Dhaka , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

থানচিতে বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু হাইমংসিং মারমা, অসহায় পরিবার

print news

 

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধিঃ

 

বান্দরবানে থানচিতে বিরল রোগে আক্রান্ত হাইমংসিং মারমা নামে দশ বছর বয়সী এক শিশু। টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না অসহায় পরিবার। বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুটি থানচি সদরে আপ্রুমং পাড়া বাসিন্দা হ্লামংচিং মারমা এর ছেলে। তাঁর বাড়ির পাশেই একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলে লেখাপড়া করে সে। শিশু হাইমংসিং মারমা গ্রামের অন্য আট-দশটি শিশুর মতোই খেলাধুলা করতো।

 

কিন্তু সে প্রথমে বুঝতে পারেনি, তার শরীরে অদৃশ্য এক রোগ বাসা বেঁধেছে। তার পিঠে তৈলাক্ত মাংসের জমাট ফোলে ছোট থেকে বড় আকারে দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। মেরুদণ্ডও বেঁকে গেছে। তবে বর্তমানে সে বুঝতে পারে যে, তার বিরল এক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যখনই খেলা কিংবা হাটতে গেলে ব্যাথা অনুভব করতে পেরে বলে বাবা আমায় চিকিৎসা সেবা দাও!

 

শিশুটির জন্মগতভাবে শরীরের চামড়া কালো দাগ রয়েছে। জন্মের পর ২ বছরে শিশুর পিঠে তৈলাক্ত মাংসের মতো ছোট আকারে জমাট হতে শুরু করেছিল। প্রথম দিকে শিশুর শরীরের তৈলাক্ত মাংসের না বাড়ঁলেও ৯ বছর বয়সে এসে বাড়ঁতে শুরু করেছে। সেটি এখন বড় আকার ধারণ করে মেরুদণ্ড হাঁড় পর্যন্ত বেঁকে হাটতে ও শরীর বহনে অযোগ্য হয়েছে প্রায়। তাঁর বাবা সংসারে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না শিশুটির পরিবার।

 

প্রতিবেশীরা জানান, হাইমংসিং মারমা বিরল এক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সে ছোট থাকতে তৈলাক্ত মাংস জমাট ছিল না, কিন্তু শরীরের চামড়া কালো দাগ ছিল জন্মগতভাবে। চিকিৎসা সেবা নিতে শিশুর পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে।

 

এদিকে শিশুর বাবা হ্লামংচিং মারমা বলেন, আমার ছেলে বিরল এক রোগে কাবুতে খুবই কষ্টের দিন কাটছে। শিশুর পিঠে তৈলাক্ত মাংসের জমাট ছোট হতে বড় আকারে ধারণ করেছে, টাকার অভাবে চিকিৎসা সেবা নিতে পারছি না, ছেলে’র চিকিৎসার জন্য দেশের সরকারি-বেসরকারি ও এনজিও এবং মানবিক সংস্থারসহ জনপ্রতিনিধিদের সকলে কাছে আর্থিক সহযোগিতা চান তিনি।

 

বিরল রোগে আক্রান্তে শিশুর মা নুমেসিং বলেন, আমার ছেলে জন্মগতভাবে শরীরের চামড়া কালো দাগ ছিল, কিন্তু রকশক্ত বা তৈলাক্ত মাংসের জমাট ছিল না। প্রায় ২ বছরে মাথায় পিঠে ছোট ছোট শক্তরক মতো জমাট শুরু করে, মাঝখানে কয়েক বছর ভাল হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন পরে অর্থাৎ ৯ বছরে এসে ছোট থেকে বড় হতে শুরু হয়। সেটি চলতি বছরের ছোট জমাট তৈলাক্ত মাংসের বড় আকারে ধারণ করে মেরুদণ্ড হাঁড় পর্যন্ত বেঁকে গেছে।

 

এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে শিশুটি মা। তিনি আরো বলেন, আমার ছেলে বিরল এক রোগে আক্রান্ত, সংসারে টাকার অভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণে ছেলে’র চিকিৎসার সেবা দিতে পারিনি। আমার একমাত্র ছেলে কি করে বিরল রোগ হতে মুক্তি পাবো?

 

এদিকে শিশুর বড় চাচা (পাড়া প্রধান) উহ্লাঅং মারমা বলেন, শিশুর শরীরের তৈলাক্ত মাংসের জমাট ও মেরুদণ্ড হাঁড় বেঁকে যাওয়ায় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে অসহায় পরিবার, শিশুকে নিয়ে মালুঘাটসহ চট্টগ্রামে বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরছি। বর্তমান শিশু অবস্থা জানতে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে নম্বর হচ্ছে- 01818285372

 

তিনি আরো বলেন, বিরল রোগ হওয়ায় মালুঘাটসহ চট্টগ্রামে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার করতে পারছি না। তবে চট্টগ্রামে এভারকেয়ার বেসরকারি হাসপাতালে রির্পোট এর অপেক্ষায় আছি, রাতে বিস্তারিত জানা যাবে। অসহায় পরিবারের পাশে থেকে মানবিকতার সকলে আর্থিকভাবে সহযোগিতায় আবারও শিশুটি সু-চিকিৎসার পেলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আসতে পারে বলে জানান তিনি।

 

চলতি মাসের বান্দরবান ইমানুয়েল মেডিকেল সেন্টারে (জেনারেল সার্জারী বিশেষজ্ঞ) ডঃ উ থেন ক্য চেম্বারে দেখাতে তিনি বলেন, শিশুটি বিরল এক রোগে আক্রান্ত, ব্যায়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদী এই চিকিৎসার। তবে গরীর বাবা-মায়ের পক্ষে শিশুটির চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই বিরল রোগের চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে যোগাযোগ স্থাপনে পরামর্শও দেন তিনি।

 

Tag :
লেখক তথ্য সম্পর্কে

Chtbarta

জনপ্রিয়

ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগের সকল হত্যার বিচার করা হবে — গাইবান্ধায় ড. শফিকুর রহমান

থানচিতে বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু হাইমংসিং মারমা, অসহায় পরিবার

প্রকাশিত: ০২:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
print news

 

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধিঃ

 

বান্দরবানে থানচিতে বিরল রোগে আক্রান্ত হাইমংসিং মারমা নামে দশ বছর বয়সী এক শিশু। টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না অসহায় পরিবার। বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুটি থানচি সদরে আপ্রুমং পাড়া বাসিন্দা হ্লামংচিং মারমা এর ছেলে। তাঁর বাড়ির পাশেই একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলে লেখাপড়া করে সে। শিশু হাইমংসিং মারমা গ্রামের অন্য আট-দশটি শিশুর মতোই খেলাধুলা করতো।

 

কিন্তু সে প্রথমে বুঝতে পারেনি, তার শরীরে অদৃশ্য এক রোগ বাসা বেঁধেছে। তার পিঠে তৈলাক্ত মাংসের জমাট ফোলে ছোট থেকে বড় আকারে দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। মেরুদণ্ডও বেঁকে গেছে। তবে বর্তমানে সে বুঝতে পারে যে, তার বিরল এক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যখনই খেলা কিংবা হাটতে গেলে ব্যাথা অনুভব করতে পেরে বলে বাবা আমায় চিকিৎসা সেবা দাও!

 

শিশুটির জন্মগতভাবে শরীরের চামড়া কালো দাগ রয়েছে। জন্মের পর ২ বছরে শিশুর পিঠে তৈলাক্ত মাংসের মতো ছোট আকারে জমাট হতে শুরু করেছিল। প্রথম দিকে শিশুর শরীরের তৈলাক্ত মাংসের না বাড়ঁলেও ৯ বছর বয়সে এসে বাড়ঁতে শুরু করেছে। সেটি এখন বড় আকার ধারণ করে মেরুদণ্ড হাঁড় পর্যন্ত বেঁকে হাটতে ও শরীর বহনে অযোগ্য হয়েছে প্রায়। তাঁর বাবা সংসারে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না শিশুটির পরিবার।

 

প্রতিবেশীরা জানান, হাইমংসিং মারমা বিরল এক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সে ছোট থাকতে তৈলাক্ত মাংস জমাট ছিল না, কিন্তু শরীরের চামড়া কালো দাগ ছিল জন্মগতভাবে। চিকিৎসা সেবা নিতে শিশুর পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে।

 

এদিকে শিশুর বাবা হ্লামংচিং মারমা বলেন, আমার ছেলে বিরল এক রোগে কাবুতে খুবই কষ্টের দিন কাটছে। শিশুর পিঠে তৈলাক্ত মাংসের জমাট ছোট হতে বড় আকারে ধারণ করেছে, টাকার অভাবে চিকিৎসা সেবা নিতে পারছি না, ছেলে’র চিকিৎসার জন্য দেশের সরকারি-বেসরকারি ও এনজিও এবং মানবিক সংস্থারসহ জনপ্রতিনিধিদের সকলে কাছে আর্থিক সহযোগিতা চান তিনি।

 

বিরল রোগে আক্রান্তে শিশুর মা নুমেসিং বলেন, আমার ছেলে জন্মগতভাবে শরীরের চামড়া কালো দাগ ছিল, কিন্তু রকশক্ত বা তৈলাক্ত মাংসের জমাট ছিল না। প্রায় ২ বছরে মাথায় পিঠে ছোট ছোট শক্তরক মতো জমাট শুরু করে, মাঝখানে কয়েক বছর ভাল হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন পরে অর্থাৎ ৯ বছরে এসে ছোট থেকে বড় হতে শুরু হয়। সেটি চলতি বছরের ছোট জমাট তৈলাক্ত মাংসের বড় আকারে ধারণ করে মেরুদণ্ড হাঁড় পর্যন্ত বেঁকে গেছে।

 

এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে শিশুটি মা। তিনি আরো বলেন, আমার ছেলে বিরল এক রোগে আক্রান্ত, সংসারে টাকার অভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণে ছেলে’র চিকিৎসার সেবা দিতে পারিনি। আমার একমাত্র ছেলে কি করে বিরল রোগ হতে মুক্তি পাবো?

 

এদিকে শিশুর বড় চাচা (পাড়া প্রধান) উহ্লাঅং মারমা বলেন, শিশুর শরীরের তৈলাক্ত মাংসের জমাট ও মেরুদণ্ড হাঁড় বেঁকে যাওয়ায় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে অসহায় পরিবার, শিশুকে নিয়ে মালুঘাটসহ চট্টগ্রামে বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরছি। বর্তমান শিশু অবস্থা জানতে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে নম্বর হচ্ছে- 01818285372

 

তিনি আরো বলেন, বিরল রোগ হওয়ায় মালুঘাটসহ চট্টগ্রামে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার করতে পারছি না। তবে চট্টগ্রামে এভারকেয়ার বেসরকারি হাসপাতালে রির্পোট এর অপেক্ষায় আছি, রাতে বিস্তারিত জানা যাবে। অসহায় পরিবারের পাশে থেকে মানবিকতার সকলে আর্থিকভাবে সহযোগিতায় আবারও শিশুটি সু-চিকিৎসার পেলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আসতে পারে বলে জানান তিনি।

 

চলতি মাসের বান্দরবান ইমানুয়েল মেডিকেল সেন্টারে (জেনারেল সার্জারী বিশেষজ্ঞ) ডঃ উ থেন ক্য চেম্বারে দেখাতে তিনি বলেন, শিশুটি বিরল এক রোগে আক্রান্ত, ব্যায়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদী এই চিকিৎসার। তবে গরীর বাবা-মায়ের পক্ষে শিশুটির চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই বিরল রোগের চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে যোগাযোগ স্থাপনে পরামর্শও দেন তিনি।