আলীকদমে মতবিনিময় সভায় বক্তাদের অভিমত
আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধিঃ
‘পাহাড়ের শিক্ষাহীন জাতিকে দিয়েছেন শিক্ষার আলো। ‘রেংমিটচা’ নামে একটি ভাষা হারিয়ে যেতে বসেছিল। স্কুলঘর নির্মাণ করে সে ভাষা রক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছে সেনাবাহিনী। শিক্ষার্থীদের স্কুলড্রেস, শিক্ষকদের বেতন-ভাতাও সেনা জোন দিচ্ছে। এছাড়াও পাহাড়ের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিরলস কাজ করছে সেনা বাহিনীর গর্বিত সদস্যরা।’
একথাগুলো আলোচনায় উঠেছে গতকাল (রবিবার) আলীকদম সেনা জোনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সম্মেলনে।
লামা-আলীকদম উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ সম্মেলনে যোগ দেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, হেডম্যান, কার্বারীগণ ও সাংবাদিকরা।
আলীকদম সেনা জোনের কমন্ডার লে. কর্নেল শওকাতুল মোনায়েম, পিএসসি এ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, পাহাড়ের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য আলীকদম সেনা জোনের অধীনে অতি দুর্গম এলাকায় স্থাপিত সেনা ক্যাম্পগুলো কাজ করছে। দুর্গমের বাসিন্দাদেরকে শিক্ষা, চিকিৎসা ও জরুরী ত্রাণ সহযোগিতা দিয়ে সেনা বাহিনীর সবসময় পাশে থেকেছে।
তিনি আরও বলেন, সামাজিক সুবিধাবঞ্চিত পাহাড়ি এলাকার সাধারণ জনগণের বন্ধু হয়ে সেনাবাহিনী পাঁচ দশকের বেশি সময় যাবত পাশে রয়েছে। ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আওতায় বান্দরবান রিজিয়নের আলীকদম সেনা জোন পাহাড়ের সম্প্রীতি ও উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
মতবিনিময় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলীকদম সেনা জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মোঃ মঞ্জুর মোর্শেদ, পিএসসি। সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কুরুকপাতা ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো, পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য দুংড়িমং মার্মা, ম্রো কল্যাণ ছাত্রাবাসের পরিচালক ইয়োংলক ম্রো, দিপু তঞ্চঙ্গ্যা ও প্রেসক্লাব সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমদ।
সভায় আলীকদম ম্রো কল্যাণ ছাত্রাবাসের পরিচালকা ইয়োংলক ম্রো বলেন, ২০০৮ সালে আলীকদম সেনা জোনের সহযোগিতা নিয়ে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আলীকদম ম্রো কল্যাণ ছাত্রাবাস। প্রতিষ্ঠার তিনবছর পর থেকে প্রতিবছর ১০/১৫ জন হারে ম্রো জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা এসএসসি পাশ করছে। দু’দশক আগেও লামা-আলীকদম উপজেলায় এসএসসি পাশ ম্রো শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। এ ছাত্রাবাসটি প্রতিষ্ঠায় সেনা বাহিনীর অবদানের কথা তিনি উল্লেখ করেন।
জোন কমান্ডার এ সম্মেলনে বনজ ও খনিজ সম্পদ রক্ষা, সন্ত্রাস, চোরাচালান প্রতিরোধ, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধ, পর্যটক সেবা নিশ্চিত করাসহ শিক্ষা-সংস্কৃতি ও ক্রীড়ার প্রসারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ভ্রমণে টুরিস্ট গাইড ব্যবহার, এনজিও কার্যক্রমে নজরদারি, ধর্মীয় ও সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডের অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।