নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে কৃষকদের নামে ভুয়া ঋণ বিতরণ দেখিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। অসহায় পরিবারের ভুক্তভোগী কৃষকরা ব্যাংকের সামনে প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে।
রবিবার (১৪ জানুয়ারী) সকাল ১১ ঘটিকায় লংগদু উপজেলা সোনালী ব্যাংক কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে কৃষকরা বলেন, ২০১২ ও ২০১৩ সালের দিকে স্থানীয় হেলাল উদ্দিন, সেলিম মিয়া, আবুল কালাম (মিস্টি কালাম) সহ আরোও বেশ কয়েকজন দালাল চক্র সরকারি অনুদান দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার ৪নং বগাচতর, ৫নং ভাসান্যাদম ও ৬নং মাইনীমুখ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে সহজ সরল দরিদ্র কৃষকদের কাছ থেকে এনআইডি কার্ডের (জাতীয় পরিচয়পত্র) ফটোকপি ও ছবি সংগ্রহ করেন। এরপর এই দরিদ্র কৃষকদেরকে স্বল্প লাভে ব্যাংক ঋণ দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষর নেয়। যা অক্ষরজ্ঞানহীন দরিদ্র কৃষকরা বুঝতে পারেনি। পরে কোনো কোনো কৃষককে পাঁচশ বা এক হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করে দালাল চক্র। বিনিময়ে কৃষকদের নামে ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ বরাদ্ধ নিয়ে হাতিয়ে নেয অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তা ও দালাল চক্ররা ।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী কৃষকগন বলেন, ঘটনার প্রায় ১০ থেকে ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও কিছু দিন ধরে আমরা ঋণের বিষয়টি জানতে পারি। সম্প্রতি আমাদের নামে ঋণ খেলাপী নোটিশ জারি করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তবে আমাদের নামে যে ভুয়া ঋণ হয়েছে তার বড় প্রমাণ আমাদের এনআইডি কার্ড জালিয়াতি করা হয়েছে। কার্ডে উল্লেখিত নাম, জন্ম তারিখ, পিতা ও মাতার নামের অংশ ঠিক রেখে পেছনের ঠিকানার অংশটি পরিবর্তন করে মাইনীমূখ ইউনিয়নের সোনাই এলাকার করা হয়েছে। যেটা আমাদের সঠিক ঠিকানা না। এভাবেই সবার সাথে প্রতারণা করে ঋণের ফাঁদে ফেলা হয়েছে।
এবিষয়ে কৃষকরা মানববন্ধনে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, আমাদের এলাকার দুইশত আঠার জনের নামে এই ভূয়া ঋণের তালিকা পেয়েছি। যারা কেউ এই ঋণ গ্রহন করে নাই। এখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নানাভাবে আমাদের ঋণ পরিশোধের চাপ দিচ্ছে। কারো একাউন্টে স্বজনরা টাকা পাঠালে সেখান থেকে ঋণের টাকা কেটে রেখে দেয়। আমরা এর একটা সুষ্ঠু সমাধান চাই এবং এই দূর্নীতির সাথে যারা জড়িত তাদের উপযুক্ত বিচার প্রার্থনা করছি।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক লংগদু শাখার ব্যবস্থাপক মোঃ আবুল কাশেমের নিকট জানতে চাইলে তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানান।
লংগদু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল বারেক সরকার বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তা দালাল চক্র মিলে এই আর্থিক অনিয়ম করেছে। এই ঋণের বোঝা দরিদ্র কৃষকদের পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব না। এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। আশা করছি কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত করে এর সুষ্ঠু সমাধান করবেন।
মন্তব্য করুন