নিজস্ব প্রতিনিধি, খাগড়াছড়িঃ
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার মাইসছড়িতে ‘হোপ ফর চিলড্রেন’ এর উদ্যোগে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শিক্ষা উপকরণ বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে মাইসছড়ি কলেজ মাঠে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহালছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় অতিথিরা মাইসছড়ি এলাকার ৩০টি পরিবারের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সেন্ট টিমোটি বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চের ডিকন ফাদার বিমন্ত ত্রিপুরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চের রেভাঃ ফাদার লিটন চাকমা, সহকারি শিক্ষক রঞ্জন মনি ত্রিপুরা এবং হোপ ফর চিলড্রেন মাইসছড়ি প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর সুনীল কান্তি ত্রিপুরা।
প্রধান অতিথি, মহালছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম খান তার বক্তব্যে বলেন, “শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড’’। আমরা যদি আমাদের শিশুদের সঠিক শিক্ষা উপকরণ ও পরিবেশ দিতে পারি, তবে তাদের মাঝে আলোর পথ খুলে দিতে পারবো। ‘হোপ ফর চিলড্রেন’ এর এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমি আশা করি, এই উদ্যোগ ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে এবং আরও বেশি শিক্ষার্থী উপকৃত হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে ফাদার বিমন্ত ত্রিপুরা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে সমাজে অবদান রাখা যায়। আজকে আমাদের এই ছাত্র-ছাত্রীরা ছোট ছোট উপকরণ পেলেও এগুলো তাদের ভবিষ্যত গড়তে সহায়ক হবে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, ‘হোপ ফর চিলড্রেন’ তাদের জন্য এই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে।”
রেভাঃ ফাদার লিটন চাকমা বলেন, “আজকের এই দিবসটি শুধু একটি উপকরণ বিতরণী অনুষ্ঠান নয়, এটি আমাদের সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমাদের প্রত্যেককে শিশুদের জন্য আরও সহায়ক হতে হবে, তাদের শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করতে হবে।”
আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা মাইসছড়ির ২৫০ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে উন্নত মানের শিক্ষা উপকরণ তুলে দেন। শিক্ষার্থীদের হাতে পেন, পেন্সিল, খাতা, ক্যালকুলেটরসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ তুলে দেয়া হয়। এই উপকরণগুলি তাদের পড়াশোনায় সাহায্য করবে এবং তাদের শিক্ষা জীবনকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মাইসছড়ির স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকবৃন্দ। অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শিশুদের শিক্ষার অগ্রগতির জন্য স্থানীয় কমিউনিটি ও হোপ ফর চিলড্রেন এর ব্যাপক অবদানকে গুরুত্ব দেয়া হয়। খাগড়াছড়ি জেলার পার্বত্য অঞ্চলে এই ধরনের আয়োজন এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ ধরনের উদ্যোগ সমাজে শিশু-শিক্ষার প্রতি সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করছে এবং প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি সুযোগ তৈরি করছে। যারা এই উদ্যোগে সহায়তা করছেন, তারা শিশুদের জন্য ভবিষ্যত গড়ার একটি সুন্দর রূপ দেয়ার চেষ্টা করছেন।
স্থানীয়রা বলেন, এমন উদার উদ্যোগ সমাজে নতুন সম্ভাবনা ও সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে। এখানে শুধু মাইসছড়ি নয়, খাগড়াছড়ি জেলার আরো দূরবর্তী অঞ্চলে এই ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হলে পার্বত্য এলাকায় শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রেও বিপ্লব সাধিত হবে।
মন্তব্য করুন