উচ্চপ্রু মারমা, রাজস্থলী প্রতিনিধিঃ
রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলায় প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ চাষ শুরু করেছেন শিক্ষিত যুবক থুইচিংমং মারমা। গাইন্দ্যা ইউনিয়নের তাইতংপাড়া এলাকার হ্নারা খালের তীরবর্তী প্রায় আড়াই একর জমিতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তিনি। পাহাড়ি অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তরমুজ চাষের এই প্রচেষ্টা কৃষি ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।
দূর্গম এ অঞ্চলে রাজস্থলী উপজেলায় বছরের পর বছর অনাবাদি অবস্থায় পড়ে থাকা জমিগুলোতে প্রথমবারের মত তরমুর চাষ করে সফলতা পেয়েছে পাহাড়ের স্থানীয় কৃষক থুইচিংমং মারমা। এক সময় রাজস্থলী উপজেলার অনাবাদি এসব জমিতে কোনো শীতকালীন তরমুজ চাষ করা হতো না। চলতি মৌসুমে পাহাড়ের পাদদেশে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অনাবাদি জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে।
আইএ পাশ যুবক থুইচিংমং মারমা জানান, আমাদের রাজস্থলী উপজেলায় দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তরমুজ এনে অনেক বেশি দামে বিক্রয় করা হয়। যার ফলে আমাদের এলাকার অধিকাংশ গরীব মানুষের নাগালের বাইরে থাকে তরমুজ। এই বিষয়টি উপলব্ধি করে আমি রাজস্থলী কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শে হ্নারা খালের তীরবর্তী প্রায় আড়াই একর জায়গা লিজ নিয়ে তরমুজ চাষের এই উদ্যোগ গ্রহণ করি। এই তরমুজ চাষে এই পর্যন্ত আমি প্রায় ১ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ করেছি। আমার প্রতিটি তরমুজের চারা বেশ ভালোভাবে বড় হয়েছে এবং ফুল ধরেছে। এছাড়াও ইতোমধ্যে মাঝে মাঝে তরমুজ বড় হয়েছে। পরিস্থিতি ভালো হলে এখান থেকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকারও অধিক তরমুজ বিক্রয় করা যাবে বলে আশা করছি। আমার এলাকার মানুষের চাহিদা পূরণ করেও দেশের বিভিন্ন জেলায় আমার তরমুজের যোগান দিতে পারবো বলে আশা করছি।
এলাকার কৃষকরা জানান, থুইচিংমং-এর এই উদ্যোগ দারুণ উৎসাহ সৃষ্টি করেছে। অনেকেই তার কাছে এসে পরামর্শ নিচ্ছেন এবং ভবিষ্যতে তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারাও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, যদি সঠিক পরিচর্যা ও বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করা যায়, তাহলে এটি একটি লাভজনক কৃষি উদ্যোগে পরিণত হতে পারে।
তবে থুইচিংমং মারমা মনে করেন, এই ধরনের কৃষি উদ্যোগ সফল করতে হলে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সহায়তা প্রয়োজন। বিশেষ করে বিনিয়োগ সুবিধা, কৃষি ঋণ এবং প্রশিক্ষণের সুযোগ পেলে পাহাড়ি এলাকায় আরও কৃষক তরমুজ চাষে আগ্রহী হতে পারেন।
এই বিষয়ে রাজস্থলী কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়াজ বিশ্বাস জানান, উপজেলার তাইতংপাড়া এলাকার শিক্ষিত যুবক থুইচিংমং মারমা আমাদের পরামর্শে প্রায় এক একর জায়গাজুড়ে এই উপজেলায় প্রথমবারের মতো তরমুজ চাষ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রথমবারের মতো উদ্যোগ নেওয়ায় আমরা তার দিকে বিশেষ নজর রাখছি। তরমুজ চাষের বিষয়ে আমরা সবসময় তাকে পরামর্শ দিয়ে আসছি। আশা করি তিনি আশানুরূপ তরমুজ পাবেন। থুইচিংমং মারমাকে দেখে এখানের স্থানীয় চাষিরাও তরমুজ চাষে উৎসাহিত হবেন।
মন্তব্য করুন