শিরোনাম:

রাজস্থলীতে বিজয় দিবসে সম্মান জানাতে গিয়ে জুতা পায়ে স্মৃতিসৌধে উঠে ছবি তোলার শহীদদের প্রতি অসম্মানের সামিল ; স্থানীয়দের ক্ষোভ

রাজস্থলীতে বিজয় দিবসে সম্মান জানাতে গিয়ে জুতা পায়ে স্মৃতিসৌধে উঠে ছবি তোলার শহীদদের প্রতি অসম্মানের সামিল ; স্থানীয়দের ক্ষোভ

প্রধান শিক্ষকের প্রতি প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে জোর দাবি স্থানীয়দের

 

উচ্চপ্রু মারমা, রাজস্থলী প্রতিনিধি :

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজস্থলী উপজেলা প্রাঙ্গণে অবস্থিত শহীদ স্মৃতিসৌধে জুতা পায়ে ছবি তোলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার তুমুল সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তেইংতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী মিলে বিজয় দিবসের মতো একটি গৌরবময় ও আবেগঘন দিনে জুতা পায়ে স্মৃতিসৌধের বেদিতে উঠে ছবি তোলা, যা অনেকের কাছে শহীদদের প্রতি অসম্মান, অবমাননার শামিল বলে বিবেচিত।

স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজস্থলী উপজেলা প্রাঙ্গণে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও দপ্তরের পক্ষ থেকে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। কর্মসূচির এক পর্যায়ে তেইংতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী জুতা পায়ে শহীদদের স্মৃতিসৌধের ওপর উঠে ছবি তুললে সেখানে উপস্থিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ ও সচেতন মহলের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। যা অনেকে মনে করছেন, বিজয় দিবসের মতো জাতীয় দিবসে স্মৃতিসৌধে আচরণ বিষয়ে আরও সচেতনতা ও শিষ্টাচার অনুসরণ করা জরুরি। এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে এড়াতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতীয় প্রতীকের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আরও জোরালোভাবে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার কথা জানান বলে জানা গেছে। এ ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সচেতন মহল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা বলেন, শহীদদের স্মৃতিসৌধ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আত্মত্যাগের প্রতীক; সেখানে জুতা পায়ে ওঠা বা ছবি তোলা জাতীয় চেতনা ও রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচারের পরিপন্থী।  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শিক্ষার দায়িত্বে থাকেন। সেখানে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে এমন ঘটনা আরও দুঃখজনক। তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে তেইংতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হকের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে এলাকাবাসী আশা প্রকাশ করেন, জাতীয় দিবস গুলোতে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর ক্ষেত্রে যথাযথ আচরণ নিশ্চিত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও সচেতনতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। এবং বিজয় দিবসে শহীদদের স্মৃতিসৌধে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে জুতা পায়ে প্রবেশে ছবি তোলার অপরাধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ সকল শিক্ষকদের যথাযথ বিভাগীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গরা। এমনকি আগামীতে এই ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি ঘটে তাহলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি স্থানীয় সুশীল সমাজের।

কাপ্তাই যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত

রাজস্থলীতে বিজয় দিবসে সম্মান জানাতে গিয়ে জুতা পায়ে স্মৃতিসৌধে উঠে ছবি তোলার শহীদদের প্রতি অসম্মানের সামিল ; স্থানীয়দের ক্ষোভ

 

রিপন মারমা, কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধিঃ

“দক্ষতা নিয়ে যাবো বিদেশ রেমিট্যান্স দিয়ে গড়বো স্বদেশ” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাঙ্গামাটি কাপ্তাইয়ে  আন্তর্জাতিক অভিবাসী ও জাতীয় প্রবাসী দিবস পালন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টা উপজেলা প্রশাসনে আয়োজনে সম্মেলন কক্ষে কিন্নরী এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সহকারী তথ্য অফিসার দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রুহুল আমিন সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা স্বাস্থ্য, পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রুইহ্লা অং মারমা, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ মাহমুদ হাসান, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন, ইন্সট্রাক্টর রিনা চাকমাসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ।

বক্তারা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান অসামান্য। প্রবাসীদের অধিকার রক্ষা এবং তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। প্রবাসীরা দেশের অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও সমাজ উন্নয়নের জন্য পরিবারের সদস্যদের ছেড়ে বহু দূরের দেশে কাজ করছেন। অথচ তাদের সম্মান দেওয়া হয় খুব কম।

