মিকেল চাকমা, রাঙ্গামাটিঃ
রাঙ্গামাটি লিগ্যাল এইড অফিস অসহায়, দুঃস্থ, গরীব মানুষের বিনামূল্যে আইনগত সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে। আইনগত পরামর্শ ও আপোষ মীমাংসায় দেওয়ানী,পারিবারিক, ফৌজদারি, নালিশী জমিতে সরেজমিনে তদন্তসহ বিভিন্ন ধরনের বিরোধ সমাধান হয়ে যাচ্ছে একজন সিনিয়র সহকারী জজ মোঃ জুনাইদ এর নেতৃত্বে। ফলে ব্যাপক মানুষের সাড়া যেমনি মিলেছে, তেমনি কমে যাচ্ছে মামলা/ মোকদ্দমার মতো হয়রানি কার্যক্রম।
লিগ্যাল এইডের আইন সহায়তা কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৫ সালে। ২০১৯ সাল থেকে একজন সিনিয়র সহকারী জজ নিয়োগের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তিতে গতি বেড়ে যায়।
রাঙ্গামাটি জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২০২৩ ইং সন পর্যন্ত দেওয়ানী, পারিবারিক, ফৌজদারী মোট এডিআর (Alternative Dispute Resolution – বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি) আবেদন জমা হয় ২ হাজার তিনশত চব্বিশটি। তার মধ্যে সফল এডিআর নিষ্পত্তি হয় ৮৯০ টি,মোট এডিআর নিষ্পত্তি ২ হাজার ৬০৩ টি, দেওয়ানী এডিআর নিষ্পত্তি হয় ৪২৩ টি, পারিবারিক এডিআর সফল নিষ্পত্তি হয় ২৪৯ টি, ফৌজদারী এডিআর সফল নিষ্পত্তি হয় ১৭৯টি, পোস্ট কেইস ফৌজদারী সফল নিষ্পত্তি ২০ টি, পোস্ট কেইস দেওয়ানী সফল ১৮ টি, পোস্ট কেইস পারিবারিক সফল নিষ্পত্তি ১ টি, নালিশী জমিতে সরেজমিনে মীমাংসা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৭৫ টি। আদায়কৃত অর্থের পরিমাণ ৩ কোটি ৪ লক্ষ ৬৪ হাজার ৬২৪ টাকা।
রাঙ্গামাটি লিগ্যাল এইড অফিসার ও সহকারী জজ মোঃ জুনাইদ বলেন, লিগ্যাল এইড অফিসের সেবা পেতে কারো সুপারিশ বা তদবিরের প্রয়োজন হয় না। অফিসে এসে সরাসরি অফিসারের সাথে কথা বললে হয়। তিনি আরও বলেন, আগামী এপ্রিল মাস থেকে বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার জনগণের জন্য প্রতিমাসের ১ম সোমবার মাইনী ইউপি কার্যালয়ে লিগ্যাল এইড অফিসার ভ্রাম্যমাণ অফিস করবে। কাপ্তাই নদীর পানি কমে যাওয়ার কারণে বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলা থেকে একজন লোকের রাঙ্গামাটি এসে থাকা খাওয়া বাবদ দুই/আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। জনগনের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম উপজেলা পর্যায়ে লংগদুতে লিগ্যাল এইড অফিস ভ্রাম্যমাণ অফিস পরিচালনা করা হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, লিগ্যাল এইড অফিস রাঙ্গামাটিতে যেখানে ১০ জন কর্মচারী থাকার কথা সেখানে কর্মচারী রয়েছে মাত্র ২ জন, সার্ভেয়ার নেই। যাতায়াতের জন্য বরাদ্দ বা নিজস্ব কোন যানবাহন নেই ।নিজস্ব সার্ভেয়ারসহ পর্যাপ্ত জনবল থাকলে লিগ্যাল এইড অফিসের কার্যক্রম দশগুণ বাড়ানো সম্ভব এবং উপকৃত হবে সাধারণ জনগণ বলে তিনি জানান।
রাঙ্গামাটি লিগ্যাল এইড অফিসে সেবা নিতে আসা কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ রবিউল হোসেন বলেন, লিগ্যাল এইড অফিস জায়গা জমি বিরোধ মীমাংসা করে দেয় একথা একজন পরিচিত জনের কাছে শুনেছি। এজন্য আমার বাপের নামে রেকর্ডীয় ০.১০ শতক জায়গা বিবাদী নুর নবী ও মাকসুদুর রহমান জবরদখল করে। সেজন্য আমি লিগ্যাল এইড অফিসের শরণাপন্ন হয়ে চলতি বছরের ফ্রেবুয়ারি মাসের ৬ তারিখ আবেদন করি। আজকে আমার প্রথম শুনানির দিনধার্য করা হয়েছে। আশা করি আমি সঠিক ও ন্যায় বিচার পাব।