বিলাইছড়িতে ভারী বৃষ্টিপাতে প্লাবিত ধান্য জমি, আতঙ্কে পাহাড়ের ঢালের মানুষ, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, যাতায়াতে চরম ভোগান্তি
সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, বিলাইছড়ি প্রতিনিধিঃ
বিলাইছড়ি উপজেলায় প্রবল বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধস ও কয়েকটি ঘর ধসে পড়েছে। বন্যায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ধান্য জমিসহ বিভিন্ন শাক-সবজির ক্ষেত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ফলে আতঙ্কে রয়েছেন পাহাড়ের ঢালে বসবাস করা মানুষ। ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে ১ জুনেও। গত বৃহস্পতিবার থেকে টানা কয়েকদিন বৃষ্টিপাতে ফারুয়া ইউনিয়নে গোয়াইনছড়ি, যামুছড়া, এগুজ্যাছড়ি তক্তানালা, উলুছড়ি, চাইন্দা, আলেখ্যং এলাকা শাকসবজির ক্ষেত এবং বিলাইছড়ি ইউনিয়নে, কুতুবদিয়া, আমতলী, দীঘলছড়ি, নলছড়ি বাজার এলাকা, সাক্রাছড়ি এবং কেংড়াছড়ি ইউনিয়নে কেরনছড়ি, সেটেলার জোন, ভালাছড়ি, শামুক ছড়ি, নাড়াইছড়ি এলাকায় বেশিরভাগ ধান্য জমি ও ক্ষেত ব্যাপকভাবে ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কুতুবদিয়া এবং কেরনছড়ির এলাকা। তাদের প্রায় সব পরিবারের পাকা-কাঁচা-আধাপাকা ধান তলিয়ে গেছে পানির নীচে। গোয়াইনছড়ির কিছু বসতঘর প্লাবিত, আরো বৃষ্টিপাত হলে প্লাবিত হতে পারে ফারুয়া বাজার।

এদিকে, বিলাইছড়ি টু ফারুয়া রাস্তাটি যাতায়াতের ব্যাপক অসুবিধা হচ্ছে। ঐ পথে যেতে পারছেন না জুরাছড়িবাসীও। এছাড়াও নৌ-পথে প্রবল স্রোতে রাঙ্গামাটি হতে বিলাইছড়ি, কাপ্তাই হতে বিলাইছড়ি, বিলাইছড়ি হতে ফারুয়া আসা-যাওয়ায় চরম দূর্ভোগে পড়েছেন নানা শ্রেণীর পেশার মানুষ। তবে সবচেয়ে অসুবিধায় রয়েছেন নিন্ম আয়ের মানুষগুলো।
এদিকে ৫দিন ধরে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় জনজীবনে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে অফিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি, হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টের মালিকদের।
১নং বিলাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রায় ১৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। কেন্দ্রগুলো হচ্ছে- উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি,পুরাতন কৃষি অফিস (কলেজ ক্যাম্পাস), অডিটোরিয়াম, বিলাইছড়ি মডেল স: প্রা: বিদ্যালয়, ডাউন পাড়া প্রা: বিদ্যালয়, শালবাগান স: প্রা: বিদ্যালয়, কেংড়াছড়ি ইউনিয়নের ১,২ ও ৩নং – এর কেংড়াছড়ি বাজার জোন স: প্রা: বিদ্যালয়। ফারুয়া ইউনিয়নে শুক্করছড়ি স: প্রা: বিদ্যালয়, তাড়াছড়ি বেসরকারি প্রা: বিদ্যালয়, ফারুয়া উচ্চ বিদ্যালয়, ফারুয়া স: প্রা: বিদ্যালয়, এগুজ্যাছড়ি বেসরকারি প্রা: বিদ্যালয়, ওড়াছড়ি স: প্রা: বিদ্যালয়, তক্তানালা সরকারি প্রা: বিদ্যালয়, উলুছড়ি বেসরকারি প্রা: বিদ্যালয়।

তিনি আরো জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের উপরে কারোর হাত নেই, সবাইকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানান। এছাড়াও জানাগেছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মামুনুল হক নেতৃত্বে একটি টীম রয়েছে যা প্রতিনিয়ত পরিদর্শন ও খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনে- ০১৮৯৪৯৫০১১৪, ০১৮১২৯৫৬৫৪৬ এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, রাঙামাটির ৩নং সাপছড়ি ইউনিয়ন রাঙ্গামাটি সদর ৪নং ওয়াদের বোধিপুর, মরংছড়ি খামারপাড়া সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে বন্যা প্লাবিত হয়েছে। এই এলাকার ৪০টিরও বেশি বাড়িঘর ডুবেছে।




















