প্রিন্স এডওয়ার্ড মাংসাং, মধুপুর (টাঙ্গাইল):
গতকাল শনিবার (১ ফেব্রুয়ারী) ভোরে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা এবং পৌর শহরের সিটি হাসপাতালে মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণবাড়ী গ্রামের মোঃ কাইউমের স্ত্রী চামেলি বেগম নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রসূতির আত্মীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, কোনো প্রকার পরীক্ষা ছাড়াই রোগীকে সিজার করা হয়েছে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে যার কারণেই বাচ্চার মা টি মারা যায়।
আরো অভিযোগ রয়েছে যে, প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে তাড়াহূড়ো করে দেড় ঘণ্টায় দুই ব্যাগ রক্ত দিয়েছে। একইভাবে পর পর চার ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়! এইভাবে রক্ত দেওয়ায় এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই প্রসূতির মৃত্য হয়েছে আত্মীয়দের অভিযোগ। সাধারণ জনগণ আরো অভিযোগ করেন যে, গত বছরও পাশের গ্রামের এক ব্যক্তির নাগরিকের পলিপাশ অপারেশন করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। এইভাবে মাঝে মধ্যেই ডাক্তার এবং কর্তৃপক্ষের অবহেলায় রোগী মারা যাচ্ছে। পরবর্তীতে যৎসামান্য জরিমানা দিয়ে আত্মীয়দের সাথে রফা করা হয়। প্রসূতির আত্মীয়দের আকুল আবেদন প্রশাসনের প্রতিও অনুরোধ করেন এ-ই সকল অনুমোদনহীন হাসপাতালের অনিয়ম দূর্নীতি গুলো যেন গুরুত্বের সাথে দেখেন। এইভাবে কোনো শিশুকে যেন জন্মের পরই মা হারা না হতে হয়।
চামেলির কয়েকজন স্বজনরা জানান, শুক্রবার ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের গাইনী বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডাক্তার কোহিনূর বেগম এবং ঘাটাইল উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ও এ্যানেসথেসিস্ট শহিদুল ইসলাম (খোকন) মিলে চামেলির সিজার করেন। এরপরই প্রসূতির অবস্থার অবনতি হতে থাকে। কারণ তার রক্ত বন্ধ হচ্ছিল না। শাসকষ্টে তিনি কাহিল হয়ে পড়েন। এই অবস্থায় রাতেই তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা নেন। যাওয়ার পথে মুক্তাগাছার রসূলপুর যেতেই নিস্তেজ হয়ে পড়ে এবং মুক্তাগাছা যাওয়ার আগেই মারা যায়। তবুও সান্তনার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়। চামেলির ফুটফুটে সুন্দর মেয়ে বাচ্চা হয়েছে, নবজাতক সুস্থ আছে।
গতকাল শনিবার সকালে চামেলির মরদেহ মধুপুর সিটি হাসপাতালে আনা হলে কাইয়ুম ও তার আত্মীয়রা সিজার করার আগে এবং পরে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে চিকিৎসকদের বিচার দাবি করেন। চামেলির পরিবার আরো জানান, চামেলি কিছু রক্ত শূন্যতাও ভুগছিলেন। চিকিৎসককে সেটি অবহিত করাও হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় পরীক্ষানিরীক্ষা ছাড়াই তড়িঘড়ি করে অপারেশন করায় এই দুর্ঘটনা ঘটে ।
ডাঃ কোহিনূরের মোবাইলে বারবার ফোন করলেও উনাকে পাওয়া যায়নি।
ডাক্তার শহিদুল ইসলাম খোকন জানান, তিনি রোগীকে অজ্ঞান করেছেন। অপারেশন করেছেন ডাক্তার কোহিনূর। কি কারণে প্রসূতি মারা গেছেন সেটি তিনিই ভালো বলতে পারবেন।
এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে জানতে গেলে তারা জানায় যে, যা হবার হয়ে গেছে রোগীর অবিভাবকের সাথে আলোচনা করে ২ লাখ টাকা দিয়ে মীমাংসা করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন