বিশেষ প্রতিনিধি, খাগড়াছড়িঃ
দীর্ঘ সময়ের আলোচনা ও বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে পুনর্গঠন করা হয়েছে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদ। নবনিযুক্ত অন্তর্বর্তী পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন জিরুনা ত্রিপুরা। যা খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের ইতিহাসে প্রথম নারী নেতৃত্ব।
গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব তাসলিমা বেগম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। নতুন অন্তর্বর্তী পরিষদে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মোট ১৪ জন সদস্যকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, পরিষদের বিদায়ী কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে রাজনৈতিক নিয়োগের বাইরে এবারই প্রথম সম্পূর্ণ নতুন মুখ নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদ গঠন করা হলো। পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা হলেন: বঙ্গমিত্র চাকমা, অনিময় চাকমা, নিটোল মনি চাকমা, কংজপ্রু মারমা, কুমার সুইচিংপ্রু সাইন, সাথোয়াই প্রু চৌধুরী, ধনেশ্বর ত্রিপুরা, শেফালিকা ত্রিপুরা, প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা, মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, আবদুল লতিফ, মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম, জয়া ত্রিপুরা এবং অ্যাডভোকেট মনজিলা সুলতানা।
প্রজ্ঞাপন সূত্রে আরও জানা যায়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ (১৯৮৯) এবং সংশোধিত আইন (১৯৯৭ এবং ২০১৪) এর ক্ষমতাবলে এই নতুন অন্তর্বর্তী পরিষদ গঠন করা হয়েছে। নবগঠিত পরিষদের বিষয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি নয়ন ত্রিপুরা তার সামাজিক মাধ্যমে নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “আশা করি নতুন নেতৃত্ব খাগড়াছড়ির জনগণ ও ছাত্র সমাজকে অতীতের মতো হতাশ করবে না।” তবে, সাংবাদিক সমির মল্লিক তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, “এই পরিষদ নিয়ে জেলাবাসী কি করবে? এর চেয়ে ‘কলাগাছ চেয়ারম্যান’ ভালো ছিল।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধন কিশোর ত্রিপুরা মন্তব্য করেছেন, “জয়া ত্রিপুরা একজন দক্ষ নারী প্রতিনিধি। তিনি তৃণমূল থেকে নিজের প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব তৈরি করেছেন।” অন্যদিকে এনজিও কর্মী অমল বিকাশ ত্রিপুরা নতুন নেতৃত্বকে নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। পরিষদ পুনর্গঠনে জনমনে আশা ও হতাশার মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে খাগড়াছড়ির উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে পরিষদ কতটা সফল হবে, তা নিয়ে রয়েছে ব্যাপক কৌতূহল।