শিরোনাম:

২৮ বছর পরও শান্তি অধরা : পার্বত্য চুক্তির নীরব কান্না ​জাতিসত্তা ও স্বাতন্ত্র্যের প্রশ্নে কেন এত গড়িমসি?

২৮ বছর পরও শান্তি অধরা : পার্বত্য চুক্তির নীরব কান্না ​জাতিসত্তা ও স্বাতন্ত্র্যের প্রশ্নে কেন এত গড়িমসি?

 

বিশেষ প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটি :

​ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮তম বার্ষিকীতে এসেও শান্তি ফেরেনি পাহাড়ের জীবনে। বরং এই বর্ষপূর্তি যেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কাছে দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ও ক্ষোভের প্রতীক হয়ে উঠেছে। তাদের সাম্প্রতিক বিবৃতিটি চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সরকারের দীর্ঘসূত্রতা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবকে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে।

​চুক্তি কেন নিষ্ক্রিয়?

​জেএসএস-এর মূল অভিযোগ স্পষ্ট : চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের যে জাতিগত ও প্রশাসনিক স্বাতন্ত্র্য নিশ্চিত করার কথা ছিল, তা আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া বারবার হোঁচট খেয়েছে, আর এর ফলে চুক্তির মৌলিক চেতনা ভূলুণ্ঠিত।

সংক্ষেপে অভিযোগের সারমর্ম : ​ভূমি ব্যবস্থাপনা: ভূমি কমিশন গঠন হলেও তা নিষ্ক্রিয়। ভূমির অধিকার নিশ্চিত না হওয়ায় পাহাড়িদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। ​স্বায়ত্তশাসন: আঞ্চলিক ও জেলা পরিষদকে পুলিশ, বন ও পরিবেশ, ভূমি—এসব গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়নি। স্বশাসিত কাঠামো আজও দুর্বল।

চুক্তি পরিপন্থী কাজ : চুক্তির চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ড, যেমন বাঙালি সেটেলারদের উসকানি, ভূমি বেদখল ও সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহারে গড়িমসি—প্রক্রিয়াটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ​ক্ষোভের আগুন ও অপপ্রচারের শিকার ​জেএসএস অভিযোগ করেছে, চুক্তি বানচাল করার জন্য একটি মহল তাদের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ হিসেবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের মতে, এটি আসলে চুক্তির ন্যায্য বাস্তবায়ন দাবিকে দমন করার কৌশল। দীর্ঘকাল ধরে পাহাড়িদের মধ্যে জমে থাকা হতাশা ও অবিশ্বাসকে সরকার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে মোকাবিলা না করে উল্টো সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

শেষ প্রত্যাশা : অধিকারের পুনর্জাগরণ ​চুক্তির ২৮ বছর পর, জেএসএস তাদের মূল দাবিগুলো পুনর্ব্যক্ত করেছে—ভূমি কমিশনের দ্রুত কার্যকরতা, পরিষদগুলোতে পূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং সব সামরিক ক্যাম্প প্রত্যাহার।

​পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এখন শুধু একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার নয়, এটি বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতি সম্মান ও দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের মানুষের প্রতি ন্যায়বিচারের প্রতীক। সংঘাত নয়, বরং আন্তরিক রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও দ্রুত পদক্ষেপই পারে শান্তি চুক্তির নীরব কান্না থামিয়ে পার্বত্যবাসীকে তাদের ন্যায্য অধিকারের পুনর্জাগরণ ঘটাতে।

বান্দরবানের শিল্পী খিংসাই এর একক চিত্র প্রদর্শনী।

২৮ বছর পরও শান্তি অধরা : পার্বত্য চুক্তির নীরব কান্না ​জাতিসত্তা ও স্বাতন্ত্র্যের প্রশ্নে কেন এত গড়িমসি?

বান্দরবান প্রতিনিধি:

পার্বত্য বান্দরবানে আগামী ২০ ডিসেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে “রোয়া-দ্ব” শিরোনামে বান্দরবানের চিত্র শিল্পী খিংসাই এর একক চিত্রকলা প্রদর্শণী। এটি শিল্পীর প্রথম একক প্রদর্শণী।

এ উপলক্ষে আজ (১৪ ডিসেম্বর) একটি প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, প্রদর্শনীতে শিল্পীর দীর্ঘদিনের শিল্পচর্চার নির্বাচিত চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হবে। এসব চিত্রে শিল্প কর্মের ফোকাস হলো সেই ভূমি, মানুষ এবং প্রকৃতি, মানবজীবন, সমাজ ও সমসাময়িক বাস্তবতার নানা দিক রঙ ও রেখা। যা তার জন্মস্থানের গল্প  বহন করে।

এখানে শিরোনমা হিসেবে মারমা ভাষায় ‘রোয়া-দ্ব’ শব্দটি নেয়া হয়েছে।  মারমা সম্প্রদায়ের ভাষায় বান্দরবানকে ডাকা হয় “রোয়া-দ্ব”, যার অর্থ বহন করে ‘রোয়া’ অর্থ গ্রাম আর ‘দ্ব’ শব্দটি ব্যবহার করা হয় সম্মানার্থে। এরই মাধ্যমে শিল্পী তার সৃষ্টিকর্মে দর্শকদের সঙ্গে অনুভূতির এক গভীর সংযোগ স্থাপন করতে চান।

আয়োজক খিংসাই  জানান,  প্রদর্শনীটি ১৯ ডিসেম্বর বিকেল ৪ টায় বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হবে। পরবর্তী ২০ ডিসেম্বর থেকে  ২২ ডিসেম্বর  পর্যন্ত প্রর্দশনী হবে। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে প্রদর্শনীটি।

