শিরোনাম:

পাহাড়ে জুমের ধান কর্তন আরম্ভ

পাহাড়ে জুমের ধান কর্তন আরম্ভ

 

মথি ত্রিপুরা, রুমা প্রতিনিধিঃ

সবুজ ঘেরা উচু নিচু ঢালু ভূমিতে পাহাড়ে পাহাড়ে, চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে,সোনালী রঙের রাংঙিয়ে ভরিয়ে আছে জুমের ধানের পাকা। পাহাড়ে অলিতে গলিতে সব জায়গায় এখন পাকা ধানের সৌরভ। তাই এই ধানের সৌরভ বলে দিচ্ছে নবান্নের উৎসবের আগমন ঘটতে আর বেশি দিন নেই। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীরদের মনে এখন আনন্দের মাতোয়ারা। জুমের পাকা ধানের দৃশ্য দেখলে মনের দুঃখ কষ্টের কথা সব ভুলে যায় জুমিয়াদের। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীরদের প্রধান উৎস হচ্ছে জুম চাষ। জুম চাষ পাহাড়িদের আদি পেশা। জুমের পাকা ধানের চাল দিয়ে চলে সারা বছরের খাদ্য।

ইদানীং পাহাড়ের জুমের ধান পেকেছে। উপযুক্ত হয়েছে নানারকম ফসল। তাইতো প্রতিটি পাহাড়ের ধুম পড়েছে জুমের ধান কাটার মহোৎসব। দেখা মিলছে পাকাধান কাটতে নারী-পুরুষ উভয় জুমচাষীদের। বর্তমানে এই দৃশ্যটি দেখা মিলেছে পাহাড়ে।

এপ্রিল মাসে শুরু দিকে জুমিয়ারা যেসব ধানের বীজ বপন করেছে সেসব ধান এখন কর্তনের আরম্ভ হয়েছে এবং এপ্রিল শেষের দিকে যারা বীজ বপন করেছে সেসব জুমের ধান পাকা কিছুটা বিলম্ব হতে দেখা দিয়েছে।

বান্দরবান জেলা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক পাহাড়। সেই পাহাড়ের পাদদেশে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জামিনী পাড়ার কারবারি ৫০ বছর বয়সী মেনয়াং ম্রো, এ বছর দেড় আড়ি ধানের জুম চাষ করেছেন। সকাল থেকে পরিবারের ৪ জন সদস্য নিয়ে তিনি ধান কাটছেন। আবার কেউ কাটা ধানগুলোকে বড় থ্রুং দিয়ে বহন করে জুম ঘরে এসে সংগ্রহ করছেন।

এ বছরে জুমের ধান কেমন হয়েছে জানতে চাইলে জামিনী পাড়ার কারবারি মেনয়াং ম্রো বলেন, এ বছর তেমন ধান ভালো হয়নি। তাছাড়া জুমের জায়গা পাথর বেশি থাকার কারণে ধান ভাল হয়না। তাই শ্রমিক নিয়ে ধান কাটলে পোঁছাবে না। সেজন্য স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদেরকে নিয়ে ধান কাটা শুরু করেছেন। দেড় আড়ি ধান চাষ করেছেন, মাত্র ৩০ আড়ি ধান পাওয়ার আশা করছেন তিনি। তবে এ বছরের আবহাওয়া জুমিয়াদের জন্য খুবই উপযোগী বলে মনে করছেন তিনি। পর্যাপ্ত জমি না থাকাতে বেশি করে চাষাবাদ করতে পারছেননা বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এ বছরে যারা বড় জুম বা (৬/৭) আড়ি ধান চাষ করেছে তারা বেশি ধান পাবে বলে মন্তব্য করেন।

একইপাড়ানিবাসী রিংরাও ম্রো এ বছর ছয় আড়ি ধান রোপন করেছেন। তিনি বলেন, এবারে জুমক্ষেতের ফলন ভাল হয়েছে,কারণ চলতি মৌসুমের আবহাওয়া খুবই ভাল এবং উৎপাদন পরিবেশ ভালই ছিল। তাই এ বছর ২৫০ আড়ি ধান পাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। আরেক জন জুম চাষী রামরি পাড়া কারবারি মেনরুম ম্রো (৫২) তিনি তিন আড়ি ধান রোপন করেছেন। তাঁর ধান কাটার শেষ। তিনিও ৬০ আড়ি ধান পেয়েছেন বলে জানান। তবে বর্তমানে মাটির উর্বরতা কমে যাওয়ার কারণে মাত্র তিন কানী অর্থাৎ তিন আড়ি জায়গার মধ্যে ৪ বস্তা সার প্রয়োগ করতে হয়েছে বলে জানান।

