প্রকাশের সময়: শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫ । ৮:৩১ পিএম প্রিন্ট এর তারিখঃ মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২

পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি’র কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত: সভাপতি মনি চাকমা, সাধারণ সম্পাদিকা আশিকা চাকমা ও সাংগঠনিক সম্পাদিকা সুবিনা চাকমা

অনলাইন ডেস্ক

ছবি- সংগৃহিত

সিএইচটি বার্তা ডেস্ক: 

“সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে ইস্পাত দৃঢ় জুম্ম জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি, জুম্ম জাতির অধিকারের সনদ পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের বৃহত্তর আন্দোলন জোরদার করি” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাঙ্গামাটির আশিকা কনভেনশন হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি’র ১৩তম কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

দিনব্যাপী অনু্ষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা এবং উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির প্রাক্তন সভাপতি মাধবীলতা চাকমা। এছাড়াও অনুষ্টানে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার। সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক শ্যামা চাকমা এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য আশিকা চাকমা।

সম্মেলনের শুরুতে জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যারা আত্মবলীদান করেছেন তাদের স্মরণে ২ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সম্মেলনে বিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি রিতা চাকমা।

উদ্বোধনী অনুষ্টানে মাধবীলতা চাকমা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১১ জুন পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির প্রথম সম্মেলনের দিনগুলো মনে পড়ছে। তৎকালীন সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নারী সমাজের প্রগতিশীল অংশ হিসেবে মহিলা সমিতির সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন এবং সাহসিকতার সাথে সংগ্রামে যুক্ত হন। বর্তমানে মহিলা সমিতির সদস্য সংখ্যা কম হলেও যারা এখনো জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যুক্ত রয়েছেন তাদের প্রতি সংগ্রামী শুভেচ্ছা।

জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা বলেন, শাসকগোষ্ঠী দমন-পীড়ন, মিথ্যা মামলা দিয়ে পার্টিকে স্তব্দ করতে চেয়েছিল। তবে মহিলা সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা কিছুটা ব্যহত হলেও থেমে থাকেনি আত্ননিয়ন্ত্রণ অধিকারকামীরা। পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি সদস্যদেরকে জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে। আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আদায়ে তরুণ যুবকদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান। নবনির্বাচিত কমিটিতে অর্ধেকাংশ তরুণ অংশগ্রহণ করেছে যা আমাদের জন্য অবশ্যই আশাব্যঞ্জক হয়ে উঠবে। সমাজে নেতৃত্ব দেয়ার মতো সাহসিকতার অর্জন করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের লড়াই সংগ্রামে সত্যিকার কর্মীবান্ধব গড়ে উঠতে হবে।

সাবেক এমপি ঊষাতন তালুকদার বলেন, জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন, নারীদের নিরাপত্তা বিপন্ন। সমাজের অর্ধেকাংশ নারী। জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নারী সমাজের কঠোর ভূমিকা রাখতে হবে। নারী সমাজ আন্দোলনমুখী হলে আন্দোলন সফলতা আনবে। এদেশে শাসকগোষ্ঠীদের সঙ্গে ঠিকে থাকতে হলে লড়াইয়ের কোন বিকল্প নেই। নারীদের সমাজে সমমর্যাদা ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় নারী সমাজকে সুসংগঠিত হতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে শ্যামা চাকমা বলেন, নারী সমাজের মুক্তি, নারীদের সমসমর্যাদা, সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় নারীদের লড়াই সংগ্রাম করতে হবে। নারী আন্দোলনে সফল হিসেবে সরকার ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিল, আবারো বৃহত্তর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে চুক্তি বাস্তবায়নে বাধ্য করা হবে। গ্রাম থেকে ইউনিয়ন, থানা থেকে জেলা তথা পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জাতীয় ইস্পাত কঠিন সুদৃঢ় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে মহান পার্টির নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের বৃহত্তর আন্দোলন জোরদার করতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সম্মেলনে দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি মনি চাকমা, সাধারণ সম্পাদিকা আশিকা চাকমা ও সাংগঠনিক সম্পাদিকা সুবিনা চাকমাকে নির্বাচিত করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির প্রস্তাবিত ১৪তম কেন্দ্রীয় কমিটি উপস্থাপন করা হয় এবং প্রতিনিধিদের মুহুর্মুহু করতালির মধ্য দিয়ে কমিটি চুড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করান পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার।

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ নিউটন চাকমা, বার্তা প্রধানঃ উথোয়াই চিং মারমা কপিরাইট © সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন