বিলাইছড়ি (রাঙ্গামাটি) প্রাতিনিধিঃ
দীর্ঘ চার মাস সাত দিন পর মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হ্রদ কাপ্তাইয়ে।শনিবার মধ্যরাত (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা থেকে হ্রদে শুরু হবে মাছ শিকার। অনেকদিন বিরতির পর কাজে ফিরছেন মৎস্যজীবী, ব্যবসায়ী ও খাত সংশ্লিষ্টরা। এতে করে তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উচ্ছ্বাস।
এর আগে মাছের বংশবিস্তার বৃদ্ধির জন্য গত ২৫ এপ্রিল থেকে কাপ্তাই হ্রদে তিন মাসের জন্য মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। তবে হ্রদে পানি স্বল্পতার কারণে দুই দফায় নিষেধাজ্ঞার সময় বর্ধিত হয়েছিল আরও এক মাস সাত দিন।
এদিকে হ্রদের মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে জেলেদের পাশাপাশি রাঙামাটির মাছের প্রধান বিপনন কেন্দ্র গুলোতেও চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। হ্রদে মাছ শিকার শেষে রবিবার ভোরে রাঙামাটি প্রধান বিপণন কেন্দ্র ছাড়াও জেলার কাপ্তাই, মারিশ্যা সহ উপকেন্দ্র গুলোতে মাছ নিয়ে আসবেন জেলেরা। এরপর পন্টুনে আসা এসব মাছের শুল্ক হারসহ প্রয়োজনীয় কাজ শেষে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাতকরণ করা হবে।
এ বিষয়ে কাপ্তাই মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি নবী হোসেন জানান, শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার শুরু হতে যাচ্ছে। এতে করে দীর্ঘ চার মাসের বেশির সময় পর কাজে ফিরছেন আমাদের জেলে-ব্যবসায়ীরা। সবার মাঝে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করছি, এ বছর কাপ্তাই হ্রদের মাছের গুনগত মান ভালো হবে।
স্থানীয় জেলে সুমন দাশ, দানু মিয়া, মহরম আলী সহ একাধিক জেলে জানান, আমরা আমাদের বোট, জাল সব রেডি করে রেখেছি। রাতেই হ্রদে জাল ফেলবো আমরা। অনেকদিন পর মাছ ধরা শুরু হতে যাচ্ছে, আমাদের মাঝে স্বস্তি ফিরবে।
কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ইতোমধ্যেই বিএফডিসির পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। রাঙ্গামাটি শহরের প্রধান বিপণন কেন্দ্রসহ অন্যান্য বিপণন কেন্দ্র গুলোর পন্টুন গুলো আগেই প্রস্তুত করা হয়েছে। রবিবার ভোর থেকে পল্টুনে মাছ নিয়ে আসবেন জেলেরা। এরপর এই মাছের শুল্কহার আদায় শেষে বাজারজাত করবেন ব্যবসায়ীরা।
প্রসঙ্গত, হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতসহ জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় করতে প্রতি বছরের ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন।