আগামী ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জনের আহ্নবানের মাধ্যমে র্যালি, আলোচনা সভা, দলীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদ নেতাকর্মীদের স্মরণ, মতবিনিময় সভার মধ্যে দিয়ে পালিত হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিভ ফ্রন্ট (ইউপিডিএফে)-র রজত জয়ন্তী (২৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী)।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়িতে রালি অনুষ্ঠিত হয়।
সহস্রাদিক শিশু, কিশোর—কিশোরী অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে র্যালিটি পানছড়ি সদরের এলাকায় পুরোনা থেকে শুরু হয়ে পানছড়ি কলেজ মাঠে গিয়ে শেষ হয়।
এছাড়া খাগড়াছড়ি জেলা সদর, মানিকছড়ি উপজেলা সদর, রাঙামাটির কুদুকছড়ি, নানিয়ারচরে র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা, পানছড়ি, গুইমারা, রামগড়, মানিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি; রাঙামাটি জেলার কুদুকছড়ি, কাউখালী, বাঘাইছড়িসহ বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সভা, পতাকা উত্তোলন, অস্থায়ী শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
২৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সভাপতি প্রসিত খীসা পার্টির কর্মী, সমর্থক ও জনগণের উদ্দেশ্যে দেয়া এক বার্তায় বলেন, ‘জেল জুলুম, মামলা হুলিয়া, ষড়যন্ত্র অপপ্রচার, গুপ্ত হামলা হত্যা এক কথায় অবর্ণনীয় দমন পীড়ন মোকাবিলা করে ইউপিডিএফ ২৫ বছর ধরে অবিচলভাবে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই সংগ্রাম জারি রেখেছে। এ সংগ্রামে কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের বেশ ক’জন সম্ভাবনাময় প্রতিশ্রুতিশীল সংগঠক নেতাকর্মীসহ ৩৫৬ জন আত্মবলি দিয়েছেন।’
‘পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা ইউপিডিএফ বরদাস্ত করবে না’ মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে অতীতে বিভিন্ন সময়ে দালাল (‘দুলো’) বেঈমান আবির্ভূত হলেও সন্তু লারমার মতো কেউ এত ধূর্ততার সাথে আঁতাত করে নিরাপত্তা বাহিনী শাসকগোষ্ঠীর নীলনক্সা বাস্তবায়নে পারদর্শিতা দেখাতে পারেনি।
পার্টির ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে নির্বাচন সংক্রান্ত নবর্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়। এতে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে জনগণের ওপর সর্বত্র নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ, নিপীড়ন ও খবরদারী বিরাজমান, যেখানে ন্যুনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই, বরং নিরাপত্তা বাহিনী ও পোষ্য খুনীদের উৎপাতে জনজীবন বিপযস্ত এবং যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক কাযক্রম চালাতে দেয়া হচ্ছে না, সেখানে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। গত ১১ ডিসেম্বর পানছড়িতে ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী দিয়ে চার ইউপিডিএফ নেতাকে হত্যার মাধ্যমে এই কথার সত্যতা আবার প্রমাণিত হয়েছে। শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম নয়, সারা দেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোন পরিবেশ নেই। তাই প্রধান বিরোধী দলসহ গণতন্ত্রমনা সকল দল এই নির্বাচন বর্জন করছে।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ইউপিডিএফ ৭টি দাবী উত্থাপন করেন প্রসিত বিকাশ খীসা। এগুলো হল আগামী ৭ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করা, ভোটদানে বিরত থাকা ও ভোট কেন্দ্রে না যাওয়া, কোন প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ না করা, অন্যকে ভোট দানে বিরত থাকা, গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করা।