এদিকে স্থানীয়রা জানান, একদল শিশু শিক্ষার্থীদের হঠাৎ করেই ঙাফাখুম, রেমাক্রী জলপ্রপাত ও বৈক্ষ্যং ঝিরি এলাকায় পর্যটকদের ফেলে যাওয়া বিভিন্ন আকার ও নানা রঙের পলিথিন, চিপস-চানাচুরের খালি প্যাকেট, নানা জাতের খালি বোতল এবং পানির খালি বোতল কুড়াতে দেখা যায়। এসব পরিত্যক্ত ময়লা আবর্জনা কুড়িয়ে বস্তার ভরে একটি নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করে তারপর আগুনে ধ্বংস করে দেন তাঁরা।
শিক্ষার্থীদের নিয়ে পর্যটনগুলোতে ক্লিন অভিযানে উদ্দেশ্যমূলক বিষয়ে জানতে চাইলে হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের রোওয়াক্যং শিক্ষা প্রকল্প এর প্রকল্প সমন্বয়ক বিদ্যাপূর্ণ চাকমা বলেন, সকল জীবের বাসস্থান, খাদ্য সংগ্রহের স্থান ও উদ্ভিদের খাদ্য গ্রহণের পথে বাঁধার সৃষ্টি করে প্লাস্টিকের বর্জ্য। শুধুই উদ্ভিদ বা জলজ প্রাণী নয়, মানুষ প্লাস্টিকের দূষণের কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় ভিত্তি হওয়া এখানে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়টি অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা পরিবেশ শিক্ষার্থীদের মনে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। এই ক্লিন অভিযানে মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনে ইতিবাচক সূচক অনেক কাজের দেবে। এটি তাদের চর্চা ও অভ্যাসত্ব’সহ দায়িত্বশীলতা সাথে সমাজ সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এদিকে পর্যটন স্পষ্টগুলোতে ক্লিন অভিযানে শিক্ষার্থীদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে (পরিবেশবাদী যুব সংগঠন) গ্রীন ভয়েস এর পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রধান সমন্বয়ক সাচিনু মারমা বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ, সামাজিক পরিবেশ ও মানসিক পরিবেশ আজ মানুষের দিকে তাকিয়ে আছে। পাহাড়ে পর্যটন শিল্প প্রায় অনেকটা অংশই প্রকৃতি ও পরিবেশের উপর নির্ভরশীল। মানুষ নিষ্ঠুরভাবে প্রকৃতি পরিবেশকে বিনাশ করছে। বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়ে যতটুকু পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠেছে, ততটুকু পরিবেশ সংরক্ষণের সম্ভব হচ্ছে না। প্রকৃতি প্রেমী’সহ সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে প্রকৃতি পরিবেশ রক্ষার সংগঠন ও সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে মাধ্যমে পর্যটন শিল্প সংরক্ষণ ও পরিবেশ সুরক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন সংস্থার প্রতি সাধুবাদ জানিয়ে থানচি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা (পকশৈ) বলেন, পর্যটন স্পটগুলোতে ঘুরতে আসা কিছু কিছু অসচেতন পর্যটক যত্রতত্র পলিথিন, চিপস-চানাচুরের খালি প্যাকেট, পানির বোতল ফেলে যান। স্থানীয় এনজিও সংস্থার শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানে সেগুলো কুড়ানোর পর পুড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা একটি ভালো কাজ করেছেন। এসব সমস্তই ভালো কাজের সকলে এগিয়ে আসা উচিত।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, প্লাস্টিক দ্রব্য, বোতলে যত্রতত্র স্থানে ফেলার কারণে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। নষ্ট হচ্ছে পাহাড়ে জীববৈচিত্র্যও। এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে বর্জ্য অপসারণ করে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এমন অভিযান পরিচালনা করছে সংস্থার।
তিনি আরো বলেন, পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে কার্যক্রম উদ্যোগ নেয়ার হবে। পর্যটন স্পটগুলোতে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতা বৃদ্ধির উচ্ছ্বসিত হলে পরিবেশ সুন্দর ও দূষণমুক্ত থাকবে। এবং পর্যটন শিল্পসহ সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের সকলে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।