এছাড়াও ২০ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা হতে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত শিশু শিল্পীদের প্রতিকৃতি অংকন ও সংগীত সন্ধ্যা। ২১ ডিসেম্বর বিকেল ৪ টা হতে পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ি বাদ্যযন্ত্রের বিশেষ পরিবেশনা। ২২ ডিসেম্বর সমাপনী ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার মধ্য দিয়ে চিত্র প্রর্দশবী অনুষ্ঠানটি শেষ হবে বলে জানান আয়োজক চিত্র শিল্পী খিংসাই মারমা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, তিনি দীর্ঘদিন যাবত এই শিল্পচর্চা করে যাচ্ছেন।  তিনি দেশ-বিদেশে, জাতীয়ভাবে একাধিক দলীয় প্রদর্শনীতে অংশ নিলেও  এটি তার প্রথম একক চিত্র প্রদর্শন। বান্দরবানে যথাযথভাবে হওয়া এটাই প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনী। জল রং, তেল রং ও চারকোল মাধ্যমে আঁকা ছোট বড় মিলিয়ে  ৩২ টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে এই প্রদর্শনীতে। এই একক প্রদর্শনীর মাধ্যমে স্থানীয় শিল্পচর্চাকে উৎসাহিত করা এবং তরুণ প্রজন্মকে শিল্পের প্রতি আগ্রহী করে তোলাই মূল লক্ষ্য। শিল্প প্রেমী, শিক্ষার্থী ও সংস্কৃতিমনা দর্শকদের প্রদর্শনীটি পরিদর্শনের আহ্বান জানানো হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে শিল্পী ছাড়াও প্রদর্শনীর আয়োজক, শিল্প সমালোচক, সংস্কৃতিকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। শেষে প্রদর্শনীটি সফল করতে সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়।

যথাযোগ্য মর্যাদা ও গভীর শ্রদ্ধায় রাজস্থলীতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

২৮ বছর পরও শান্তি অধরা : পার্বত্য চুক্তির নীরব কান্না ​জাতিসত্তা ও স্বাতন্ত্র্যের প্রশ্নে কেন এত গড়িমসি?

 

উচ্চপ্রু মারমা, রাজস্থলী প্রতিনিধিঃ

যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবী সন্তানদের স্মরণ করে রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। রাজস্থলী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ১৪ ডিসেম্বর রবিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সেলিনা আক্তার। সভায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বশূন্য ও মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নির্মম ও পৈশাচিকভাবে হত্যা করে। তৎকালীন পাকিস্তানি রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সামরিক বাহিনী বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে এই পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করে।

তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ সকল নিরপরাধ মানুষের ওপর সংঘটিত নারকীয় হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং শহীদদের আত্মত্যাগ নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নওশাদ খান, থানা অফিসার ইনচার্জ খালেদ হোসেন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল নোমান, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাকিবুজ্জামান রাজু, সাংবাদিক আজগর আলী খান, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শান্তি রতন চাকমা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা স্মৃতি চাকমা, শিক্ষা কর্মকর্তা তাজুরুল ইসলাম এবং সমাজসেবা কর্মকর্তা লিজা চাকমা।

এছাড়াও দিবসের কর্মসূচিতে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

বুদ্ধিজীবী আমাদের গড়ে তুলতে হবে —- ইউএনও হাসনাত জাহান খান 

২৮ বছর পরও শান্তি অধরা : পার্বত্য চুক্তির নীরব কান্না ​জাতিসত্তা ও স্বাতন্ত্র্যের প্রশ্নে কেন এত গড়িমসি?

 

সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা,

বিলাইছড়ি (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধিঃ

বুদ্ধিজীবী আমাদের গড়ে তুলতে হবে বলে এমন মন্তব্য করেছেন ইউএনও হাসনাত জাহান খান। তিনি রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় বিলাইছড়ি উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা কনফারেন্স রুমে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে এক আলোচনা সভায় একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, বুদ্ধিজীবী দিবস জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। যারা মেধাবী তাদেরকে এই দিনে হারিয়েছি। পাকহানাদারকে রাজাকার, আলবদর, আলশামস্ বাহিনী সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য আমরা শহীদুল্লাহ্ কায়সার ও মুনীর চৌধুরী দুই রত্নকে হারিয়েছি। সততার সহিত আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেজন্য প্রত্যেক ছেলে মেয়েদের ভালো শিক্ষা দিতে হবে। আজকের সন্তানরা আগামী দিনে বুদ্ধিজীবী হবে এবং দেশ ও জাতিকে যেন ভালোবাসে সে হিসেবে গড়ে তুলবেন। প্রচুর বই পড়তে হবে। দেশ সম্বন্ধে জানার বেশী জরুরি। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন থানা অফিসার ইনচার্জ (নিঃ) মোঃ মাসরুরুল হক, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান, উপজেলা মেডিকেল অফিসার ডাঃ রনি সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ ওমর ফারুক, উপজেলা প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন,  ইন্সট্রক্টর মোহাম্মদ বখতেয়ার হোসেন।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন  উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা (ভা:) মোহাম্মদ গোলাম আজম, উপজেলা নির্বাচন অফিসার ছালেহ আহাম্মদ ভূইঁয়া, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সুবিনয় চাকমা, আনসার ভিডিপি’র প্রশিক্ষক মো. মিজানুল হক এবং চার ইউনিয়ন পরিষদ সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উপ-সহকারী কৃষি অফিসার রুবেল বড়ুয়া।

×