রিপন ওঝা,মহালছড়িঃ
খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়িতে “শিক্ষা সংস্কৃতি উন্নয়ন” প্রতিপাদ্য আজ থলিপাড়া ধর্মচক্র বৌদ্ধ মন্দির প্রাঙ্গনে ১৫ মার্চ ২০২৪ শুক্রবার মারমা উন্নয়ন সংসদ’র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মারমা উন্নয়ন সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মংপ্রু চৌধুরী। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে হেডম্যান কালাচান চৌধুরী, মমং মারমা, উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুইনুচিং চৌধুরী, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ সদস্য ক্যাজরী মারমা, অংগ্যাজাই মারমা, সিন্দুকছড়ি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সুইনপ্রু চৌধুরী, সাংবাদিক চিংমেপ্রু মারমা, সাউপ্রু মারমা, নিয়ং মারমা, উগ্যজাই মারমা, মহালছড়ি বাজার চৌধুরী মংসুইপ্রু চৌধুরী।
উক্ত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে মংনুপ্রু মার্মা’র সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মারমা উন্নয়ন সংসদ, মহালছড়ি উপজেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিটু মারমা, বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রমের উপরে রিপোর্ট উপস্থাপন করেন কংজরী মারমা এবং মারমা উন্নয়ন সংসদ মহালছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি হ্লাশিং মং চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।
বক্তারা বলেন, মারমা গোষ্ঠীরা সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত। এই পার্বত্য জেলা সমূহে বসবাসরত আদিবাসীদের নৃ-তাত্ত্বিক ইতিহাস অতি সুপ্রাচীনকালের। চিরাচারিত ঐতিহ্য লালিত তেমনি বর্ণিল ও নান্দনিক। তাদের বর্ণিল সামাজিক ও সংস্কৃতি জীবন ধারা খুবই সুন্দর ও দর্শনীয়। এ সমস্ত সামাজিক ও সংস্কৃতির জীবন ধারা জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে এই তিনটি সূত্রে চির গাথা। সামাজিক ও সাংস্কতিক জীবন ধারা অতি সুপ্রাচীন, বৈচিত্র্যপুর্ণ এবং আকর্ষণীয়। মারমাদের নিজেদের ধর্ম, স্বভাষা, বর্ণমালা, সংস্কৃতি, সমাজ ও সামাজিক বিচার ব্যবস্থা রয়েছে। মারমা সম্প্রদায়ের নিজেদের ভাষা, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখতে সরকার প্রদত্ত সকল সুযোগ সুবিধা ও যথাযথ উন্নয়ন প্রশিক্ষণ নিয়ে তিন পার্বত্য জেলা ও সারাদেশে নিজেদের জাতির উন্নয়নসহ স্ব-সংস্কৃতির সেতুবন্ধন আর এই সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের দায়িত্ব। মারমারা অত্যন্ত পরোপকারি এবং অতিথি পরায়ন। মারমা এলাকায় পথচারী বা পথিকদের জন্য রাস্তার পাশে ছোট্র মাচাং ঘরে খাবার পানি ভর্তি কলসি রেখে দেয়। মারমা ভাষায় একে রিফংজাং এবং বাংলা ভাষায় জল টঙ্গি বলা হয়। তাদের ঘরে নবজাতকের জন্ম হলে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে তারা আনন্দ ফুর্তি করে। তারা ধর্মীয় রীতিনীতিতে মৃতদেহ আগুনে পোড়ায়।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করা হয়। প্রসঙ্গত যে, এই মারমা উন্নয়ন সংসদ চাবাই মগ’র ঐকান্তিক প্রচেষ্টার খাগড়াছড়িতে ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্টানে সকল ইউনিয়ন হতে আগত কমিটির সদস্য/সদস্যাগণ উপস্থিত ছিলেন।