ঢাকাস্থ বসবাসরত পাহাড়িদের বৈসাবির প্রীতি সম্মিলনী ও সংবর্ধনা
ঢাকা অফিসঃ
বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা বাংলাদেশের রত্ন ও স্বাধীনতার ঘোষণাকারী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে ৭ মার্চ ভাষনে বলেছেন এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। এই এক তর্জনীতে এক বাক্যে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ৭ কোটি বাঙালী জাতিকে যেভাবে একত্রিত করেছেন, তেমনিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল জুম্ম জনগোষ্ঠীদের মহান নেতা ও অবিসংবাদিত নেতা তৎকালীন সংসদ সদস্য মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা (এমএন লারমা) ৭ লক্ষ জুম্ম জাতিগোষ্ঠীকে আত্ননিয়ন্ত্রণ অধিকার আদায়, নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতিকে রক্ষার্থে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ভিটেহারা শোষণ-নিপীড়ন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রামের জন্য ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বাঙালী জাতিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এক তর্জনীতে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ করেছেন তেমনি পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীকেও এক বাক্যে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়ি জাতিসত্ত্বাকে এক ছাতার নিচে একত্রিত করে লড়াই সংগ্রামের পথ শিখিয়েছেন। তৎকালীন ১৯৮০-১৯৮২ সালে শতশত স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেধাবী ছাত্ররা এমএন লারমার ডাকে সারা দিয়ে পাহাড়িদের আত্ননিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শান্তিবাহিনীতে যোগদান করে এই লড়াই সংগ্রামে সামিল হয়েছেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে যেভাবে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন তেমনি পাহাড়িদের শান্তিকামী অবিসংবাদিত নেতা এমএন লারমাকে সেভাবে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীদের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও কৃষ্টি কালচারাল নিজ নিজ ভাষা, সংস্কৃতি প্রচারের লক্ষ্যে এই শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে পাহাড়িদের সব ধরনের আচার-অনুষ্টান অনুষ্টিত হবে। এই কমপ্লেক্সটি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে গড়া। প্রধানমন্ত্রীর নিজের প্রচেষ্টায় এবং একক সিদ্ধান্ত মোতাবেক এটি অনুমোদন দেয়ায় নির্মাণ কাজ সম্পন্ন সম্ভব হয়েছে। কমপ্লেক্সটি নির্মাণ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের আচার-অনুষ্টানের সুযোগ করে দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
ঢাকায় বসবাসরত পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীদের বৈসুক, সাংগ্রাই, বিঝু, সাংক্রান ও বিষু (বৈসাবি) উপলক্ষে প্রীতি সম্মিলনী ও সংবর্ধনা অনুষ্টানে ধীরাজ চাকমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান সুদত্ত চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব সজল কান্তি বণিক, ট্যুারিষ্ট পুলিশ ডিআইজি বিধান ত্রিপুরা, মেজর (অবঃ) ডাঃ অজয় চাকমা।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বৈসাবি উপলক্ষে প্রীতি সম্মিলনী ও সংবর্ধনা অনুষ্টানের সদস্য সচিব পূণ্যলাক্ষ চাকমা। এছাড়াও অনুষ্টানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকাস্থ প্রীতি সম্মিলনী ও সংবর্ধনা বৈসাবি উপলক্ষে শেখ হাসিনা পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স এ হলরুমে বৈসাবির আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্টান সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্টিত হয়। আলোচনা সভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা শুরু হয়। এই বৈসাবি উপলক্ষে আগত পাহাড়ি বাঙ্গালীদেরকে পাজন ও রাতের খাবার পরিবেশন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন