বাগানের কর্মচারীরা অভিযোগ করে বলেন, অফিসের বাউন্ডারী মেরামতের জন্য বরাদ্দ পেলেও কোনো প্রকার মেরামত বা ওয়ালের প্লাস্টার না করেই কোনো রকম রং লাগিয়ে বিল উঠিয়ে নিয়েছে। এইভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি করছে এই কর্মকর্তা যেন দেখার যেন কেউ নেই।

(চলবে)