বাঘাইছড়ি প্রতিনিধিঃ
রাঙ্গামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলা বঙ্গলতলি বোধিপুর বন বিহারে ধর্মাবলম্বীদের মহা সংঘদান ও ৮৪ হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন অনুষ্টান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) ২০২৪ রাঙ্গামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলার ৩৫নং বঙ্গলতলি ইউনিয়নের বাসী উদ্যোগে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিন ব্যাপী কর্মসূচি মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল পরম করুনাময় ধর্মীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে অনুষ্টান শুরু হয়। দানীয় যজ্ঞ, বুদ্ধপুজা, বুদ্ধমূর্তিদান, অষ্টপরিস্কার দান, মহা সংঘদান, ৮৪ হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, পঞ্চশীল প্রার্থনা, ধর্মীয় দেশনা, ৮৪ হাজার প্রদীপ প্রদক্ষিণ উৎসর্গ, তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধের পূজা গ্রহন, গৌতম বুদ্ধের অহিংসা ধর্মালোচনা সভা, প্রদীপ ও পানীয় পূজা, সমবেত প্রার্থনাসহ নানাবিধ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এই সময় বিভিন্ন এলাকা হতে পুণ্যার্থীরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
এই মহা সংঘদান অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় করেন ধন মুনি চাকমা ও স্বাগত বক্তব্যে’র মাধ্যমে সভাপতিত্ব করেন শুভ বদ্ধর্ন মহা স্থবির ভান্তে দিঘীনালা বন বিহার। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ডাঃ স্নেহ কান্তি চাকমা সিভিল সার্জেন্ট এমবিবিএস চট্রগ্রাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুকুল কান্তি চাকমা উপ পরিচালক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন, জ্ঞানো জোতি চাকমা চেয়ারম্যান বঙ্গলতলি ইউনিয়ন।
অনুষ্টানে স্বধর্ম দেশনা প্রধান করেন বৌদ্ধ বংশ মহা স্থবির ভান্তে দিঘীনালা সাধনাটিলা বন বিহার। প্রিয়নন্দ ভান্তে বিমুক্তি ভাবনা কুঠির।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে বলেন, সংঘদানে চার-পাঁচজন ভিক্ষুকে দান করলেও সংঘ বলতে অতীত, অনাগত ও বর্তমান সমস্ত সংঘের (বৌদ্ধ সন্ন্যাসী) উদ্দেশ্য দান করা হয় । তিনি আরও বলেন, বৌদ্ধ দর্শনে দান হলো প্রশংসিত একটি কর্ম। সবাই জীবনে কম বেশি দান করে থাকে। দান শব্দের সঙ্গে মালিকানা স্বত্ত ত্যাগের বিষয়টি জড়িত, আর এতে মানুষের লোভ চিত্ত ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়।
প্রাণী হত্যা না করা, বিনা অনুমতিতে অপরের জিনিস না ধরা, মিথ্যা কথা না বলা, নিজ স্বামী স্ত্রী ব্যতীত কাম সেবন না করা ও মদ গাঁজাসহ সকল নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন না করা এই পাঁচটি শীল বা পঞ্চনীতি গ্রহন করে মুহুর্তের মধ্যে সবাই এক সুন্দর চেতনায় ঋদ্ধ হন।
অনুষ্টানে সকাল থেকে গুরি গুরি বৃষ্টির মধ্যদিয়ে ধর্মাবলম্বী হাজার হাজার নারী- পুরুষ ব্যাপক লোকসমাগম হয়।
অনুষ্ঠানের বিকালের পর্ব শেষে ৮৪ হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্যদিয়ে দিন ব্যাপি মহা সংঘদানের অনুষ্টান সমাপ্ত ঘটে।