সিএইচটি বার্তা ডেস্কঃ
পাহাড়ের সংঘাতের কারণে গেলো প্রায় ১ মাস ধরে বন্ধ ছিলো পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান রাঙামাটির সাজেক ভ্যালি। এতে লোকসানের মুখে পড়েছিলো অসংখ্য ব্যবসায়ী, চাকরি হারানোর শঙ্কা তৈরি হয় অনেক কর্মচারীর। অবশেষে সাজেক খুলে দেওয়ায় যেমন পর্যটকদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে তেমনি স্বস্তি এসেছে ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের প্রাণে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর পর্যটকরা খাগড়াছড়ি সদর থেকে সাজেকে পাড়ি জমিয়েছেন। যার ফলে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র রাঙামাটির সাজেক আবারো মুখরিত হয়ে উঠবে পর্যটকের পদচারণায়। দীর্ঘদিন পর সাজেকে পর্যটক আগমনে খুশি ব্যবসায়ীরা। প্রথম দিন পর্যটকের সংখ্যা কিছুটা কম হলেও ধীরে ধীরে পর্যটকরা সাজেকমুখী হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন তারা। সাজেকে ১১৬টি হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে। এছাড়া ১৪টির বেশি রেস্তোরাঁ রয়েছে।
সাজেক চিলেকোঠা রেষ্টুরেন্টের মালিক নাছির উদ্দিন পিন্টু জানান, বাঘাইহাট এলাকায় সকাল ১১টা পর্যন্ত ৬০-৭০টি পর্যটকবাহী গাড়ি এবং বেশকিছু মোটরসাইকেল নিয়ে সাজেকে ঢুকতে দেখা গেছে।
সাজেকের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, শুধু লোকসান রিসোর্ট-কটেজ কিংবা রেস্টুরেন্ট মালিকদের হয়নি। পর্যটকদের বহনে জিপ চালক, হেলপারদের অলস সময় কাটাতে হয়েছে। সাজেকে স্থানীয় পাহাড়িরা তাদের বাগানে উৎপাদিত ফলমূল, বাঁশকোড়লসহ হাতে বানানো অনেককিছুই বিক্রি করে, তাদের আয়ও বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক ফলমূল পঁচে গিয়েছে। তারপরও বিধি-নিষেধ তুলে নেয়ায় স্বস্তি এখানকার সকলের।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কারণে সাজেক পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করেছে প্রশাসন। এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নেই। খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো মঙ্গলবার থেকে উন্মুক্ত হবে ফলে পর্যটকরা খাগড়াছড়ি হয়ে সাজেক ভ্রমণ করতে পারবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাঙমাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খাঁন বলেন, গত ১ নভেম্বর রাঙ্গামাটি জেলায় পর্যটক আগমনের ওপর সকল প্রকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও সাজেকে যেতে খাগড়াছড়ি সড়কপথ ব্যবহারসহ বিভিন্ন কারণে রাঙামাটির সাজেকের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ ছিলো। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আজ থেকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে সাজেক ভ্যালি।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে মামুন নামে এক যুবককে হত্যার পর খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা উপজেলা এবং রাঙামাটি শহরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে এই দুই জেলায় চারজন নিহত এবং অনেকে আহত হয়। পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানে গত ৮-৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছিল স্থানীয় প্রশাসন।