Dhaka , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মধুপুরে মদের সম্রাট শাহিনের স্ত্রী লিজু পুলিশের হাতে গ্রেফতার

print news

 

বিশেষ প্রতিবেদক, টাঙ্গাইলঃ

অবৈধ ব্যবসায় রাজকীয় জীবন যাপন, হয়েছেন লাখ লাখ টাকার মালিক, ক্রয় করেছেন কয়েক একর জায়গা জমি। একসময় অভাবের তাড়নায় পৈত্রিক সম্পত্তি গুলো অন্যের কাছে বন্ধক রাখলেও সেগুলো ছাড়িয়ে নিয়েছে। বৈধ কোন আয় রোজগার না থাকলেও চালচলন যেন রাজার মতো ! কয়েক বছর ধরে নির্বিঘ্নে অবৈধভাবে চালিয়ে আসছে চোলাই মদের ব্যবসা !

বলছিলাম টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার ফুলবাগচালা ইউনিয়নের থানারবাইদ (বানরিয়া) গ্রামের শাহীন রেমার কথা। দীর্ঘদিন যাবত প্রকাশে চোলাই মদসহ ইন্ডিয়ান বোতল এবং কাঁচা মদ বিক্রি করে আসছিলো শাহিন রেমার পরিবার। অবৈধ মাদক ব্যবসার কারণে এলাকার জনজীবন ছিল অতিষ্ঠ। শাহিনের মদের ব্যবসা এতটাই বিস্তৃত ছিল যে, টাঙ্গাইলের উপজেলা গুলো ছাড়িয়ে শেরপুর, জামালপুর, ময়মনসিংহ সহ আশপাশের জেলা উপজেলায় ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

ঐ সকল জেলা উপজেলা থেকে বিভিন্ন বয়সি লোক এসে মদের আসর বসাতো, ঈদ পূজা ঐসব উৎসব গুলোতে যেন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যেতে ! এই নিয়ে মাঝে মধ্যেই গ্রামের এবং এলাকার লোকজনের সাথে বাক বিতন্ডা হতো প্রায়ই।

এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, যুবসমাজ ধ্বংস হওয়া থেকে শুরু করে শান্তি যেন হাড়াতে বসেছিল। এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন বয়সের লোকজন এসে এখান থেকে মদ নিয়ে যেতো। শাহিনের বাড়িতে আগে একটু ঘুরে আসতে হতো, আসা যাওয়া সহজ করার জন্য নিজের খরচে শর্টকাট রাস্তাও বানানো হয় ! আশপাশের গ্রামের পরিবেশ এতোটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, এলাকার লোকজন মধুপুর প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনোই প্রতিকার পাচ্ছিলেন অজানা কারণে। আদিবাসী বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। যার কারণে পরিবেশ দিন দিন আরো খারাপ থেকে খারাপের দিকে যাচ্ছিল। এরই মধ্যে গোপন সংবাদ এবং এলাকার অভিযোগের ভিত্তিতে মুক্তাগাছার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান (এপিবিএন) এসে অভিযান চালালে শাহিনকে না পেয়ে তার স্ত্রী লিজু মৃ’কে চোলাই মদসহ এবং মদ তৈরির সরঞ্জামসহ গ্রেফতার করে। যখন গ্রেফতার করে তখনও মদ কারখানায় মদ তৈরির চলছিল, সেগুলো শাহিন রেমার উঠোনেই ধ্বংস করে এবং ঢেলে ফেলে দেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা অভিযানের পর মধুপুর থানায় হস্তান্তর করে।

মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান হয়েছে শুনে এলাকায় লোকজন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এবং প্রসাশনকে ধন্যবাদ জানায়। বেশ অনেক বছর যাবত শাহিন রেমা এবং তার পরিবার প্রকাশেই কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ঐ অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। তারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল যে এলাকার মানুষ সমাজের লোকজন এবং ধর্মীয় ভাবে নিষেধাজ্ঞা করলেও কোনভাবেই পরোয়া করেনি।

এপিবিএন গ্রেফতার করার পর মধুপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পুলিশ আজ টাঙ্গাইল মহামান্য আদালতে প্রেরণ করলে সেখান থেকে জামিন নামমঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Chtbarta

