Dhaka , শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানিকছড়িতে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীদের পানি সংকট

print news

 

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধিঃ

 

খাগড়াছড়ি মানিকছড়ি উপজেলা সদর ইউনিয়নের ফকিরনালা, ওয়াব্রাই, ডেপুয়া গ্রামের প্রায় ২শতটি পাহাড়ি, বাঙালি পরিবারের বসবাস করছেন। এ দুটি পাড়ার একমাত্র পানির উৎস হলো ফকিরনালা কূয়া। প্রাকৃতিক তীব্র গরমে কূয়াটি প্রায় শুকিয়ে যাওয়ায় এই এলাকার লোকজন পানি বড় সংকটে আছে। প্রাকৃতিক বৈরিতার মানিকছড়ি ভূর্গস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে যাওয়া উপজেলা অধিকাংশ পানি উৎস শুকিয়ে যাওয়ায় কেবল খাবার পানি নয়, গৃহস্থালির কাজে ব্যবহারের পানিও মিলছে না। পাহাড়ি এলাকায় পানির জন্য হাহাকার পড়েছে। এলাকাবাসীরা বহু বছর আগে পাহাড়ের নিচের জমি পাশ্বেই ইটের রিং দিয়ে গর্ত করে একটি কূয়া থেকে ভোরের কাক ডাকা সাথে শতশত নারী পানি সংগ্রহ করছেন। মৃতপ্রায় এই কূয়াটি পানিই এখন এলাকার মানুষজনের একমাত্র ভরসা।

 

উপজেলার বিভিন্ন জনপদে এখন তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে। চলমান খরার কারণে উপজেলা মানিকছড়ি খালের পাহাড়ি ঝরনা শুকিয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকার লোকজন বলছেন, কেবল খরা নয়, নির্বিচারে বন-জঙ্গল উজাড় ও গাছপালা নিধনের কারণে পাহাড়ের প্রাকৃতিক ঝরনাগুলো শুকিয়ে গেছে। গত দুই থেকে তিনদিন ধরে প্রাকৃতিক বৃষ্টি হলেও পাহাড়ের মাটি এখনও ভিজেই নিই। বৃষ্টি পড়ে কূয়া থেকে ঘোলা পানি পান করে নারী, বয়স্ক, শিশুরা ডায়রিয়াসহ নানা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।

 

ফকিরনালা স্থানীয় বাসিন্দা ক্রাপ্রু মারমা বলেন, বর্তমানে ডিজিটাল যুগে বাস করলেও এই এলাকায় বাসিন্দারা আদিকাল মানুষের মতো বসবাস করছে। আমাদের প্রত্যকদিন অনেক দূর কূয়া থেকে পানি আনতে হয়। এই এলাকায় প্রায় ২শত বাড়ি লোকের বসবাস। প্রত্যকদিন সকাল হলে কূয়াতে নারীরা পানি জন্য কলসি নিয়ে লাইন ধরতে হয়।

received 371412532020342

আরেক বাসিন্দা সাথোয়াই মারমা (৬২) আক্ষেপ করে বলেন আমি বুড়ো হয়ে গেছি কিন্তু কখনোও কূয়া পানি পান করতে হচ্ছে। নির্বাচনে সময় প্রতিনিধিরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলে ভোটের পর সব ভূলে যায়। জনপ্রতিনিধি কাছেই দাবি করেন যেন তার এলাকায় অগভীর নলকূপ স্থাপন করে দেয়।

 

মহিলা ইউপি সদস্য ক্রাখইঞো মারমা বলেন, এই এলাকায়তে পাহাড়ের পাথর হওয়ার কারণে নলকূপ স্থাপন করতে গেলে খরচ বেশি লাগে। পাহাড়ের বসবাসকারী এত টাকা দিয়ে টিউবওয়েল বা রিংওয়েলও বসানো সম্ভব নয়।

 

এই বিয়ষে ১নং মানিকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান সাথে মুঠোয় ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
মানিকছড়ি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ত্বাহসিননুল ইসলাম বলেন বিষয়টি সরেজমিনে মাঠেই পরিদর্শন করবেন। পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা জন্য উর্ধবতন কর্মকর্তা সাথে যোগাযোগ করবেন বলে জানান।

received 361038489798317

প্রতিবছর উপজেলায় এই সময়ে পানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হলেও প্রাকৃতিকভাবে সৃজিতভাবে বনাঞ্চল গুলো বিলীন হয়ে যাওয়ায় এ বছর পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে যাওয়ায় সংকট চরম আকার নিচ্ছে বলে অভিমত জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তন, অতি খরা, অব্যাহতভাবে গাছপালা কেটে ফেলার কারণে প্রাকৃতিক পানির উৎসগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষগুলো মূলত ঝিরি, ছড়ার উপর নির্ভরশীল।

লেখক তথ্য সম্পর্কে

Chtbarta

জনপ্রিয়

অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বান্দরবানে ৬৩ জন রোহিঙ্গা আটক।

মানিকছড়িতে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীদের পানি সংকট

প্রকাশিত: ০২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪
print news

 

মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধিঃ

 

খাগড়াছড়ি মানিকছড়ি উপজেলা সদর ইউনিয়নের ফকিরনালা, ওয়াব্রাই, ডেপুয়া গ্রামের প্রায় ২শতটি পাহাড়ি, বাঙালি পরিবারের বসবাস করছেন। এ দুটি পাড়ার একমাত্র পানির উৎস হলো ফকিরনালা কূয়া। প্রাকৃতিক তীব্র গরমে কূয়াটি প্রায় শুকিয়ে যাওয়ায় এই এলাকার লোকজন পানি বড় সংকটে আছে। প্রাকৃতিক বৈরিতার মানিকছড়ি ভূর্গস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে যাওয়া উপজেলা অধিকাংশ পানি উৎস শুকিয়ে যাওয়ায় কেবল খাবার পানি নয়, গৃহস্থালির কাজে ব্যবহারের পানিও মিলছে না। পাহাড়ি এলাকায় পানির জন্য হাহাকার পড়েছে। এলাকাবাসীরা বহু বছর আগে পাহাড়ের নিচের জমি পাশ্বেই ইটের রিং দিয়ে গর্ত করে একটি কূয়া থেকে ভোরের কাক ডাকা সাথে শতশত নারী পানি সংগ্রহ করছেন। মৃতপ্রায় এই কূয়াটি পানিই এখন এলাকার মানুষজনের একমাত্র ভরসা।

 

উপজেলার বিভিন্ন জনপদে এখন তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে। চলমান খরার কারণে উপজেলা মানিকছড়ি খালের পাহাড়ি ঝরনা শুকিয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকার লোকজন বলছেন, কেবল খরা নয়, নির্বিচারে বন-জঙ্গল উজাড় ও গাছপালা নিধনের কারণে পাহাড়ের প্রাকৃতিক ঝরনাগুলো শুকিয়ে গেছে। গত দুই থেকে তিনদিন ধরে প্রাকৃতিক বৃষ্টি হলেও পাহাড়ের মাটি এখনও ভিজেই নিই। বৃষ্টি পড়ে কূয়া থেকে ঘোলা পানি পান করে নারী, বয়স্ক, শিশুরা ডায়রিয়াসহ নানা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।

 

ফকিরনালা স্থানীয় বাসিন্দা ক্রাপ্রু মারমা বলেন, বর্তমানে ডিজিটাল যুগে বাস করলেও এই এলাকায় বাসিন্দারা আদিকাল মানুষের মতো বসবাস করছে। আমাদের প্রত্যকদিন অনেক দূর কূয়া থেকে পানি আনতে হয়। এই এলাকায় প্রায় ২শত বাড়ি লোকের বসবাস। প্রত্যকদিন সকাল হলে কূয়াতে নারীরা পানি জন্য কলসি নিয়ে লাইন ধরতে হয়।

received 371412532020342

আরেক বাসিন্দা সাথোয়াই মারমা (৬২) আক্ষেপ করে বলেন আমি বুড়ো হয়ে গেছি কিন্তু কখনোও কূয়া পানি পান করতে হচ্ছে। নির্বাচনে সময় প্রতিনিধিরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলে ভোটের পর সব ভূলে যায়। জনপ্রতিনিধি কাছেই দাবি করেন যেন তার এলাকায় অগভীর নলকূপ স্থাপন করে দেয়।

 

মহিলা ইউপি সদস্য ক্রাখইঞো মারমা বলেন, এই এলাকায়তে পাহাড়ের পাথর হওয়ার কারণে নলকূপ স্থাপন করতে গেলে খরচ বেশি লাগে। পাহাড়ের বসবাসকারী এত টাকা দিয়ে টিউবওয়েল বা রিংওয়েলও বসানো সম্ভব নয়।

 

এই বিয়ষে ১নং মানিকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান সাথে মুঠোয় ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
মানিকছড়ি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ত্বাহসিননুল ইসলাম বলেন বিষয়টি সরেজমিনে মাঠেই পরিদর্শন করবেন। পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা জন্য উর্ধবতন কর্মকর্তা সাথে যোগাযোগ করবেন বলে জানান।

received 361038489798317

প্রতিবছর উপজেলায় এই সময়ে পানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হলেও প্রাকৃতিকভাবে সৃজিতভাবে বনাঞ্চল গুলো বিলীন হয়ে যাওয়ায় এ বছর পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে যাওয়ায় সংকট চরম আকার নিচ্ছে বলে অভিমত জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তন, অতি খরা, অব্যাহতভাবে গাছপালা কেটে ফেলার কারণে প্রাকৃতিক পানির উৎসগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষগুলো মূলত ঝিরি, ছড়ার উপর নির্ভরশীল।