হ্লাসিং থোয়াই মারমা; বান্দরবান প্রতিনিধি:
আমের মুকুলের গন্ধে সুবাসিত বান্দরবানের পাহাড়ি অঞ্চল। পাহাড়ে এ বছর মাঘ মাসের আগেই ‘রাংগোওয়ে জাতের আমগাছে উঁকি দিচ্ছে মুকুল। এদিকে গাছে আগাম মুকুল আসায় চাষিদের মাঝেও উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে। বান্দবানের চাষিরা এখন আগাছা পরিষ্কার ও মুকুল ঝরারোধে কীটনাশক স্প্রেসহ নানাভাবে বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তথ্যানুযায়ী, গেল বছরে জেলায় ১০,২৩৯হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। যা উৎপাদিত মাত্রা ছিল১,১২,২৮৫ মেট্রিকটন। চলতি বছরে ১০,৩০০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এ বছরে উৎপাদিত লক্ষ্য মাত্রা ১,২৩,৬০০মেট্রিক টন হতে পারে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার রুমা, রোয়াছড়ি, থানচি ও সদরসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পাহাড়জুড়ে আমের গুটি ও সোনালি মুকুলে ছেয়ে গেছে। প্রতিটি বাগানে পরিচর্যার অংশ হিসেবে নিয়মিত পোকা দমন স্প্রে ও আগাছা পরিষ্কার করা হচ্ছে, যাতে মুকুল থেকে সুন্দরভাবে ফল গঠিত হয়।
জানা যায়, একসময় জুম চাষই ছিল পাহাড়ে মানুষের জীবিকার একমাত্র প্রধান উৎস। কিন্তু এখন জুম চাষের পাশাপাশি অনেকে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন ফলজ বাগান। এরমধ্যে অন্যতম আম বাগান। পাহাড়ে বিভিন্ন ফলজ বাগান গড়ে তুলতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোও কাজ করছে। সার, বীজ, চারা বিতরণের পাশাপাশি বাগান পরিচর্যায় বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন চাষিদের। ফলে অনেকে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ফলজ বাগান করছেন এবং অনেক বাগান চাষি হয়েছেন স্বাবলম্বীও।
গেৎশিমনি পাড়ার জুয়েল বম নামে এক আম চাষি জানান, ২৫ একরজুড়ে গড়ে তুলেছেন আমসহ নানা ফলজ বাগান। এরমধ্যে ৭০ শতাংশই আম বাগান। অন্যান্য বছর জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে আমের মুকুল আসলেও এবার চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুকুল আসায় আমরা খুব খুশি। মুকুল ও গুটি বাঁচাতে পারলে ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি দামও বেশ ভালো পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এম এম শাহনেওয়াজ বলেন, ‘এ বছর জেলায় আমের চাষের জমির পরিমাণ বেড়েছে। আমরা কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, যাতে তারা বাণিজ্যিকভাবে আম চাষে লাভবান হতে পারেন। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবার আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।’
মন্তব্য করুন