Dhaka , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোয়াংছড়ি ভদন্ত উ: উইচারিন্দা মহাথেরোর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ২৯ মার্চ।

print news

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার ও রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ও ষষ্ঠতম সংঘরাজ ভদন্ত উ: উইচারিন্দা মহাথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আগামী ২৯ ও ৩০ মার্চ দুইদিন ব্যাপী রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বিহার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।

আজ (২৬ মার্চ) সকাল ১০ টায় বিহার প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উদযাপন কমিটি।

গত ১৭ আগষ্ট ২০২৩ইং তারিখ বেলা ৩ টা নাগাদ সর্বোচ্চ ধর্নীয় মহাগুরু প্রয়াণের খবর ছড়িয়ে পড়লে শোকাঞ্জলি জানাতে হাজারো ধর্মীয় অনুসারীদের ঢল নামে।

সংঘরাজের প্রয়াণের খবর পেয়ে বান্দরবান পাবর্ত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা উপস্থিত হয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেছেন। মহাপ্রয়াণেকালে সংঘরাজের বয়স ৯১ বছর।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উদযাপন কমিটি জানান, অনুষ্ঠানটি ২৯ ও ৩০ দুইদিনব্যাপী হবে। এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রয়াত ভান্তের প্রতি অন্তিম শ্রদ্ধাস্বরুপ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ১৭টি দলগত সইং নৃত্য,  এয়ইং নৃত্য ১৩টি অংশগ্রহণ করবে।

কমিটি আরো জানান, দুইদিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনিক ভাবে সহযোগীতার পাশাপাশি পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করবেন। অনুষ্ঠানে রাতে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী জাইক্ ও পাংখু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান কমিটি।

অনুষ্ঠানে তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশের অন্যান্য স্থান থেকেও লাখো পূণ্যার্থী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন বলে প্রত্যাশা করছেন উদযাপন কমিটি।

সূত্রে জানা যায়, প্রয়াত ভান্তে রোয়াংছড়ি পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা পিতা মৃত উসাজাই মারমা ও মাতা মৃত ড. মাথুই মারমার ৫ সন্তানের মধ‍্যে ও তিনি হলেন চতুর্থ সন্তান। বড় ভাই উচিংথোয়াই মারমা, মেজো ভাই গংব্রা মারমা, সেজো ভাই মংহ্লাচিং মারমা, মংম্রা মারমা (সংঘরাজ), বোন মাসংচিং মারমা।

মংম্রা মারমার ১৯৩৩ সালে রোয়াংছড়ি পাড়ায় জন্ম হয়। ১৯৪৮ সালের ১৫ বছর বয়সে শ্রমণ বা প্রব্রজ্জ্যা গ্রহণ করেন। ১৯৫৫ সালের ২২ বছর বয়সে ব্রহ্ম চর্চা ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বুদ্ধ শাসনে (বৌদ্ধ ভিক্ষু) উপসম্পদা লাভ করেন। প্রব্রজিত হওয়ার ধর্মীয় উচ্চ শিক্ষা লাভে মায়ানমার রাইংগুন শহরে গমণ করেন। খারাইক্যয়ং নামে বৌদ্ধ বিহারের অবস্থান করে ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করেন। তিনি ভিক্ষুত্ব জীবনের ৬৮ বর্ষা (ওয়া) ছিলেন। আগামী ২১ আগস্ট রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহারের প্রাঙ্গণে পিটিকাবদ্ধ তার মৃতদেহ সংরক্ষণ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ভদন্ত তিক্ষিন্দ্রিয় থের, রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয়  জেতবন বৌদ্ধ বিহারের ভারপ্রাপ্ত বিহারাধ্যক্ষ ও উদযাপন কমিটির সহসভাপতি ভদন্ত পঞঞানন্দ মহাথের, ভঙ্গামূড়া পাড়া বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত সোমা মহাথের, পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদের অধ্যক্ষ ও উদযাপন কমিটির প্রধান সম্পাদক-ভদন্ত ইন্দাচারা মহাথের, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা, রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি চহ্লা মং মারমা, রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মে হ্লা অং মারমা, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ জেলার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :
জনপ্রিয়

আজ খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব বড়দিন

রোয়াংছড়ি ভদন্ত উ: উইচারিন্দা মহাথেরোর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ২৯ মার্চ।

প্রকাশিত: ০৪:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪
print news

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার ও রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ও ষষ্ঠতম সংঘরাজ ভদন্ত উ: উইচারিন্দা মহাথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আগামী ২৯ ও ৩০ মার্চ দুইদিন ব্যাপী রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বিহার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।

আজ (২৬ মার্চ) সকাল ১০ টায় বিহার প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উদযাপন কমিটি।

গত ১৭ আগষ্ট ২০২৩ইং তারিখ বেলা ৩ টা নাগাদ সর্বোচ্চ ধর্নীয় মহাগুরু প্রয়াণের খবর ছড়িয়ে পড়লে শোকাঞ্জলি জানাতে হাজারো ধর্মীয় অনুসারীদের ঢল নামে।

সংঘরাজের প্রয়াণের খবর পেয়ে বান্দরবান পাবর্ত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা উপস্থিত হয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেছেন। মহাপ্রয়াণেকালে সংঘরাজের বয়স ৯১ বছর।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উদযাপন কমিটি জানান, অনুষ্ঠানটি ২৯ ও ৩০ দুইদিনব্যাপী হবে। এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রয়াত ভান্তের প্রতি অন্তিম শ্রদ্ধাস্বরুপ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ১৭টি দলগত সইং নৃত্য,  এয়ইং নৃত্য ১৩টি অংশগ্রহণ করবে।

কমিটি আরো জানান, দুইদিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনিক ভাবে সহযোগীতার পাশাপাশি পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করবেন। অনুষ্ঠানে রাতে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী জাইক্ ও পাংখু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান কমিটি।

অনুষ্ঠানে তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশের অন্যান্য স্থান থেকেও লাখো পূণ্যার্থী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন বলে প্রত্যাশা করছেন উদযাপন কমিটি।

সূত্রে জানা যায়, প্রয়াত ভান্তে রোয়াংছড়ি পাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা পিতা মৃত উসাজাই মারমা ও মাতা মৃত ড. মাথুই মারমার ৫ সন্তানের মধ‍্যে ও তিনি হলেন চতুর্থ সন্তান। বড় ভাই উচিংথোয়াই মারমা, মেজো ভাই গংব্রা মারমা, সেজো ভাই মংহ্লাচিং মারমা, মংম্রা মারমা (সংঘরাজ), বোন মাসংচিং মারমা।

মংম্রা মারমার ১৯৩৩ সালে রোয়াংছড়ি পাড়ায় জন্ম হয়। ১৯৪৮ সালের ১৫ বছর বয়সে শ্রমণ বা প্রব্রজ্জ্যা গ্রহণ করেন। ১৯৫৫ সালের ২২ বছর বয়সে ব্রহ্ম চর্চা ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বুদ্ধ শাসনে (বৌদ্ধ ভিক্ষু) উপসম্পদা লাভ করেন। প্রব্রজিত হওয়ার ধর্মীয় উচ্চ শিক্ষা লাভে মায়ানমার রাইংগুন শহরে গমণ করেন। খারাইক্যয়ং নামে বৌদ্ধ বিহারের অবস্থান করে ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করেন। তিনি ভিক্ষুত্ব জীবনের ৬৮ বর্ষা (ওয়া) ছিলেন। আগামী ২১ আগস্ট রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহারের প্রাঙ্গণে পিটিকাবদ্ধ তার মৃতদেহ সংরক্ষণ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ভদন্ত তিক্ষিন্দ্রিয় থের, রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয়  জেতবন বৌদ্ধ বিহারের ভারপ্রাপ্ত বিহারাধ্যক্ষ ও উদযাপন কমিটির সহসভাপতি ভদন্ত পঞঞানন্দ মহাথের, ভঙ্গামূড়া পাড়া বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত সোমা মহাথের, পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদের অধ্যক্ষ ও উদযাপন কমিটির প্রধান সম্পাদক-ভদন্ত ইন্দাচারা মহাথের, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা, রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি চহ্লা মং মারমা, রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মে হ্লা অং মারমা, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ জেলার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।