বাঘাইছড়ি প্রতিনিধিঃ
রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে ইউপিডিএফ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ), হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য নারী সংঘের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিনের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ভেঙে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার (১৭ জানুয়ারি ২০২৪) সকাল ১০টায় বালুঘাট হতে মিছিলটি সাজেকের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রেতকাবা চৌমুহনীতে এসে শেষ হয়। বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে বিপুলসহ চার নেতার খুনিদের গ্রেফতারের দাবিসহ বিভিন্ন শ্লোগান দেন ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সংগঠক ইয়ান চাকমা।
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাজেক থানা শাখা সভাপতি নিউটন চাকমার সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সদস্য উজ্জলা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি বিরো চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সদস্য অর্পনা চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি কিরন চাকমা।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলন দমন করার জন্য ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর খাগড়াছড়ি ব্রিগেড কমান্ডার আব্দুল মোতালেব-এর তত্ত্বাবধানে নব্যমুখোশ বাহিনী গঠন করা হয়। যারা আজ খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
বক্তারা পানছড়ি হত্যাকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, গত বছর ১১ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ির পানছড়িতে সেনা মদদে নব্যমুখোশ সন্ত্রাসীরা বিপুল চাকমা, সুনীল ত্রিপুরা, লিটন চাকমা ও রুহিন ত্রিপুরাকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
২০১৮ সালে সন্ত্রাসীরা খাগড়াছড়িতে মিঠুন চাকমাকে হত্যা, স্বনির্ভর বাজারে প্রকাশ্যে ব্রাশফায়ার করে ৭ জনকে হত্যাসহ এ যাবত ইউপিডিএফ’র নেতা-কর্মী, সমর্থকসহ ৫৫ জনকে হত্যা করেছে। কিন্তু কোন হত্যাকান্ডের জড়িত খুনিদের গ্রেফতার ও বিচার করা হয়নি। পানছড়িতে চার নেতা হত্যার ঘটনায় এক মাসেও খুনিদের গ্রেফতার না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, পানছড়ি হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে প্রতিবাদ সংগঠিত হলেও সরকার খুনিদের গ্রেফতার করছে না। উপরন্তু খুনিদেরকে সেনাবাহিনীর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে রেখে আবারো খুনের পরিকল্পনাসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসীরা স্হানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে, মোটা অংকের চাঁদা দাবি করছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন। জনতার আদালতে খুনিদের বিচার হবে মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, সরকার ও তার প্রশাসন খুনি ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের জামাই আদরে আগলে রেখে জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে কাজেই গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যমেই জনতার আদালতে খুনিদের বিচার করতে হবে।
বক্তারা বলেন, সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে খুন-গুম করে ইউপিডিএফের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন কখনো দমন করা যাবে না। সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে ছাত্র-যুব-নারী সমাজসহ সর্বস্তরের জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সমাবশে থেকে বক্তারা অবিলম্বে ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী ভেঙ্গে দিয়ে বিপুল-সুনীল-লিটন-রুহিনের খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।