রাঙামাটির হাজাছড়া প্রধান শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনায় স্মৃতি আর ভালোবাসায় সিক্ত, অভিভাবকদের কান্নার স্রোত
বিশেষ (রাঙামাটি) প্রতিনিধিঃ
রাঙামাটির হাজাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার দাশের অবসরজনিত উপলক্ষে আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শিক্ষক–শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসীরা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। বিশেষ অতিথিদের স্মৃতিচারণ, প্রধান শিক্ষকদের কবিতা আবৃত্তি এবং শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় এক হৃদয়ছোঁয়ার মুহূর্ত।
বিদায়ের দিনটিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বাতাসেও ছিল আবেগের গন্ধ আজ রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই হাজাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সেজে ওঠে রঙিন বেলুন, ফুলের মালা ও ব্যানারে। বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার দাশের অবসরজনিত উপলক্ষে আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভিড় করেন শিক্ষক–শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন মঙ্গল চাকমা।

বিদায়ের সংবর্ধনায় বক্তাদের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অমর কুমার চাকমা, চেয়ারম্যান, ৬নং বালুখালী ইউনিয়ন পরিষদ। এসময় তিনি বলেন, “একজন প্রধান শিক্ষক একটি বিদ্যালয়ের অগ্রগতি কোন পথে যাবে তা নির্ধারণ করে দেন। প্রদীপ স্যার সেই দায়িত্ব নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে পালন করেছেন।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন— সবিনয় দেওয়ান, সিনিয়র সহ–সভাপতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি বিজয় গিরি চাকমা, সাবেক চেয়ারম্যান অনুপম চাকমা, সাবেক চেয়ারম্যান নজির আহম্মেদ, প্রধান শিক্ষক ও সদস্য, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, রাঙামাটি জেলা কমিটি রিনা তালুকদার।

অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বক্তারা বলেন, প্রদীপ কুমার দাশ একজন প্রশাসক হিসেবে যেমন দক্ষ ছিলেন, তেমনি শিক্ষক হিসেবে ছিলেন অত্যন্ত মানবিক ও শিক্ষার্থী–বান্ধব। কবিতায় উঠল শিক্ষক–শিক্ষার্থীর ভালোবাসা অনুষ্ঠানের আবেগঘন অংশ ছিল কবিতা আবৃত্তি। নিজেদের লেখা কবিতা আবৃত্তি করেন— শংকর দে, প্রধান শিক্ষক সাধন চন্দ্র চাকমা, প্রধান শিক্ষক, শিক্ষাধন কারবারিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কবিতায় উঠে আসে একজন শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের না–ফুরানো সম্পর্ক, বিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি এবং অবসরের বেদনা।

প্রধান শিক্ষকের আবেগঘন বক্তব্য শেষ বক্তব্যে প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, “এই বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থী আমার জীবনের অংশ। শিক্ষকতা আমার কাছে শুধু পেশা নয়, মানুষের ভেতর আলো জ্বালানোর দায়িত্ব।” তাঁর বক্তব্যে উপস্থিত অনেকেই আবেগে কাঁদেন। ফুলেল শুভেচ্ছায় ভেসে উঠল প্রাঙ্গণ শেষ মুহূর্তে শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও অতিথিরা ফুলের মালা পরিয়ে তাঁকে বিদায় জানান। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা আর শ্রদ্ধার বর্ণিল পরিবেশ।














