রিপন ওঝা, মহালছড়িঃ
খাগড়াছড়ি জেলা মহালছড়ির প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে বোরোধান তোলা ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষক, তবে সংকটে আছে শ্রমিক। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কৃষকরা সোনালী ধান কাটতে মাঠে নামেন কৃষান- কৃষানিরা।
বাংলা নতুন বছরে শুরুতেই বোরো ধান কাটা শুরু করেছে কৃষকরা। ধান উৎপাদনের বড় মৌসুম হলো বোরো আবাদ।
খুল্যাং পাড়া গ্রামে ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য চিকু চাকমা (৪৫) বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন পাবে। বৈশাখের প্রথম দিনে কৃষকরা ধান কাটতে মাঠে নামেন। বোরোধান ঘরে তোলার জন্য শ্রমিক সংকট রয়েছে। কারণ যার যার জমিতে ফসল তোলা নিয়ে ব্যস্ত। দিন মজুরি লোক না পাওয়াই সমস্যা আছি। পুরুষের দিন মজুরি ৬০০ টাকা মহিলা দিন মজুরি ৩০০ টাকা করে। তবে এরকম পারিশ্রমিক দিয়েও ধানকাটার শ্রমিক ঠিক মত পাওয়া যাচ্ছে না।
এবিষয়ে মাইসছড়ি ইউনিয়নের লেমুছড়ি গ্রামে কৃষক মোঃ জাহিদুল ইসলাম হতে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বোরো ধান রোপন করেছি, কিছু জমির ধান ভালো ফলন এসেছে, কিছু জমির ফলন রোদে নষ্ট হয়েছে। যা ধান পেয়েছি নিজের যানবাহনে করে ঘরের উঠানে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি, চোংড়াছড়ি হতে ধান মাড়াই কল নিয়ে আজ মঙ্গলবার আশা করছি ধান মাড়াই দেবো।
উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকতা তৃপ্তিকর চাকমা বলেন, বৈশাখ মানেই বোরো ধান ঘরে তোলার সময়। তাই তো বৈশাখের প্রথম দিনে পাকা ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। একদিকে কৃষকরা ধান কাটছেন অন্যদিকে ধান মাড়াই সেই ধান রোদে শুকাচ্ছেন কেউবা আবার সেই ধান বস্তা বন্দি করে সংরক্ষণ করছেন।
উল্ল্যেখ্য যে, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে হাইব্রিড ধান ১২০০ পরিবার কৃষক ও উফশী ৮০০ পরিবার কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।
মহালছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তথ্য মতে জানা যায়, ুডযবোরোধান আবাদে মহালছড়ি উপজেলার ১২২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্য মাত্রা অর্জনের জন্য হাইব্রিড ৮৯৫ হেক্টর ও উফশী ৩৩০ হেক্টর জমিতে আবাদে লক্ষ্যমাত্রা। আবহাওয়া ভালো থাকলে ১৫/১৭ দিন ভিতরে বোরোধান কৃষকগণ কেটে তোলা শেষ করতে পারবেন। যাদের বাড়িতে গৃহপালিত গরু রয়েছে, ধানমাড়াই হতে খড় পৃথক হয়। উচ্ছিষ্ট খড় ভালো করে শুকিয়ে সংরক্ষণ করে রাখতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে।
মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জানান, এপ্রিল মাসজুড়ে সারাদেশে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। তবুও পরিবারের প্রয়োজনে রোপনকৃত ধান জমি হতে কেটে আনতে হয়। শরীরের পানিশুন্যতা পূরণ করতে প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছে। তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক হতে পারে, হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে তীব্র গরম থেকে দূরে থাকতে হবে, মাঝে মাঝে ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হবে। গরম আবহাওয়ায় ঢিলেঢালা পাতলা ও হালকা রঙের পোশাক পরতে অনুরোধ করেছেন।