জনপ্রিয়

মানিকছড়ি সদর ইউনিয়নে কৃষক সমাবেশ

মধুপুরে মদের সম্রাট শাহিনের স্ত্রী লিজু পুলিশের হাতে গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
print news

 

বিশেষ প্রতিবেদক, টাঙ্গাইলঃ

অবৈধ ব্যবসায় রাজকীয় জীবন যাপন, হয়েছেন লাখ লাখ টাকার মালিক, ক্রয় করেছেন কয়েক একর জায়গা জমি। একসময় অভাবের তাড়নায় পৈত্রিক সম্পত্তি গুলো অন্যের কাছে বন্ধক রাখলেও সেগুলো ছাড়িয়ে নিয়েছে। বৈধ কোন আয় রোজগার না থাকলেও চালচলন যেন রাজার মতো ! কয়েক বছর ধরে নির্বিঘ্নে অবৈধভাবে চালিয়ে আসছে চোলাই মদের ব্যবসা !

বলছিলাম টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার ফুলবাগচালা ইউনিয়নের থানারবাইদ (বানরিয়া) গ্রামের শাহীন রেমার কথা। দীর্ঘদিন যাবত প্রকাশে চোলাই মদসহ ইন্ডিয়ান বোতল এবং কাঁচা মদ বিক্রি করে আসছিলো শাহিন রেমার পরিবার। অবৈধ মাদক ব্যবসার কারণে এলাকার জনজীবন ছিল অতিষ্ঠ। শাহিনের মদের ব্যবসা এতটাই বিস্তৃত ছিল যে, টাঙ্গাইলের উপজেলা গুলো ছাড়িয়ে শেরপুর, জামালপুর, ময়মনসিংহ সহ আশপাশের জেলা উপজেলায় ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

ঐ সকল জেলা উপজেলা থেকে বিভিন্ন বয়সি লোক এসে মদের আসর বসাতো, ঈদ পূজা ঐসব উৎসব গুলোতে যেন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যেতে ! এই নিয়ে মাঝে মধ্যেই গ্রামের এবং এলাকার লোকজনের সাথে বাক বিতন্ডা হতো প্রায়ই।

এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, যুবসমাজ ধ্বংস হওয়া থেকে শুরু করে শান্তি যেন হাড়াতে বসেছিল। এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন বয়সের লোকজন এসে এখান থেকে মদ নিয়ে যেতো। শাহিনের বাড়িতে আগে একটু ঘুরে আসতে হতো, আসা যাওয়া সহজ করার জন্য নিজের খরচে শর্টকাট রাস্তাও বানানো হয় ! আশপাশের গ্রামের পরিবেশ এতোটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, এলাকার লোকজন মধুপুর প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনোই প্রতিকার পাচ্ছিলেন অজানা কারণে। আদিবাসী বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। যার কারণে পরিবেশ দিন দিন আরো খারাপ থেকে খারাপের দিকে যাচ্ছিল। এরই মধ্যে গোপন সংবাদ এবং এলাকার অভিযোগের ভিত্তিতে মুক্তাগাছার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান (এপিবিএন) এসে অভিযান চালালে শাহিনকে না পেয়ে তার স্ত্রী লিজু মৃ’কে চোলাই মদসহ এবং মদ তৈরির সরঞ্জামসহ গ্রেফতার করে। যখন গ্রেফতার করে তখনও মদ কারখানায় মদ তৈরির চলছিল, সেগুলো শাহিন রেমার উঠোনেই ধ্বংস করে এবং ঢেলে ফেলে দেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা অভিযানের পর মধুপুর থানায় হস্তান্তর করে।

মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান হয়েছে শুনে এলাকায় লোকজন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এবং প্রসাশনকে ধন্যবাদ জানায়। বেশ অনেক বছর যাবত শাহিন রেমা এবং তার পরিবার প্রকাশেই কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ঐ অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। তারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল যে এলাকার মানুষ সমাজের লোকজন এবং ধর্মীয় ভাবে নিষেধাজ্ঞা করলেও কোনভাবেই পরোয়া করেনি।

এপিবিএন গ্রেফতার করার পর মধুপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পুলিশ আজ টাঙ্গাইল মহামান্য আদালতে প্রেরণ করলে সেখান থেকে জামিন নামমঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।