বান্দরবান প্রতিনিধি:সারাদেশের ন্যায় বান্দরবানেও নতুন বছরের প্রথম দিনেই শিশু থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত মারমা, চাকমা ও ত্রিপুরা শিশুদের মধ্যে নিজস্ব মাতৃভাষার পাঠ্য বই বিতরণ করা হয়েছে। মাতৃভাষায় বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত পাহাড়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১জানুয়ারি) বান্দরবান জেলা পরিষদের হল রুমে বই বিতরণ করা হয়। এছাড়া জেলায় সরকারি-বেসরকারি সব স্কুলে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সূত্রে জানা যায়, বান্দরবান জেলায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৪৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯০ হাজার ১৪৫ জন শিক্ষার্থীকে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৬৩৩টি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। চাকমা ভাষায় ১৪৩৫টি, মারমা ভাষায় ১৪ হাজার ১০৫টি ও ত্রিপুরা ভাষায় ৪৮৮০টি বই বিতরণ করা হয়। তিন সম্প্রদায়ের ৮৯৯০ জন শিক্ষার্থীকে স্ব-স্ব মাতৃভাষার বই বিতরণ করা হয়েছে।
তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী হ্লামেচিং মারমা মাতৃভাষায় বই পেয়ে খুশিতে বলেন, ‘আমি মারমা ভাষায় বই পেলাম। বাড়িতে গিয়ে মা’র সঙ্গে পড়বো।’
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা স্ব স্ব মাতৃভাষায় বই দেওয়া হলেও শিক্ষক না থাকায় বেশিরভাগ স্কুলের শিক্ষকরা এই বই পড়াতে পারেন না। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই ভাষা সম্পর্কে দক্ষ করে তোলা উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।
অভিভাবক উচিংনু মারমা জানান, তার মেয়ে ডএচিং তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। স্কুলে মাতৃভাষার বই কম পড়ায় তাই সময় পেলে বাড়িতে তাকে মারমা ভাষায় লেখা শেখান বলে জানান।
বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল মান্নান বলেন, সারাদেশে ৩৩ কোটি বই বিতরণ করা হয়েছে। বান্দরবান জেলায় ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৬৩৩টি পাঠ্যপুস্তক বছরের প্রথম দিনে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা তিন সম্প্রদায়ের ৮৯৯০ জন শিক্ষার্থীকে মাতৃভাষার বই দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের মাতৃভাষায় শিক্ষা দেওয়ার জন্য দক্ষ শিক্ষকের অভাব থাকায় ইতিমধ্যে ৯০জন শিক্ষককে মাতৃভাষায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
বই বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্ল, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. ফরিদুল আলম হোসাইনি, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল মান্নান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. এমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সহকারী শিক্ষা অফিসার আশীষ কুমার মহাজন প্রমুখ।