জেলার সাতটি উপজেলায় বিশেষ করে দুর্গম পাহাড় গুলোতে চলতি মৌসুমে রোপিত ধান পেকেছে। এসব কৃষিপণ্য জুম ক্ষেত থেকে আহরণ করে ক্ষেত-খামার এবং ঘরে তুলতে শুরু করেছেন জুমচাষিরা। ইতিমধ্যে চাষিরা জুম থেকে পাকা ধানসহ বিভিন্ন জাতের ফসল কাটতে শুরু করেছে। জেলা শহর থেকে ওয়াইজংশন এবং চিম্বুক এলাকায় পাহাড়ে পাহাড়ে দেখা গেছে পাকাধান কাটতে নারী-পুরুষ জুমচাষিদের। ধানের পাশাপাশি ছোটমরিচ, কচু, শিমুল আলু, বরবটি, ঢেঁড়স, চিংঙা, চিংচিংঙা, মারফা, মিষ্টি কুমরা, কুমড়া, তিল, হলুদ, আদার, ভুট্টা ও জুমের বিভিন্ন জাতের শাকসবজি চাষ হয়ে থাকে। তবে তিল, হলুদ ও আদা সংগ্রহ করা যাবে আরও কয়েক মাস পর। জেলার সদর, লামা, রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দুর্গম এলাকা পাহাড় গুলোতে একইভাবে জুমচাষ হয়েছে এবং ধান কাটার শুরু করেছে।

বান্দরবানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক তৌফিক আহমেদ নূর বলেন, পাহাড়ি বেশির ভাগ মানুষ জুম চাষ নির্ভর। আবাদী জমিতে ফলন কম হলে খাদ্য ঘাটতি দেখাই। প্রতিবছর জুম চাষ করে তাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নসহ আর্থিক স্বচ্ছলতা আসে এবং সারা বছরের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। বান্দরবানের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রোসহ ১১টি জুমিয়া সম্প্রদায়ের আয়ের প্রধান উৎস জুমচাষ। তারা এক মৌসুমের জুমের উৎপাদিত ফসল দিয়ে সারা বছরের পরিবারের খাদ্য যোগান দেন। ওই সম্প্রদায়গুলো যুগযুগ ধরে এভাবে জীবন যাপন করে আসছেন।

বান্দরবান কৃষি বিভাগ তথ্য মতে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে আবাদের লক্ষমাত্রা ছিল ৭হাজার ৪শত ৬০ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৭১ মেট্রিকটন। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের আবাদের অর্জন হয়েছে ৮ হাজার ২শত ৬৭ হেক্টর। উৎপাদনের অর্জন হয়েছে ১২ হাজার ৪শত ৯৯ মেট্রিকটন। যা গত বছরে তুলনায় এবার ৯৩ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ বাড়ছে বলে জানান অতিরিক্ত উপ-পরিচালক তৌফিক আহমেদ নূর।

বান্দরবানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক তৌফিক আহমেদ নূর বলেন,প্রতিটি পাহাড়ের এখন জুমের ধান কাটার শুরু হয়েছে। তাছাড়া এই পর্যন্ত আবহাওয়া মোটামুটি ভালো আছে ফলনও তেমন খারাপ হয় নাই। তাই চলতি বছরে জুমের ফলন মোটামুটি ভালো অর্জন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

লংগদুতে ইয়াবাসহ যুবক আটক

পাহাড়ে জুমের ধান কর্তন আরম্ভ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, লংগদুঃ

পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলায় আটারকছড়া ইউনিয়নে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লংগদু থানা পুলিশের সফল অভিযানে দুইশত পিস ইয়াবাসহ এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার বিকালে উপজেলার আটারকছড়া ইউনিয়নের করল্যাছড়ি বটতলা যাত্রী ছাউনীর সামনে প্রধান সড়কে অভিযান পরিচালনা করে মাদক পাচারকারী যুবক হাছান আলী (২৫) কে আটক করা হয়।

