শিরোনাম:

বিলাইছড়িতে জীবন যুদ্ধে জয়ন্তী চাকমা, আয়ের একমাত্র শেষ সম্বল সেলাই মেশিনটি

বিলাইছড়িতে জীবন যুদ্ধে জয়ন্তী চাকমা, আয়ের একমাত্র শেষ সম্বল সেলাই মেশিনটি

 

সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা,

বিলাইছড়ি (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধিঃ

রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার দুমদুম্যা ইউনিয়ন হতে বিলাইছড়ি উপজেলায় জীবিকার তাগিদে জয়ন্তী চাকমা। বিলাইছড়ি বাজারে হাট-বাজার দিনে খোলা আকাশে বট গাছের নীচে সেলাই মেশিন দিয়ে মানুষের কাপড় সেলাই করে যা আয় করে তা দিয়ে সংসার চলে। আয়ের উৎস একমাত্র সেলাই মেশিনটি। স্বামী কৃষি কাজ করতে পারলেও নেই কোনো নিজস্ব জমি। মাছ ধরলে জাল কেনার মতো কোন সামর্থ্য নেই। তাছাড়া নদীতে কিভাবে মাছ ধরে সে অভিজ্ঞতা নেই তার। তেমন ভারী কাজও করতে পারেনা। ২০১৫ সালে বিয়ে হলে সেখান থেকে শুরু হয় জয়ন্তী’র জীবন সংগ্রাম। এই মূহুর্তে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনা খুবই জরুরি।

প্রতি মঙ্গলবার হাট বাজার দিনে বাজারে মানুষের কেনা কাপড় সেলাই করতে দেখা গেলে ক্যামেরা বন্দী হয়ে যায় এই নারী। তার সঙ্গে কথা হলে জানা যায়, সে একজন সিনেমা ফিল্মের যেন নায়িকা সাবানা। কাপড় সেলাই করে সংসার চালায়। সেলাই মেশিনটি তার একমাত্র ভরসা।

তিনি অনলাইন ভিত্তিক সিএইচটি বার্তা ডট কম কে জানান, কর্ম না থাকার কারণে প্রায় ৭-৮ মাস আগে জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে দুর্গম জুরাছড়ির দুমদুম্যা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কান্দারা ছড়া এলাকা হতে বিলাইছড়িতে আসে। সেখানে নেই কোনো জায়গা জমি, নেই কোনো কাজ-কর্মও। বিলাইছড়ি আমতলীতে এসে হেডম্যান, মেম্বার ও পাড়া বাসীর সহযোগিতায় কিছুটা হলে-ও বসবাস করার ঠাঁই হয়েছে। আমতলী হতে প্রতি মঙ্গলবারে নৌকায় করে খুব সকালে বিলাইছড়ি বাজারে গিয়ে মানুষের কেনা লুঙ্গি ও কাপড় সেলাই করে যা রোজগার হয় তা দিয়ে চলে সংসার। নিজস্ব টাকায় কেনা সেই সেলাই মেশিনটিও অনেক পুরানো হয়েছে। নতুন একটা কিনারও সামর্থ্য নেই। গ্রামে অনেকে তাকে ভালোবেসে তার কাছেই সেলাই করতে আছে। বিশ টাকার জায়গায় অনেকে বেশি টাকা দিয়ে থাকে। সে ভালো করে জুম চাষও করতে পারে না।

তার সঙ্গে কথা হলে আরও জানা যায়, পুরো নাম:- জয়ন্তী চাকমা, স্বামী – সুজয় চাকমা, পিতা- মনতোষ চাকমা, মাতা – ইন্দিরা চাকমা। জন্ম – ১৯৯৬, যার আইডি – 4205816889, সেল – ০১৬৯০০৭৫৩৬৩, সে বর্তমানে আমতলী পাড়ার কুতুবদিয়া ৩নং ওয়ার্ডের সদর বিলাইছড়ি ইউনিয়নে বাসিন্দা। ২য় শ্রেণীতে পড়ে সুদীপ্ত নামে এক ছেলে। ২০১২ সালে এসএসসি পাশ করার পর আইএ ভর্তি হবার পরে বাবার মৃত্যুতে আর লেখাপড়া করা সম্ভব হয়নি। কপালে জোটেনি কোনো চাকরিও। এর পরে বিয়ে হয়। পাঁচ ভাই ও বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয় ।

