নিজস্ব প্রতিবেদক, লংগদুঃ
পাহাড়ি জনপদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা লংগদু। যেখানে গত দুই বছর ধরে সড়কের প্রশস্থকরণ সংস্কার কাজ চললেও শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। এরইমধ্যে দেখা গেছে সড়কের এক তৃতীয়াংশের মধ্যে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই চলছে কাজ। ফলে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে নানান প্রশ্ন ও উদ্বেগ।
পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলা সদর হতে বাইট্টপাড়া বাজার পর্যন্ত ব্যস্ততম এই সড়কটির প্রশস্থের কাজ চলমান রয়েছে। সড়কের মধ্যে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটি না সরিয়ে ঢালাই দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর। এবিষয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে স্থানীয়রা। যেকোনো মূহুর্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ব্যস্ততম এই সড়কে পরিকল্পনাহীন কাজ দেখে হতভম্ব সাধারণ মানুষ। বর্তমান সময়ে এসেও এধরণের অনিয়ম মেনে নিতে পারছেনা সাধারণ জনগণ। সাধারণ মানুষ বলছেন, অনিয়মের মধ্যেই রয়ে গেছি আমরা, যেন দেশের সকল অনিয়ম লংগদু থেকেই উৎপত্তি।
স্থানীয়রা বলছেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে উপজেলার মাসিক সভায় এই বিষয়টি উত্থাপন করেছি। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের অসহযোগিতার কারণে এই খুঁটিগুলো সরানো সম্ভব হয়নি। এখন খুঁটি রেখেই সড়ক প্রশস্থকরণ কাজ চলছে। এতে করে জনসাধারণের চলাচল ও যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) একলেনের সড়কটি চলাচলের সুবিধার্থে দুইলেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়া হয় গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে। প্রকল্পটির আওতায় ১০ ফুট প্রশস্থ সড়কটি ১৮ ফুট প্রশস্থ করা হচ্ছে। তবে সড়কের তিনটি বৈদ্যুতিক খুঁটি মূল সড়কের চার ফুট ভেতরে রয়ে গেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া না পাওয়ায় খুঁটি রেখেই সড়ক প্রশস্থ করার কথা জানিয়েছে এলজিইডি। সড়কটির ৯০০ মিটার অংশ প্রশস্থকরণের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাহার এন্টারপ্রাইজ। কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল আলম বলেন, লংগদু উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর হতে প্রায় দশ মাস আগে থেকে একাধিকবার বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠির মাধ্যমে খুঁটি সরানোর ব্যাপারে অবহিত করার পরও এখন পর্যন্ত সড়কের খুঁটিগুলো রয়ে গেছে। অন্যদিকে ঠিকাদারের কাজের মেয়াদও শেষ হওয়ার পথে। তাই জনস্বার্থে সড়কের কাজ চলমান রয়েছে।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের খাগড়াছড়ি নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুল আলীম আলো বলেন, আমি ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিপ্তরের রাঙ্গামাটি নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি, দ্রুত সময়ে দুই অধিদপ্তরের সমন্বয়ে খুঁটি সরানোর কাজ শুরু করা হবে। এছাড়াও লংগদুর দায়িত্বে থাকা দীঘিনালা আবাসিক প্রকৌশলী নজরুল ইসলামকে কাজের ইস্টিমেট তৈরী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কফিল উদ্দীন মাহমুদ বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগকে একাধিকবার উপজেলা প্রকৌশলী বিষয়টি অবগত করলেও তারা এখনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আমিও বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে কথা বলেছি, আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক থেকে বিদ্যুতের খুঁটিগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে। পাশাপাশি সড়কে যাতায়াতকারী চালক ও যাত্রীদের সতর্ক ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : নিউটন চাকমা
সিএইচটি বার্তা