বক্তারা আরও বলেন, প্রবাসীরা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তাই তাদের অবহেলা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা বন্ধ করতে হবে, বিদেশে বা এয়ারপোর্টে তাদের হয়রানি রোধ করতে হবে। প্রবাসীদের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদানের মাধ্যমে তাদের অসামান্য অবদান স্বীকৃত করতে হবে।

তাই আজকে সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জাানাচ্ছি, আর নয় অবৈধ পথে বিদেশ যাওয়া, মৃত্যুকে ডেকে আনা। দক্ষ শ্রমিক হয়ে বৈধ পথে বিদেশে গিয়ে দেশের জন্য সুনাম কুড়াবো এবং দেশের জন্য রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়াবো। আর এ রেমিট্যান্সের টাকায় দেশ হবে আরো সমৃদ্ধশালী, এ হোক আজকের প্রত্যয়।

রাজস্থলীতে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত 

রাজস্থলীতে বিজয় দিবসে সম্মান জানাতে গিয়ে জুতা পায়ে স্মৃতিসৌধে উঠে ছবি তোলার শহীদদের প্রতি অসম্মানের সামিল ; স্থানীয়দের ক্ষোভ

 

চাইথোয়াইমং মারমা, বিশেষ প্রতিবেদক:

“এ স্লোগান দক্ষতা নিয়ে যাব বিদেশ, রেমিটেন্স দিয়ে গড়বো স্বদেশ” এই স্লোগানের প্রতিপাদ্য করে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাঙ্গামাটি রাজস্থলীতে পালিত হয়েছে রাজস্থলী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা, নওশাদ খান। অনুষ্ঠানে রাজস্থলী প্রেসক্লাবের সভাপতি আজগর আলী খান, রাঙ্গামাটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর মোঃ আরিফুর রহমান প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা, নোমান, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাকিবুবজ্জামান রাজু, থানা উপপরির্দশক জয়নাল আবেদিন, সাংবাদিক উচাপ্রু, হাবীবুল্ল্যাহ মিজবা, তথ্য অফিসার লুই মারমাসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।আলোচনা

সভায় ডা,নওশাদ তার বক্তব্যে বলেন, আজ ১৮ ডিসেম্বর। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত হচ্ছে। একই সঙ্গে, আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সম্মানে আমরা পালন করছি জাতীয় প্রবাসী দিবস। আজকের এই শুভক্ষণে দেশ ও বিদেশের মাটিতে অবস্থানরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশিকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি আজ যে উন্নয়নের মহাসড়কে অবস্থান করছে, তার অন্যতম কারিগর হলেন আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা। আপনাদের পাঠানো ঘাম ঝরানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করছে বলে বক্তব্য রাখেন।

রাজস্থলীতে বিজয় দিবসে সম্মান জানাতে গিয়ে জুতা পায়ে স্মৃতিসৌধে উঠে ছবি তোলার শহীদদের প্রতি অসম্মানের সামিল ; স্থানীয়দের ক্ষোভ

 

সাইফুল ইসলাম, রামগড়ঃ

“দক্ষতা নিয়ে যাব বিদেশ, রেমিটেন্স দিয়ে গড়বো দেশ”, “বৈষম্যহীন বাংলাদেশ আমাদের সবার”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় উপজেলায় পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসী ও জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৫।

এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে রামগড় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১১ টায় উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রবাসী পরিবার ও সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক কাজী মোহাম্মদ শামীম।

সভায় উপস্থিত ছিলেন রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাজির আলম, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম, সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা ও রামগড় ১নং ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. রেহান উদ্দিন, অগ্রণী ব্যাংক রামগড় শাখার ব্যবস্থাপক মিঠুন ভৌমিক, রামগড় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসেনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শামীম বলেন, অভিবাসী বাংলাদেশিরা তাদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। তিনি আরও বলেন, বিদেশে যেতে ইচ্ছুকদের অবশ্যই দক্ষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা উচিত। দক্ষতা অর্জন করে বিদেশে গেলে ব্যক্তি ও দেশের উভয়েরই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক সম্পদ না থাকায় কর্মদক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে মানবসম্পদ রপ্তানিই দেশের উন্নয়নের অন্যতম প্রধান উপায়।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস প্রতি বছর ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রে পালিত হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

×