পুলিশ জানায়, আটারকছড়ার করল্যাছড়ি ক্যায়াংঘর বটতলায় যাত্রীছাউনির সামনে পাকা রাস্তার উপর এসআই এস.এম আল- মামুনের নেতৃত্বে মোবাইল ডিউটি কালীন সময়ে চেক পোস্ট পরিচালনা করে। এসময় তল্লাশি করার এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ী মো. হাছান আলীর কাছে দুইশত পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।

আটককৃত মাদক ব্যবসায়ী পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার কবাখালী ইউনিয়নের ৭নম্বর ওর্য়াড উত্তর মিলনপুর এলাকার বাসিন্দা নিজামের ছেলে।

লংগদু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকারিয়া জানান, গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারিকে দুইশত পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা রুজু করে আসামীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

২য় বর্ষ পেরিয়ে ৩য় বর্ষে সিএইচটি বার্তা নিউজ পোর্টাল

পাহাড়ে জুমের ধান কর্তন আরম্ভ

 

সিএইচটি বার্তা ডেস্ক রিপোর্টঃ

“পাহাড়ের নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশে নিরন্তর” প্রতিপাদ্যে
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী জনপদের কন্ঠস্বর হয়ে এগিয়ে যাওয়ার সংবাদ, সংস্কৃতি ও মানুষের জীবনচিত্র তুলে ধরার প্রত্যয়ে যাত্রা শুরু করা অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘সিএইচটি বার্তা’ দুই বছর পেরিয়ে তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করেছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে সিএইচটি বার্তা পাহাড়ের দুর্গম জনপদ, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, আদিবাসী সংস্কৃতি, সামাজিক সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা নিয়মিতভাবে তুলে ধরে পাঠক মহলে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। মূলধারার গণমাধ্যমে যেসব খবর অনেক সময় গুরুত্ব পায় না, সেগুলোকে দায়িত্বশীলভাবে প্রকাশ করাই এই পোর্টালের অন্যতম লক্ষ্য।

সিএইচটি বার্তার সম্পাদকীয় টিমের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “সত্য, নিরপেক্ষ ও জনস্বার্থভিত্তিক সংবাদ পরিবেশনই আমাদের অঙ্গীকার। পাহাড়ের মানুষের সুখ-দুঃখ, সংগ্রাম ও স্বপ্নের কথা দেশ-বিদেশের পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”

দুই বছরের পথচলায় স্থানীয় সাংবাদিক, লেখক ও আলোকচিত্রীদের সমন্বয়ে সিএইচটি বার্তা একটি সক্রিয় সংবাদ প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। নিয়মিত সংবাদ, ফিচার, সাক্ষাৎকার ও বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে পাহাড়ি জনপদের বাস্তব চিত্র তুলে ধরছে পোর্টালটি।

তৃতীয় বর্ষে পদার্পণের এই সময়ে সিএইচটি বার্তা পাঠক, শুভানুধ্যায়ী ও সহযোগীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামীতেও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা ও সত্য প্রকাশে অবিচল থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।

কাপ্তাইয়ে দারুল উলুম বড়ইছড়ি নূরানী মাদ্রাসার ফল প্রকাশ, মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার

পাহাড়ে জুমের ধান কর্তন আরম্ভ

 

রিপন মারমা, কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি :

রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে দারুল উলুম বড়ইছড়ি নুরানী মাদ্রাসা’র বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও কৃতি শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।

সোমবার ১৫ (ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় উপজেলা পরিষদ হল রুমে এ অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়।দারুল উলুম বরইছড়ি মাদ্রাসার আয়োজনে এবং মাওলানা সোলায়মান এর পরিচালায় এতে প্রধান অতিথি উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রুহুল আমিন।

এসময় তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের সারা বছরের কঠোর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। এ সময় মেধা তালিকায় স্থান অধিকারী এবং বিভিন্ন সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। কৃতি শিক্ষার্থীরা পুরষ্কার গ্রহণ করে আনন্দে উদ্বেলিত হয়।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, কর্ণফুলী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ সিরাজ উদ্দিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো: দিলদার হোসেন, উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বারেক, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা নাজমুল হাসান, সহকারী তথ্য অফিসার দোলোয়ার হোসেন, বিএফআইডিসি মসজিদের ইমাম আনোয়ার হোসেন। এ সময় বক্তারা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নুরানী শিক্ষা’র আহবান জানান।

অনুষ্ঠান শেষে অতিথি’রা কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

×