সরেজমিনে দেখতে গিয়ে দেখা যায়, একটি ঝুঁপুড়ি বেড়া ঘরে বসবাস করছে। তাদের ঘর দেখে মনে পড়ে গেল যেন পল্লী কবি জসীম উদ্দিনের “আসমানী” কবিতাটি । আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও ! রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ী রসুলপুরে যাও, বাড়ীতো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি, একটু খানি বৃষ্টি পড়লে গড়িয়ে পড়ে পানি; একটু খানি হাওয়া দিলে ——— ! জয়ন্তীর ছোট্ট বাড়ী দেখতে হলে আমতলীতে যাও ।

জঙ্গল থেকে ছন না পাওয়ায় ছাঁদে রেক্সিন। ঢেউটিনের কথা তো বাদ ! বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ঘরের ভিতরে পানি ডুকে। কালবৈশাখীর সময় তো কথাই নেই। কোন রকমে দিনাতিপাত করছে তার পরিবার। রাতে জঙ্গলের পাশে ঘুমালেও রয়েছে সাপ ও পোকা মাকঁড়ের ভয়।

তবে সে জানিয়েছে, বাজারে যদি স্থায়ী একটা ভাড়া প্লট ব্যবস্থা হয় তাহলে প্রতিদিন কাপড় সেলাই এবং চোটখাটো ব্যবসা করতে পারবেো। চলতে ও ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য যদি কোনো প্রশাসনের সুযোগ – সুবিধা পেয়ে থাকি তাহলে বেশি উপকার হবে। এজন্য সকল প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

উপজেলা ব্রাক ম্যানেজার বিভূতি চাকমা জানান, সহযোগিতার জন্য ব্রাক অফিসের যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।

জাতীয় মহিলা সংস্থা কার্যালয়ে দায়িত্বে সাধন তঞ্চঙ্গ্যা জানান- বর্তমানে এক বেইচ ট্রেনিং চলতেছে, এটা শেষ হলে আর এক বেইচ চালু হবে তখন ভর্তি হতে পারবে।

মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অঃদাঃ) রিনি চাকমা জানান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মাধ্যমে নারীদের নিয়ে প্রতি তিন মাস পরপর সেলাই ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বর্তমানে চলমান রয়েছে। এটা শেষ হলে আরও নেওয়া হবে তখন সে সুযোগ নিতে পারবে। এছাড়াও প্রেগন্যান্সি হলে মাতৃকালীন সুবিধা এবং ভিডব্লিউবি দুই বছর পরপর দেওয়া হয়। অফিসের সাথে যোগাযোগ রাখলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক যাচাই বাচাই করে এ সুবিধার আওতায়ও আনা যাবে।

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান জানান, তাদের ভোটার সবেমাত্র ট্রান্সফার করা হয়েছে। পুরো কাগজ পত্র ঠিকঠাক হলে তার পরে সুযোগ- সুবিধার আওতায় আনা হবে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন চাকমা জানান, এখন সরকারিভাবে ঘরের কোনো বরাদ্দ নেই। ডেউটিনের ও অন্যান্য সুবিধার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে একটি আবেদন (ঘরের ছবিসহ) জমা দিতে হবে। বরাদ্দ আসলে যাচাই বাচাই করে দেওয়া যাবে।

বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ রেজাউল করিম রনি জানান, সংসার জীবন গতিশীল করার জন্য বাজার কমিটির পক্ষ হতে সুদৃষ্টি থাকবে। যাহাতে কিভাবে আয়ের উৎস বাড়ানো যায়। তার অবস্থা দেখা আমরা বাজারে সেটেল করার চেষ্টা করছি। এখন কোন প্লট খালি নাই। প্লট হালি হলে ব্যবস্থা করা হবে। যোগাযোগ রাখতে বলেন।

স্মরণ ও শ্রদ্ধা  কাপ্তাইয়ে মহান বিজয় দিবসের বর্ণাঢ্য কর্মসূচী

বিলাইছড়িতে জীবন যুদ্ধে জয়ন্তী চাকমা, আয়ের একমাত্র শেষ সম্বল সেলাই মেশিনটি

 

রিপন মারমা, কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি:

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮ টায়  কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কর্ণফুলী মিনি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য মার্চপাস্ট, শিশু কিশোর সমাবেশ, কুচকাওয়াজ, মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।

এসময় পুলিশ, আনসার,নৌ স্কাউটস্, রোভার ও গার্লস গাইড সহ উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা এই কুচকাওয়াজে অংশ নেন। কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী  কর্মকর্তা মো: রুহুল আমিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং সালাম গ্রহণ করেন।

এসময় কাপ্তাই সহকারী কমিশনার (ভূমি) নেলী রুদ্র থানার ওসি শেখ মাহমুদুল হাসান রুবেলসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা, সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক এবং সর্বস্তরের জনগন উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে এদিন সকালে কাপ্তাই উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া সংগঠনের পক্ষ হতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এর মাধ্যমে জাতির সূর্য সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশ

বিলাইছড়িতে জীবন যুদ্ধে জয়ন্তী চাকমা, আয়ের একমাত্র শেষ সম্বল সেলাই মেশিনটি

 

এম এস শ্রাবণ মাহমুদ : 

১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে জাতির শ্রেষ্ঠ সূর্য সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন জেলা পুলিশ। মঙ্গলবার (১৬ই ডিসেম্বর)২৫ খ্রিঃ সকালে রাঙ্গামাটি রির্জাভ বাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ জেলার একাধিক স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও স্যালুট প্রদানের মাধ্যমে এই শ্রদ্ধা জানানো হয়। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব, (পিপিএম) এর নেতৃত্বে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, শহিদ মিনার সংলগ্ন স্মৃতিসৌধ, শহীদ এম. এ. আলী স্মৃতিস্তম্ভ সহ শহীদ এম. শুক্কুর স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

এর আগে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় জেলা পুলিশের একটি চৌকস দলের তোপধ্বনির মাধ্যমে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ ইকবাল হোছাইন, (পিপিএম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোঃ জসীম উদ্দীন চৌধুরী, (পিপিএম)অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ তারেক সেকান্দার, সহকারী পুলিশ সুপার (এসএএফ) মোজাম্মেল হকসহ জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সার্বক্ষণিক প্রহরার ব্যবস্থা, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নজরদারি করা হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রত্যয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

রামগড়ে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস ২০২৫ পালিত

বিলাইছড়িতে জীবন যুদ্ধে জয়ন্তী চাকমা, আয়ের একমাত্র শেষ সম্বল সেলাই মেশিনটি

 

সাইফুল ইসলাম, রামগড়ঃ

নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস ২০২৫ পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শহীদ মিনারে ৩১ বার তোপধ্বনীর মাধ্যমে দিবসটির শুভ সূচনা করা হয়। এরপর শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার (স্মৃতিস্তম্ভে) পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক কাজী মোহাম্মদ শামীমের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন।

এরপর পর্যায়ক্রমে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রামগড় পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, রামগড় থানা, উপজেলা ও পৌর বিএনপি, রামগড় প্রেস ক্লাব, যুবদল, মহিলা দল, উপজেলা জিয়া পরিষদ, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, পাহাড়িয়া সোসাইটি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। এছাড়াও স্থানীয় সর্বস্তরের জনগণ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শামীম, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. বাহার উদ্দিন, রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজির আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

×